পাঠক মত
চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়ার চরতীর দুঃখ শঙ্খ নদীর ভাঙন
প্রকাশ | ২৪ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার ১নং চরতী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডস্থ উত্তর বামন ডেঙ্গা পশ্চিম পাড়াটি করালগ্রাসী শঙ্খ নদীর বাম তীরের বাঁকের সঙ্গে সংযুক্ত। বর্তমানে নদীভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ওই এলাকার জনসাধারণ ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জনসাধারণ খুবই আতঙ্কগ্রস্ত রয়েছে। ওই এলাকার প্রায় ৭-৮শ পরিবার এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার ৬-৭শ পরিবারের বসবাস। এ ছাড়া এখানে একটি সরকারি জুনিয়র হাইস্কুল, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিক, শতাধিক পাকাবাড়ি, অতিসম্প্রতি পুনর্নির্মিত দৃষ্টিনন্দন ৪ তলা ফাউন্ডেশন (প্রথম ও দ্বিতীয়তলা কাজ সম্পন্ন) উত্তর বামন ডেঙ্গাঁ আবদুল করিম জামে মসজিদ ও মসজিদের অন্য স্থাপনা, আরও দুটি জামে মসজিদ, তিনটি ফোরকানিয়া মাদ্রাসা, ২টি হেফজ খানা, ১টি নুরানি মাদ্রাসা, ১টি ইবতেদীয় মাদ্রাসা, ৫টি কবরস্থান, ১টি বড় ও ২টি ছোট মন্দির, একাধিক শ্মশান, এলাকার অনেক নিদর্শন ছাড়াও তালগাঁও উত্তর বামন ডেঙ্গা মাস্টারহাট পাকা সড়ক, উত্তর বামন ডেঙ্গা উত্তরপাড়া সড়ক (বর্তমানে ওই সড়কের ৫০ লাখ টাকা উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে), শাহ মৌলানা রফিক আহমদ পাকা সড়ক, উত্তর বামন ডেঙ্গা বোর্ডগাড় পাকা সড়ক, যোগেশ মহাজন (হিন্দু পাড়া) সড়ক, আনার বাপের বাড়ি সড়ক, ছৈয়দ আহমদ চৌধুরী জামে মসজিদ সংলগ্ন সড়কসহ আরও বিভিন্ন শাখা সড়ক, বিশেষ করে দক্ষিণ চট্টগ্রামে কৃষি ফসল উৎপাদনে প্রসিদ্ধ এলাকার কৃষিজমি এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা- তালগাঁও ও তুলাতলী এলাকার বতসবাড়িসহ অনেক স্থাপনা এবং কৃষিজমি ভাঙনকবলিত হয়ে চরতীর মানচিত্র থেকে মুছে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শঙ্খ নদীর বামতীরের বাঁকের প্রায় সন্নিকটে নাফিত খাল প্রবাহিত। কোন অবস্থায় নদীটি ভেঙে ওই নাফিত খালের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে যায় তাহলে নদীর অববাহিকা পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা বিরাজমান। যেমনি ইতোমধ্যে নদীর অববাহিকা পরিবর্তন হয়ে উত্তর বামন ডাঙ্গার পূর্বপাড়া, মধ্যম চরতী, হিন্দুপাড়া, মাস্টার বাজার এবং মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুলসহ অনেক স্থাপনা ও নিদর্শন ভাঙনকবলিত হয়ে চরতীর মানচিত্র হতে মুছে গেছে।
বিশেষভাবে উলেস্নখ্য, ওই ভাঙনকবলিত এলাকার নিচের অংশে ইতোমধ্যে ভাঙনরোধে বস্নক স্থাপন এবং ওপরের অংশে বিগত বর্ষা মৌসুমে জিওব্যাগ বসানো হয়েছে। বর্তমানে নিচের অংশে বস্নকের সঙ্গে সংযুক্ত বস্নকবিহীন নদীর পাড় ভাঙনকবলিত হচ্ছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে উভয় পাশের ওই সরকারি সম্পদ (বস্নক ও জিওব্যাগ) ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে নিচের অংশে বস্নক স্থাপনের সময় উত্তর বামন ডেঙ্গার ওপরের অংশ থেকে (বতর্মানে ভাঙনকবলিত) বস্নক স্থাপনের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। কিন্তু পরে উত্তর বামন ডেঙ্গার মধ্যখান থেকে বস্নকের কাজ করা হয়। যার গুরুত্ব অনুধাবন করে সাবেক সংসদ সদস্য উপ-মন্ত্রী, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় বরাবর ডিও লেটার দেন। উপমন্ত্রী ডিও লেটারে মহাপরিচালকের বরাবর ব্যবস্থা নিন মর্মে উলেস্নখপূর্বক প্রেরণ করেন।
চলতি বছর মৌসুমে ওই এলাকার জনসাধারণ এই ক্ষতির আতঙ্কে আতঙ্কগ্রস্ত রয়েছে। এমতাবস্থায় বস্নক স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং বস্নক স্থাপনে বিলম্ব হলে এই বর্ষার মৌসুমে শঙ্খনদীর ওই ভাঙনকবলিত অংশে জরুরি ভিত্তিতে জিওব্যাগ বসানোর জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রী ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং সংসদ সদস্য এমএ মোতালেব, সিআইপি, এমপি, চট্টগ্রাম-১৫, (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া), সচিব, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মহাপরিচালক, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ঢাকা, নির্বাহী প্রকৌশলী, চট্টগ্রাম পৌর বিভাগ-১, বাপাউবো, চট্টগ্রাম এবং সম্মানিত সংশ্লিষ্টদের আশু দৃষ্টি কামনা করছি। বিশেষ করে জনস্বার্থে, সরকারি-বেসরকারি সম্পদ ও জনসাধারণের বসতবাড়ি, কৃষিজমি এবং অন্যান্য সম্পদ রক্ষার্থে শঙ্খ নদীর বামতীরে অবস্থিত বাঁকে উত্তর বামন ডেঙ্গাঁ পশ্চিম পাড়ার অববাহিকায় নদীভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন প্রতিরোধে প্রায় ১ হাজার মিটার বস্নক স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং চলতি বছর মৌসুমে জরুরিভিত্তিতে জিও ব্যাগ বসানোর আবেদন জানাচ্ছি।
উজ্জ্বল দাশ
চট্টগ্রাম