রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও আমরা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই উন্নয়ন কোনো দৈত্যকে ডেকে আনার মতো। এই ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনা করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহারগুলো সম্পর্কে আমাদের এখনই ভাবতে হবে এবং তার অপব্যবহার রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মো. জাহিদুল ইসলাম
  ২৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও আমরা

মানুষ প্রতিনিয়ত যেসব কাজ করে থাকে তার অধিকাংশই ধীরে ধীরে আয়ত্ত করে নিচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)। এআই বা 'কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা' হলো কম্পিউটার সিস্টেমের একটি আপগ্রেডেট সংস্করণ। এটি সাধারণত মানুষের বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন হয় এমন কাজগুলো সম্পাদন করতে পারে। এসব কাজের মধ্যে যেমন রয়েছে ইনপুট করা তথ্য উপলব্ধি বা বিশ্লেষণ, ঠিক তেমনি রয়েছে এসব বিশ্লেষণ থেকে দ্রম্নত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা। এআই হলো এক ধরনের সফটওয়্যার টেকনোলজি- যা রোবট বা কম্পিউটারকে মানুষের মতো কাজ করায় এবং ভাবায়। উদাহরণস্বরূপ কারও কথা বুঝতে পারা, সিদ্ধান্ত নেওয়া, দেখে চিনতে পারা ইত্যাদি এআই কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত। এআই হলো মেশিন লার্নিং। ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি তিন ভাগে বিভক্ত। প্রথমটি হলো এএনআই বা কৃত্রিম সংকীর্ণ বুদ্ধিমত্তা। বুদ্ধিমত্তার জগতে সবচেয়ে সাধারণ হলো এই ন্যারো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি (এআই)। এটি শুধু একটি নির্দিষ্ট কাজের জন্যই ব্যবহার হয়। অনলাইনে খেলা, ই-কমার্স সাইট থেকে কেনাকাটা, সেলফ-ড্রাইভিং, স্পিচ রিকগনিশন এবং ইমেজ রিকগনিশন ইত্যাদি এই প্রযুক্তির অন্তর্গত। দ্বিতীয়টি হলো এজিআই বা কৃত্রিম সাধারণ বুদ্ধিমত্তা। মানুষের মতো দক্ষতার সঙ্গে যে কোনো বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ সম্পাদন করতে পারে এই কৃত্রিম সাধারণ বুদ্ধিমত্তা। বিশ্বব্যাপী গবেষকরা এখন কৃত্রিম সাধারণ বুদ্ধিমত্তা দিয়ে মেশিন তৈরির দিকে বেশি মনোনিবেশ করছেন। তৃতীয়টি এবং সর্বশেষ হলো এএসআই বা কৃত্রিম সুপার ইন্টেলিজেন্ট। এই সুপার ইন্টেলিজেন্ট মেশিনগুলো মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে ছাড়িয়ে জ্ঞানীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর সঙ্গে মানুষের চেয়েও যে কোনো কাজ নিখুঁতভাবে সম্পাদন করতে পারে। এ সিস্টেমগুলো অধিক জটিল সিস্টেম। সিস্টেমগুলো এমনভাবে প্রোগ্রাম করা হয় যাতে কোনো ব্যক্তির হস্তক্ষেপ ছাড়া যে কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারে। বিশ্বের যত সৃষ্টি আছে তার মধ্যে মানুষকে আলাদা করা যায় যে বৈশিষ্ট্যটির মাধ্যমে তা হলো তার বুদ্ধিমত্তা। আর এই বুদ্ধিমত্তা হলো কোনো নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ধারণা করতে পারা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারা, পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারা এবং তা কাজে লাগিয়ে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা ইত্যাদি গুণের সামগ্রিক রূপ। যার মধ্যেই উপরোক্ত এই বৈশিষ্ট্যগুলো দৃশ্যমান সেই বুদ্ধিমান হিসেবে পরিচিত। মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাশক্তিকে কৃত্রিম উপায়ে কম্পিউটার বা কম্পিউটার প্রযুক্তিনির্ভর কোনো যন্ত্রের মাধ্যমে বাস্তব রূপ দেওয়ার ব্যবস্থাই হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কৃত্রিম উপায়ে যন্ত্রকে বুদ্ধিমান বানানোর এই প্রযুক্তিই হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। এটি কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি অনন্য শাখা যেখানে মানুষের চিন্তাভাবনা ও বুদ্ধিমত্তাকে কম্পিউটার প্রোগ্রামের মাধ্যমে অনুকরণ এবং নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার হচ্ছে। এই ব্যবহার আমাদের পুরো বিশ্বকে করে তুলেছে আরও অত্যাধুনিক। এটি আমাদের জীবনকে করে তুলছে সহজ থেকে সহজতর। কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং তথ্যবিদ্যায় সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্রম্নত আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠছে। এআই অ্যালগরিদম এবং এআই দ্বারা চালিত অন্যান্য অ্যাপিস্নকেশন চিকিৎসা পেশাদারের ক্লিনিক্যাল সেটিংস এবং চলমান গবেষণায় সহায়তা করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। মূলত রোগীর মেডিকেল ডাটা এবং মেডিসিন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া ফলাফলগুলোকে বিশ্লেষণ করে আরও নির্ভুলভাবে তথ্য উপস্থাপনের জন্য এআই মাধ্যমে মেশিন লার্নিং মডেল তৈরিতে কাজ করা হচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সবচেয়ে বড় যোগ্যতা হচ্ছে তাকে কখনই বিশ্রামের দরকার হয় না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্বাস্থ্যসেবায় বিভিন্নভাবে সহযোগিতার করে আসছে। মেশিন লার্নিং মডেলগুলো ব্যবহার করে রোগীদের শারীরিক বিভিন্ন লক্ষণ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা তৈরি হলে দ্রম্নত চিকিৎসকদের অবগত করতে ব্যবহার করা যেতে পারে এই অ্যাপিস্নকেশনের মাধ্যমে। রোগীর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক তথ্য বা গবেষণায় দ্রম্নত অ্যাক্সেস প্রদান করে চিকিৎসা, ওষুধ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং রোগীর অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। বর্তমানে যদি কারও কোনো রোগ হয় সেটা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স রয়েছে। কী ধরনের অসুখে কি ওষুধ লাগবে বা কীভাবে তার চিকিৎসা করা উচিত সেসব বিষয়ের পেছনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অনেক জটিল অপারেশনও এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে অতি সূক্ষ্ণভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে। তাই স্বাস্থ্যসেবার দিক দিয়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিশেষ ব্যবহার অতুলনীয়। এআই বর্তমানে অসাধারণ উন্নতি করছে। এই সিস্টেমটি বর্তমানে মানুষের ভাষা বুঝতে পারার পাশাপাশি ছবি চিনতে পারে এবং এমনকি গাড়ি চালানোর ক্ষমতা রাখে। এসব অভূতপূর্ণ ঘটনাগুলো বিজ্ঞানের আশ্চর্যপূর্ণ এক চমৎকার আবিষ্কার। বর্তমানে এসব অত্যাধুনিক আবিষ্কার আমাদের কাজকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ওয়েবসাইট দিয়ে আমরা বর্তমানে কনটেন্ট লেখা, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভয়েস তৈরি, ওয়েবসাইট তৈরি ইত্যাদি কার্যগুলো অতি সহজেই সম্পাদন করছি। উলিস্নখিত এসব কাজের জন্য বর্তমানে ঈযধঃএচঞ, গরফলড়ঁৎহবু, ১০বিন, গঁৎভ.অও ইত্যাদি এআই টুল বা ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই অব্যাহত উন্নয়ন এক সময় মানুষের সক্ষমতাকে অতিক্রম করে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে ধারণা করা হয়। এই জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ঈযধঃএচঞ-সহ এই ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। এছাড়াও অনেক দেশ নির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে এসব প্রযুক্তি পণ্যকে ব্যবহারের জন্য অনুমতি প্রদান করেছে। সাইবার হ্যাকিং এবং অপরাধ প্রতিরোধে বর্তমানে বিশেষভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি। এদিকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে নিরাপত্তা কাজের ক্ষেত্রে। এখন বিভিন্ন সামরিক বাহিনী বা যুদ্ধক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে- যার ফলে সৈন্যদের সশরীরে ময়দানে অবস্থান করতে হয় না। গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে রাডার স্থাপন করা হয়- যা শত্রম্নর অবস্থান সম্পর্কে পূর্ব থেকে সচেতন করে দিতে পারে। নিরাপত্তার স্বার্থে ও অপরাধীকে শনাক্ত করতে এআই সিসি ক্যামেরা এখন একটি বহুল ব্যবহৃত ডিভাইস। ব্যাংকিং সেক্টরেও এআইয়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গ্রাহক এখন খুব সহজেই শুধু এসএমএসের মাধ্যমে সব টাকা-পয়সা লেনদেন করতে পারে। কাগজের টাকার ব্যবহার দিন দিন কমে আসছে। ই-মেইলের মাধ্যমে গ্রাহকরা তাদের তথ্য আপডেট করে নিতে পারে খুব সহজেই। এছাড়াও ভাষা অনুবাদে শিক্ষা ক্ষেত্রে, পরিবহণের ক্ষেত্রে, অনলাইন শপিংয়ের ক্ষেত্রে এআই ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। মানুষ কোনো না কোনো সময় ভুল করতে পারে কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কখনো ভুল করে না যদি এর প্রোগ্রাম সঠিকভাবে করা হয়। যেহেতু এআইয়ের সিদ্ধান্তগুলো ডিজাইন করা এলোগরেদমের মাধ্যমে তাই তার কাজে কখনোই ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। সব সময় সঠিক তথ্য এবং সঠিক পারফরম্যান্সের কারণে সময় এবং অর্থ সেভ হয়। এই সিস্টেম বিভিন্ন মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে মানুষের চাইতে অনেক দ্রম্নত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। ফলে, কাজ অনেক দ্রম্নত সম্পাদন হয়। এছাড়াও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিশাল একটি সুবিধা হচ্ছে- এটি এমন কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে পারে- যা মানুষের পক্ষে করা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এআই সিস্টেম অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেমের সব সময় লেটেস্ট হার্ডওয়ার এবং সফটওয়্যারসহ নিয়মিত আপডেট রাখাতে হয়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সিস্টেম কর্মসংস্থানকে প্রভাবিত করে কর্মসংস্থান কমিয়ে দেয়। ফলশ্রম্নতিতে অনেক কর্মজীবীরা বেকারত্বের দিকে ধাবিত হয়। তবে এদিকে ধীরে ধীরে কায়িক শ্রমের বাজারটি ক্রমাগতভাবে সংকুচিত হলেও প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন, সৃজনশীল ও সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা সম্পন্ন মানুষের জন্য নতুন নতুন চাকরির দ্বার উন্মোচিত হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কখনোই নিজ থেকে কোনো সৃজনশীল চিন্তাভাবনা করতে পারে না। এর মধ্যে আবেগ অনুভূতি অনুপস্থিত। কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আবেগকে কাজে লাগানোর কাজটি করতে পারে না। মানুষের সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন যন্ত্রের সবচেয়ে বড় পার্থক্য হচ্ছে কাজ করার ক্ষমতার মধ্যে। মানুষ যেখানে ক্লান্ত হয়ে যায় সেই জায়গায় একটি যন্ত্রের কোনো বিরতির প্রয়োজন হয় না। এআই ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই কাজ নির্ভুলভাবে করে যেতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি মূলত তার কাছে সংরক্ষিত পূর্ববর্তী তথ্যকে বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন সেবা প্রদান করে থাকে। এই ক্ষেত্রে বিভিন্ন অ্যালগোরিদম ও যন্ত্র শিখন পদ্ধতির মাধ্যমে বিশাল তথ্য ভান্ডার বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন ফলাফল ও অনুমান জানিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে একটি উলেস্নখযোগ্য পদ্ধতি হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল নিউরাল নেটওয়ার্ক বা এএনএন। এটি মানুষের শরীরের নিউরনের কার্যপ্রণালি অনুকরণ করে বিদ্যমান ডাটাকে প্রসেস করে জ্ঞানভিত্তিক কম্পিউটেশন মডেল তৈরি করে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বিশ্বের সব দেশই স্বাস্থ্য খাতে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল। এই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে অনেক দেশই চিকিৎসা খাতে এআইয়ের ব্যবহার বাড়াতে নতুন নতুন গবেষণাসহ আরও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল। এমনকি করোনা পরীক্ষার জন্যও সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল। এছাড়াও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে মহামারি প্রাদুর্ভাবের পূর্বাভাস দেওয়া ও পরিচালনা করা সহজ হবে। কারণ এই প্রযুক্তি দ্বারা বড় সংখ্যক তথ্য পর্যালোচনা সম্ভব। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের জন্য ক্ষতিকারক না উপকারী তা হয়তো ভবিষ্যৎ ঠিক করে দেবে। প্রত্যেকটি ক্রিয়ারই একটি সমান বা বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। তদ্রূপ যে কোনো কাজেরই ভালো ও খারাপ দু'টি দিকই থাকে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ক্রমাগত উন্নতির ফলে বর্তমানে মানুষের মতো চিন্তাভাবনা সম্পন্ন, পরিবেশের ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম যন্ত্র কিন্তু বিভিন্ন আঙ্গিকে তৈরি করা হচ্ছে। বর্তমানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সবচেয়ে আলোচিত একটি বিষয় নিয়ে কাজ হচ্ছে তা হলো যন্ত্রকে মানুষের মতো আবেগ অনুভূতিপ্রবণ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হিসেবে তৈরি করা। আর এই বৈশিষ্ট্যগুলো অর্জিত হলে প্রকৃতপক্ষেই তারা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিতে সক্ষম হবে। ফলে মানুষের ওপর তাদের নির্ভরতাও শেষ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে এই ধরনের একটি যন্ত্র ভুল নির্দেশনা পেলে তা একজন আবেগ অনুভূতিহীন বুদ্ধিমান মানুষ যতটা ভয়ংকর হতে পারে তার চেয়েও বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। ফলশ্রম্নতিতে এদের ওপর মানুষের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই উন্নয়ন কোনো দৈত্যকে ডেকে আনার মতো। এই ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনা করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহারগুলো সম্পর্কে আমাদের এখনই ভাবতে হবে এবং তার অপব্যবহার রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

মো. জাহিদুল ইসলাম : কলাম লেখক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে