বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১

নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা যথাযথ বাস্তবায়ন হোক

  ২০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
আপডেট  : ২৫ জুলাই ২০২৪, ১৮:১৮
নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা যথাযথ বাস্তবায়ন হোক

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের তথ্যমতে, আগামী ছয় মাসের জন্য নীতি সুদহার সাড়ে ৮ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকবে। যদিও টাকার প্রবাহ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের উন্নয়ন ব্যয়ের জন্য নতুন অর্থ ছাপানো থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত বলা দরকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে- উচ্চ মূল্যস্ফীতি অব্যাহত থাকলেও বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। আর এটাও জানা যাচ্ছে, বিভিন্ন পর্যালোচনার পর মুদ্রানীতি কমিটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে না পৌঁছানো পর্যন্ত বর্তমান কঠোর মুদ্রানীতি অব্যাহত রাখতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এমনটিও জানা যাচ্ছে।

আমরা বলতে চাই, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণহীন হলে তার প্রভাব জনজীবনে কতটা পড়ে সেটি এড়ানোর সুযোগ নেই। সঙ্গত কারণেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের সামগ্রিক উদ্যোগ অব্যাহত রাখা জরুরি। ফলে মুদ্রানীতির ঘোষণা আর একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অগ্রাধিকারের যে বিষয়টি জানা যাচ্ছে, তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। অন্যদিকে এ বিষয়টিও আমলে নেওয়া সমীচীন, অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নীতি সুদহার না বাড়ানোর ফলে বাজারে টাকার প্রবাহ বাড়বে, এতে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তাদের মত হলো, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার আরও কিছুটা বাড়ানো দরকার ছিল। সেই সঙ্গে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের যে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সেটা আরও কমানোর পক্ষে মত দিয়েছেন তারা। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনি অর্থনীতিবিদদের মত বিবেচনায় রেখে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।

উলেস্নখ্য, জুলাই-ডিসেম্বর ঘোষিত মুদ্রনীতিতে নীতি সুদহার ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ, এসডিএফের হার ৭ শতাংশ ও এসএলএফের হার ১০ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। অন্যদিকে সরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়িয়ে ১৪ দশমিক ২ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ এতে দেখা যাচ্ছে ব্যাংক খাত থেকে সরকারকে আরও বেশি ঋণ গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আর এ প্রসঙ্গে যখন অর্থনীতিবিদরা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা আরও কমানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। তখন সার্বিক বিষয় বিবেচনায় রাখা আবশ্যক। আমরা বলতে চাই, সামগ্রিকভাবে মুদ্রানীতি ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে যে বিষয়গুলো সামনে আসছে, তা আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতি অগ্রাধিকার দিয়ে মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে, এর যথার্থ বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে সংকট বা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে তা মোকাবিলায় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।

প্রসঙ্গত, সংশ্লিষ্টদের এটাও আমলে নেওয়া দরকার, খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, গত কয়েকবারের মতো এবারও মূল চ্যালেঞ্জ পরপর দুই অর্থবছর ধরে ৯ শতাংশের ওপর থাকা মূল্যস্ফীতিকে বশে আনা। স্মর্তব্য, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব শেষ দুই অর্থবছরে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির অংশ হিসেবে সুদহার বাড়াতে একের পর এক রেপো বাড়ালেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এমনকি পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সীমিত আয়ের মানুষের জীবনযাত্রা হিমশিম খাচ্ছে। সরকারের নানা উদ্যোগ মূল্যস্ফীতি পারদকে দমাতে পারেনি বলে আলোচনায় উঠে এসেছে। সঙ্গত কারণেই সর্বাত্মক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখা জরুরি।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। মূল্যস্ফীতিকে কেন্দ্র করে জীবনযাত্রার ব্যয় সংক্রান্ত নানা ধরনের আলোচনা উঠে আসছে। আর উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য অসহনীয় হয়ে উঠেছে জীবনযাপন এমনটিও খবরে এসেছে। ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিয়ে যে মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। একই সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে