বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১

চালের দাম বৃদ্ধি

বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন
  ২৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
চালের দাম বৃদ্ধি

সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে আবার বেড়েছে চালের দাম। চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশের বাজারে এক দফা বেড়েছিল চালের দাম। দুই সপ্তাহ না পেরোতেই আবার দাম বাড়ল প্রধান খাদ্যপণ্যটির। এ দফায় পাইকারি পর্যায়ে বস্তাপ্রতি দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। অথচ বাজারে ধান-চালের কোনো ঘাটতি নেই, তবু চালের দাম বাড়ছে শুধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে। চাল ব্যবসায়ীরা এবার দাম বৃদ্ধির জন্য কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার পরবর্তী সহিংসতাকে দায় দিচ্ছেন। তাদের ভাষ্য, আন্দোলন-সহিংসতার কারণে এক সপ্তাহ মিলগুলোতে ঠিকমতো চাল উৎপাদন করা যায়নি এবং সারাদেশে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে চালের সরবরাহ ঠিক রাখা যায়নি। এতে বাজারে চালের কিছুটা সংকট দেখা দেওয়ায় দাম বেড়েছে। তবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্দোলন-সহিংসতার কারণে চালের উৎপাদন ও সরবরাহে কিছুটা হয়তো বিঘ্ন ঘটেছে তবে এ কারণে বস্তাপ্রতি একবারে ২০০ টাকা করে দাম বাড়ার কথা নয়।

সরকারি তথ্যমতে এ বছর বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বোরোর মৌসুম এখনো চলছে, এ মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে। দেশে এখন পর্যাপ্ত ধান-চালও রয়েছে। তাহলে আন্দোলনের দোহাই দিয়ে এভাবে একবারে কেজিতে ৪-৫ টাকা দাম বাড়ল কেন? হঠাৎ চালের দাম এত বৃদ্ধি পেয়েছে মূলত ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে। আসলে আমাদের দেশের খাদ্যপণ্যের ব্যবসায়ীরা সুযোগসন্ধানী। দাম বাড়ানোর জন্য তারা শুধু অজুহাত খোঁজেন। যে কোনো অজুহাতে তারা পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দেন। বাজারে যদি সঠিক মনিটরিং ব্যবস্থা থাকত, অসাধু ব্যবসায়ীদের যদি শাস্তি আওতায় আনা হতো তাহলে এভাবে দাম বাড়ত না চালের।

খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি দেশি বাসমতি ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে- যা এক মাস আগেও ছিল ৮৫ থেকে ৮৬ টাকা। মাঝারি মানের মিনিকেট চালের কেজি এখন ৬৮ থেকে ৭২, দুই সপ্তাহ আগেও দাম ছিল ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা। আর ভালো মানের মিনিকেট চালের কেজি এখন ৭৫ থেকে ৭৬, আগে ছিল ৭০ থেকে ৭২ টাকা। খুচরা বাজারে নাজিরশাইল চালের কেজি এখন ৭৬ থেকে ৮০ টাকা। আগে ছিল ৭২ থেকে ৭৫ টাকা। মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো যে চাল কেনেন বাজারে এখন সেই চালেরই দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। যেমন বিআর-২৮ ও ২৯ চাল এক মাস আগেও ছিল ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা, এখন দাম বেড়ে হয়েছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। এছাড়া মোটা স্বর্ণা ৫৪ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৬-৫৮ টাকা এবং মোটা হাইব্রিড চালের কেজি ৩ থেকে ৪ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫০-৫২ টাকা।

আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, ভাত-প্রধান বাঙালি যদি তাদের চাহিদামতো চাল কিনতে না পারে তবে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। বিশেষ করে মোটা চালের দাম বৃদ্ধি কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ দেশের স্বল্প আয়ের মানুষ মোটা চালনির্ভর। মনে রাখতে হবে, চালের দাম বেড়ে গেলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। সুতরাং, যে করেই হোক, চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে