বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সর্বপ্রথম ১৯৭২ সালে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়। সে সময় মেধা তালিকা ২০ শতাংশ বরাদ্দ রেখে, ৪০ শতাংশ জেলাভিত্তিক, ৩০ শতাংশ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য এবং ১০ শতাংশ যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে বেশ কয়েকবার এই কোটা ব্যবস্থাটি পরিবর্তন করা হয়। প্রথম আলোতে প্রকাশিত তথ্যমতে, নিবন্ধিত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দুই-আড়াই লাখ, অর্থাৎ এক হাজার মানুষের মাঝে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১.২ জন বা ১.৫ জন- যা সমগ্র জনসংখ্যার ০.১২/০.১৫ শতাংশ। ০.১২ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার জন্য কোটার পরিমাণ ৩০ শতাংশ- যা হাজারে রূপান্তর করলে দেখা যায়, এক হাজার জনতার মাঝে ১ থেকে ১.৫ জন মুক্তিযোদ্ধার জন্য কোটার পরিমাণ ৩০০। বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশের বেশি কোটা ছিল- যার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, জেলাভিত্তিক কোটা ১০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ এবং ১ শতাংশ প্রতিবন্ধীদের জন্য। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ১৯ (১), ২৯ (১) ও ২৯ (২) অনুচ্ছেদসমূহে চাকরির ক্ষেত্রে সব নাগরিকের সমান সুযোগের কথা বলা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন চলমান অবস্থাতে ২০১৮ সালের ফেব্রম্নয়ারিতে কোটা পদ্ধতি চালু রাখার পক্ষে 'মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড' নামে একটি সংগঠন মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। বাংলাদেশ সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীও সে সময় কোটা সংস্কারের বিপক্ষে বক্তব্য রাখেন। এপ্রিলে কোটা সংস্কারের আন্দোলন শুরু হওয়ার পর ৯ এপ্রিল বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মিছিল করে এবং বিভিন্ন সময় আন্দোলকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের এসব হামলার প্রতিবাদে ছাত্রলীগের তিন নেতা পদত্যাগ করেন। বরেণ্য শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ২০১৯ সালের এক সমাবর্তন ভাষণে চাকরির অবাধ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কোটা বহালের দাবির পক্ষের আন্দোলনকারীদের আন্দোলনকে মৃদু ভর্ৎসনা করে বলেন, তিনি তাদের আন্দোলনে অবাক। ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলন ও অবস্থান কর্মসূচির কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের দাবি মেনে নিয়ে ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে তিনি সব কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। যদিও তখন পর্যন্ত এসংক্রান্ত কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। ১২ এপ্রিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্তৃক লালন শাহ হলের ২২ শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। তবে তারা পুনরায় আবার হলে ফিরে আসার সুযোগ পায়।
আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভা ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই সরকার জানায়, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে (৯ম থেকে ১৩তম) নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমানে কোনো কোটা বহাল নেই, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে (১৪তম থেকে ২০তম পর্যন্ত) কোটা বহাল রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কোটার প্রার্থী না পাওয়া গেলে সাধারণ প্রার্থীর মেধা তালিকা থেকে তা পূরণ করতে হবে। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি কোটার বিষয়ে আগের জারি করা পরিপত্র স্পষ্ট করার পাশাপাশি মন্ত্রিসভার বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সরকারি চাকরিতে অষ্টম বা তার ওপরের পদেও সরাসরি নিয়োগে কোটা বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২৪ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ হাইকোর্ট বাতিলকৃত কোটা পুনরায় বহাল করে। যার ফলে, পুনরায় আন্দোলন ছড়িয়ে পরে। ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন হল থেকে শুরু করে শাহবাগ চত্বরে সমবেত হয়। ৪ জুলাই সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের সামনে জমায়েত হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন তারা। এর আগে থেকে সেখানে পুলিশ বাহিনীর সুসজ্জিত সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা সেখানে গেলে পুলিশ পিছু হটে যায়। পরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এ মোড়ে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা কোটা বিরোধী স্স্নোগান দিতে থাকে।
পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কর্মসংস্থানসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিতে সারা দুনিয়ায় কোটা সংরক্ষণ করা হয়। সমতার ভিত্তিতে কোনো দেশকে উন্নত করতে কোটা জরুরি। বাংলাদেশেও এই ব্যবস্থা থাকা স্বাভাবিক। তাহলে কোটা নিয়ে এত বিতর্ক কেন, কেন আন্দোলন? সংশ্লিষ্টদের মতে, কোটা নিয়ে বিতর্ক থাকার কোনো কারণ নেই। কিন্তু কোন ক্ষেত্রে কারা কতটুকু পিছিয়ে রয়েছে, কত শতাংশ কোটা রাখা প্রয়োজন, এই হিসাবে দেশে কখনোই কোটা চালু ছিল না। সে কারণেই সৃষ্টি হয় জটিলতা। ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটার প্রচলন ছিল। তবে ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে সরকার ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে। যথাযথ সংস্কার না হওয়াতেই যত বিপত্তি দেখা দেয়। সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগে দু'টি গ্রেডে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। রায়ের পরপরই তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে নেমেছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি নতুন নয়। স্বাধীনতার পর নির্বাহী আদেশে সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি চালু করা হয়। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত ২০ শতাংশ পদ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হতো। বাকি পদ কোটায় নিয়োগ হতো। ১৯৭৬ সালে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ ৪০ শতাংশে বাড়ানো হয়। পরে মেধায় নিয়োগের হার আরও কিছু বাড়ানো হয়।
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) আন্দোলনকারীরা ঢাকার শাহবাগ মোড় চার ঘণ্টার মতো অবরোধ করে রাখেন। একই দাবিতে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অবরোধ করেছেন। ওই বছর কোটা সংস্কার করে ১০ শতাংশ করার দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনে নেমেছিলেন। আন্দোলনের মুখে একপর্যায়ে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পুরো কোটা ব্যবস্থাই বাতিল করে। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিট করেন। ৫ জুন এই রিটের রায়ে পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে আবার আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন'-এর ব্যানারে ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে আরও রয়েছে পরবর্তী সময়ে সরকার কোটা ব্যবস্থা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রেখে কমিশন গঠন করে দ্রম্নত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া, সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ছিলেন সুষ্ঠু ও সুন্দর আন্দোলন পরিচালনার মূল নায়ক। তিনি যেখানে অনিয়ম দেখেছেন, নৈরাজ্য দেখেছেন এবং সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দেখেছেন সেখানেই সোচ্চার হয়েছেন এবং তা মোকাবিলা করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে অধ্যয়নকালীন অবিভক্ত ভারতের নেতা জওহরলাল নেহেরুর সামনে দাঁড়িয়ে ছাত্রাবাসের অব্যবস্থার কথা বলেছেন। দেশ বিভাগের আগে ও পরে স্বৈরাচারী সরকারের তোপের মুখে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন এবং সফলও হয়েছেন। সেই সূত্র ধরে যদি আমরা দেখি, তাহলে অবশ্যই বলতে হবে যে, ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত আমাদের ছাত্র আন্দোলনের অনেক গৌরবগাথা আছে। সেই গৌরবময় ইতিহাসের মাধ্যমে ছাত্রসমাজ জাতির মুখ উজ্জ্বল করেছে। যে ছাত্ররাজনীতি ছিল এককালের অনুকরণীয় আদর্শ তা আজ যেন ভূলুণ্ঠিত, অবদমিত পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। খেলার পুতুলের গুটির মতো করে তাদের ব্যবহার করতে চেষ্টা করছেন।
আজ বর্তমান ছাত্রসমাজের অনেকেই লেজুরবৃত্তির আবর্তে আবর্তিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের ধারা পর্যন্ত অর্জিত বাঙালি জাতীয়তাবোধের ধারাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। কিন্তু পর্যায়ক্রমিক সামরিক অভু্যত্থান, সেনাশাসন, স্বৈরশাসন ইত্যাদির কারণে ছাত্ররাজনীতি বা আন্দোলন যেন এক অবক্ষয়ী রূপ নিলে ছাত্রসমাজ তাদের অর্জিত সুনামকে জলাঞ্জলি দিয়ে স্বার্থান্বেষী বা সুবিধাভোগী রাজনীতির ধারার লেজুরবৃত্তির মাধ্যমে বিতর্কিত ও কালিমালিপ্ত করে তুলেছেন। বলতে হবে যে, টেন্ডারবাজি, অস্ত্রবাজি, চাঁদাবাজির মতো কলঙ্কের তিলক মাথায় নিয়ে এক কালো অধ্যায়ই রচিত হয়েছে। যার ফলশ্রম্নতিতে বিগত কয়েক দশক থেকে সংগঠিত ছাত্ররাজনীতি বলতে যা বুঝায় তার কিছুই অবশিষ্ট নেই। তার জ্বলন্ত প্রমাণ হচ্ছে ছাত্রসমাজ আর নির্বাচন করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কোনো সংগঠিত ও সুসংহত ছাত্র সংসদ উপহার দিতে পারছে না এবং সে পরিবেশ তৈরি করতেও সক্ষম হচ্ছে না। পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিয়ে ছাত্রসমাজকে এক ও অভিন্ন ছাতার নিচে আনতে ব্যর্থ হচ্ছে। উলেস্নখ্য যে, এই আন্দোলনের মাঝপথে এ দেশেরই কুচক্রিমহল ছাত্রদের এ আন্দোলনকে ইসু্য করে দেশে নৈরাজ্য, খুনাখুনি সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। মরিয়া হয়ে উঠছে দেশকে অচল করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে। সমাজ ও রাষ্ট্রকে ভালো-মন্দ দু'টি ভাগে বিভক্ত করে দেওয়ার এ যেন এক কুৎসিত ষড়যন্ত্র।
কোটা সংস্কার নিছক কোনো সাধারণ আন্দোলন নয়। এর ব্যাপ্তি ও ব্যাপকতা অনেক গভীরে। এই আন্দোলনকে দেশ জাগরণ ও পরিবর্তনের এক সংস্কার আন্দোলন হিসেবেও গণ্য করা যায়। এ আন্দোলনের তাৎপর্যকে বিবেচনায় রেখে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কোটা সংস্কার ২০২৪ জাতির ইতিহাসে এক মাইলস্টোন। এ সংস্কারে আগামী দিনে আমাদের বোধের এবং বিবেকের সংস্কার আসবে এবং সমাজ সচেতনতা আসবে। আমাদের অধঃপতিত মূল্যবোধকে বিনির্মাণ করতে হবে। হিংসা ও প্রতিহিংসার পরিবর্তে ন্যায়বোধ, ন্যায়পরায়ণতা, মহানুভবতা ও মানবিকতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে জাতিকে নৈতিক ও মূল্যবোধের শিক্ষায় উজ্জীবিত হতে হবে- দেশের জনগণ এ প্রত্যাশাই করছে। ছাত্রদের যৌক্তিক দাবি বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী মেনে নিয়ে তার যথারীতি প্রজ্ঞাপনও জারি করেছেন। তাই আমাদের উচিত, কোনো উস্কানি দাতা, মদতদাতার ছোবলে পড়ে কোমলমতি ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যেন না যায়। স্ব স্ব অবস্থান থেকে সততা, নিষ্ঠা, ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে সবকিছুকে ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করে অগ্রসর হতে হবে।
ছাত্রছাত্রীদের ফিরে যেতে হবে তাদের শ্রেণিকক্ষে। মন দিতে হবে পড়াশোনায়। কেননা, আজকের ছাত্রসমাজ যদি সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হতে পারে, তাহলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণ হবেই বা কী করে? আগামীতে দেশের নেতৃত্বে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। তাই এই আন্দোলন থেকে আমাদের যেন বোধোদয় ঘটে। শপথ নিতে হবে সঠিক নেতৃত্বের। শৃঙ্খলা ও সচেতনার মাধ্যমে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে আমাদের মনোযোগী হতে হবে।
ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ : সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি, কলামিস্ট ও গবেষক