সাড়ে ৭ কোটির বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে

প্রকাশ | ১৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশে তামাকের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৭ কোটি ৬২ লাখ মানুষ। এর মাঝে ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহার করে এবং ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হয়। সোমবার রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) আয়োজিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে করণীয় শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য দেওয়া হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুয়র (ডরপ) ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের আর্থিক ও স্বাস্থ্য ক্ষতি হয়ে থাকে। দেশের ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ বা প্রাপ্তবয়স্ক ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহার করে। পাবলিক পেস্নস ও পাবলিক পরিবহণে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ। তামাকের ব্যবহারে পঙ্গুত্ব বরণ করে ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ। বিশ্বজুড়ে প্রতিরোধযোগ্য মৃতু্যর প্রধান আটটি কারণের ৬টির সঙ্গেই তামাক জড়িত। বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী তামাক ব্যবহারকারীদের তামাকজনিত রোগ যেমন ফুসফুসে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি ৫৭ শতাংশের বেশি। এছাড়া তামাকজনিত অন্যান্য ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি ১০৯ শতাংশের বেশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। এ প্রত্যয় পূরণে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী। ধূমপান ও তামাক সেবনের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসারসহ নানা অসংক্রামক রোগ দেখা দেয়। সাম্প্রতিক সময়ে ই-সিগারেটের ব্যবহার বাড়ছে। যা আরও অধিক ক্ষতিকর। 'তামাক থেকে দূরে সরি, সুস্থ-সবল প্রজন্ম গড়ি' এমন কথা প্রায়ই উচ্চারিত হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তরুণ প্রজন্মকে ধূমপান ও তামাক থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। মূলত তরুণ এবং শিশুদের টার্গেট করে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস উৎপাদন ও বাজারজাত করছে তামাক কোম্পানিগুলো। যেখানে রয়েছে উদ্ভাবনী কৌশল, সুগন্ধি ব্যবহার ও আকর্ষণীয় ডিজাইন। এতে কিশোর এবং তরুণদের মধ্যে বিশেষত বিদ্যালয়গামী শিশুদের মধ্যে এসব তামাকপণ্যের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বাড়ছে- যা তরুণ প্রজন্মের জন্য উদ্বেকজনক। প্রকাশ্যে ধূমপান করলে ৩০০ টাকা জরিমানা। তা সত্ত্বেও মানুষ প্রকাশ্যে ধূমপান করছে। বাসের চালক হেলপারও প্রকাশ্যে ধূমপান করছে। যেন দেখার কেউ নেই। প্রতিবাদ করলেও কোনো ফল হয় না। হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন পাবলিক পেস্নস ও পাবলিক পরিবহণে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা (ডিএসএ) থাকলেও অধূমপায়ীদের পাশাপাশি সেবাকর্মীরাও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। মনে রাখতে হবে, তামাক সেবনের ক্ষেত্রে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বাংলাদেশে। এমন পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। আমরা মনে করি, আমাদের সামনে এটি একটি বড় মাইলস্টোন। এই লক্ষ্য অর্জন করতে গেলে ধাপে ধাপে আমাদের কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশকে অবশ্যই তামাকমুক্ত করতে হবে।