বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১

সহিংসতায় ৩২ শিশুর মৃতু্য

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে
  ০৪ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
সহিংসতায় ৩২ শিশুর মৃতু্য

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতায় অন্তত ৩২ শিশুর মৃতু্য হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। শিশুদের মৃতু্যতে উদ্বেগ জানিয়ে ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক সঞ্জয় উইজেসেকেরা বলেছেন, সব সময় শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে হবে। এটা সবার দায়িত্ব। শুক্রবার ইউনিসেফের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছেন সঞ্জয় উইজেসেকেরা। তিনি বলেন, জুলাই মাসে বিক্ষোভের সময় অন্তত ৩২ শিশু নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে ইউনিসেফ। এ ছাড়া অনেক শিশু আহত হয়েছে এবং অনেককে আটক করা হয়েছে। শিশুদের এই মৃতু্য ভয়ানক ক্ষতি। সব ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানায় ইউনিসেফ। বিবৃতিতে ইউনিসেফের এই কর্মকর্তা জানান, এক সপ্তাহ বাংলাদেশে কাটানোর পর সবেমাত্র দেশটি থেকে গিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতা ও চলমান অস্থিরতার যে প্রভাব শিশুদের ওপর পড়ছে, তা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। সঞ্জয় উইজেসেকেরা বলেন, 'আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, বাংলাদেশের স্বাক্ষর করা জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ এবং আটক করা হলে শিশুদের ওপর যে প্রভাব পড়ে, তা নিয়ে গবেষণার ভিত্তিতে ইউনিসেফ শিশুদের যে কোনো ধরনের আটক বন্ধের আহ্বান জানায়। এর অর্থ হলো কোনো স্থানে শিশুদের উপস্থিতি বা তাদের পূর্বের ইতিহাস, ধর্ম এবং তাদের পরিবারের কর্মকান্ড বা মতাদর্শের জন্য শিশুদের গ্রেপ্তার বা আটক করা যাবে না।'

সহিংসতার প্রভাব থেকে শিশুদের বের করে আনা এবং তাদের নিরাপদে রাখতে স্কুলগুলো খুলে দেওয়া, পড়াশোনা পুনরায় চালু এবং বন্ধুবান্ধব ও শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের আবার মিলিত হওয়ার সুযোগ তৈরি করা সবচেয়ে ভালো উপায়গুলোর অন্যতম বলে উলেস্নখ করেন উইজেসেকেরা।

বলার অপেক্ষা রাখে না, শিশুরা নিরাপত্তাহীন থাকবে, সহিংসতায় তাদের প্রাণ চলে যাবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। রাষ্ট্র সমাজে শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এমনিতেই ঠুনকো কারণে শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। আপনজনের হাতেও শিশুর জীবন চলে যাচ্ছে। কেবল তাই নয়, আমাদের কোমলমতি শিশুরা অবলীলায় নির্যাতন ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। এর মধ্যে যদি সহিংসতায় শিশুর প্রাণ চলে যায়, এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। অথচ শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমাজ তথা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কারণ আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কান্ডারি। শিশুর সুস্থ বিকাশ কীভাবে হবে, কীভাবে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে- এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের নতুনভাবে ভাবা উচিত। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাষায় বলতে হয়, এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক'রে যাব আমি/ নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।/ অবশেষে সব কাজ সেরে/ আমার দেহের রক্তে নতুন শিশুকে/ করে যাব আশীর্বাদ/ তারপর হব ইতিহাস।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে