বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১
পাঠক মত

জনসমাগমে ধূমপান বন্ধ হবে কবে

  ০১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
জনসমাগমে ধূমপান বন্ধ হবে কবে

যে সমস্যা সমাজে বসবাসকারী মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাঁধা সৃষ্টি করে ও সমাজে ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে, সেগুলোই সামাজিক সমস্যা। বর্তমানে জনসমাগমে ধূমপানও সামাজিক সমস্যা হিসেবে বিবেচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কেননা, স্ট্রোক, হৃদরোগ, ফুসফুসে ক্যানসার, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধিসহ নানা রোগে শুধু ধূমপায়ী ব্যক্তিই যে আক্রান্ত হচ্ছেন, এমন নয়; তাদের কারণে তার আশপাশের মানুষও এমন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাদের ধূমপানের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে কেউ মুক্ত নয়। ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে সবাই কমবেশি অবগত। এরপরও অনেকেই ধূমপান ত্যাগ করেন না। ইচ্ছামত যে কোনো স্থানে ধূমপান করেন। বাদ যায় না জনাকীর্ণ রাস্তাগুলো। ঢাকার জনবহুল রাস্তা ও ফুটপাতে চলার সময়ও অনেকে ধূমপান করেন। পরোক্ষভাবে অন্যকে ধূমপানে বাধ্য করেন। সিগারেটের ধোঁয়ার কারণে অধূমপায়ীরা অস্বস্তিবোধ করেন। শ্বাসকষ্টসহ নানা সমস্যায় ভোগেন। অনেক সময় ধূমপায়ী ব্যক্তির সিগারেটের আগুনের আঁচ পথিকের গায়ে গেলে যায়। পরবর্তী পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে, কষ্ট হলেও অনেকে তাদের কিছু বলার সাহস পান না। আর যারা কিছু বলেন, তাদের ধূমপায়ীরা আরও ১০ কথা শুনিয়ে দেন। এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে এক পথচারী বলেন, 'সিগারেটের ধোঁয়া আমার মতো অনেকেই সহ্য করতে পারে না। বমিবমি ভাব আসে। কিন্তু রাস্তায় চলতে ফিরতে প্রতিনিয়তই আমাদের এটা সহ্য করতে হয়।' রাস্তাঘাটে চলাচলের সময় আমরা সবাই পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হই। আর পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি ধূমপানের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। পরোক্ষ ধূমপান যে কত ক্ষতিকর তা বিভিন্ন পত্রিকার স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিবেদন পড়লে কিছুটা অনুধাবন করা যায়। 'পরোক্ষ ধূমপানের ফলে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বাড়ে, রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাড়ে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা। ফলে একজন সুস্থ মানুষের স্ট্রোক এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। আর যারা আগ থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত, পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হলে তাদের ঝুঁকি আরও বাড়ে। পরোক্ষ ধূমপানে কেবল ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। তা নয়; বরং সিগারেটের ধোঁয়ার নানা রাসায়নিক উপাদানের প্রভাবে অন্যান্য ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ে। ধূমপান না করেও সাধারণ মানুষ কত বড় ঝুঁকির মধ্যে থাকে! মনে করেন, আপনার পরিবারের কেউ ধূমপান করে না। আপনার সন্তানকে নিয়ে পার্কে বসে আছেন। আপনার পাশে বসা আরেক একজন ধূমপান করছেন। তার সিগারেটের ধোঁয়া শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে আপনাদের দেহে প্রবেশ করছে। নিয়মিত এমনটা ঘটলে, ধূমপান না করেও আপনি ও আপনার সন্তান তার সিগারেটের ধোঁয়ার কারণে ফুসফুসে ক্যানসার, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি, হৃদরোগসহ নানা রোগের ঝুঁকির মধ্যে থাকবেন। বললে অনু্যক্তি হবে না যে, এমন দৃশ্য ঢাকার পার্ক, রাস্তা ও অলিগলিতে প্রতিনিয়ত দৃশ্যমান। সেদিন বাসে উঠার সময় হেল্পারের সঙ্গে জনৈক ব্যক্তির তুমুল ঝগড়া হয়। হেল্পারের জ্বলন্ত সিগারেট তার জামায় লেগে গিয়ে সামান্য পুড়ে যায় ও কালো দাগ হয়ে যায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক চলে অনেকক্ষণ। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে। বর্তমানে সবার মনে একটাই প্রশ্ন, জনসমাগমে ধূমপান কবে বন্ধ হবে? পরিশেষে বলা যায়, ধূমপানের বিষয়ে আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। ধূমপান ছাড়া যদি থাকতে না -ই পারি, তাহলে আমাদের নির্জন স্থানে ধূমপান করা উচিত। জনাকীর্ণ রাস্তা-ঘাটে ধূমপান করে অন্যকে কষ্ট দেওয়া ঠিক নয়। এ ছাড়া আমরা তো অন্য কাউকে পরোক্ষভাবে ধূমপানে বাধ্য করতে পারি না। তাই আসুন, সচেতন হই। জনসমাগমে ধূমপান থেকে বিরত থাকি।

মো. রুহুল আমিন খান

প্রাক্তন শিক্ষার্থী

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষকদের চিহ্নিত করতে হবে

দেশে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে অপরাধপ্রবণতা। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, হত্যা ইত্যাদি যেন নিত্যদিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে রূপ নিয়েছে। ভয়াবহ ব্যাপার হলো দেশের অসংখ্য কিশোর-তরুণ তাদের সোনালি ভবিষ্যৎ জলাঞ্জলি দিয়ে জড়িয়ে পড়ছে অপরাধ জগতে। অপরাধের এই ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকলে দেশে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব হয়ে পড়বে। বাংলাদেশের অধিক জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরের যেই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অচিরেই ভেঙে পড়বে। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন কিশোর-তরুণদের অপরাধ জগৎ থেকে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হলে অদূর ভবিষ্যতে তীব্র মেধা সংকটে পড়বে দেশ। কিশোরদের বিপথে পরিচালনার পেছনে রয়েছে উচ্চমহলের কালো হাত। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় কিশোররা তৈরি করছে কিশোরগ্যাং নামক দুষ্কৃতকারী সংগঠন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তারা বিভক্ত হয়ে যার যার অবস্থান থেকে বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রম সংগঠিত করছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে কিশোর গ্যাং একটি আতঙ্কে রূপ নিয়েছে। তাদের কর্মকান্ডে কেউ প্রতিবাদ করলে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকিসহ নানা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ভয়ভীতি দেখায়। বিভিন্ন নেতা, এই ভাই সেই ভাইয়ের দাপট দেখিয়ে বুক চেতিয়ে এলাকায় ঘুড়ে বেড়ায় তারা। এছাড়া ইভটিজিং, মাদক সরবরাহ, মাদক গ্রহণের মতো ভয়াবহ কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত তারা। দেশের আনাচে-কানাচে অসংখ্য অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে কিশোরগ্যাং। তাই অনতিবিলম্বে তাদের পৃষ্ঠপোষকদের চিহ্নিত করে দৃষ্টাদন্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক। মুসড়ে দেওয়া হোক সামাজিক মূল্যবোধ ধ্বংসকারী এই অমানুষদের কালো হাত।

সাব্বির আহমেদ

কুমিলস্না

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে