২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবাসী আয় বাড়াতে নানা উদ্যোগের ফলে কিছুটা ভালো খবর আসে। বছরজুড়ে প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক সাড়া ফেলে। কিন্তু নতুন বছরের শুরুতেই তার ছন্দপতন হয়। কমতে থাকে প্রবাসী আয়। চলতি মাসের ১৩ দিনে সে ধারার আরও স্পষ্ট হয়েছে। এ সময়ে দেশে এসেছে ৯৭ কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। যা পর পর আগের কয়েক মাসের প্রতিদিন আসা গড় প্রবাসী আয়ের চেয়ে কম। ১ থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত ১৩ দিনে আসা প্রবাসী আয় বাংলাদেশি মুদ্রায় দাঁড়ায় ১১ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা ধরে)। রোববার এ তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তথ্য বলছে, জুলাই মাসের ১৩ দিনের প্রতিদিন প্রবাসী আয় এসেছে ৭ কোটি ৫২ লাখ ৪০ হাজার ৭৬৯ মার্কিন ডলার। আগের মাস জুনে প্রতিদিন গড়ে প্রবাসী আয় আসে ৮ কোটি ৪৭ লাখ ২১ হাজার ৬৬৬ ডলার। আগের অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রতিদিন প্রবাসী আয় আসে ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৭১ হাজার ৬৬৬ ডলার। এ হিসাব বলছে জুলাই মাসে প্রবাসী আয় নিম্নমুখী।
প্রবাসী আয় বৃদ্ধিতে গত বছরজুড়ে বিভিন্ন রকমের জটিলতা দূর করে সহজ করা হয়। সর্বশেষ গত মে মাসে প্রবাসী আয়ের ডলার দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়। এরপরই প্রবাসী আয় আসার নতুন গতি তৈরি হয়। কিন্তু নতুন বছরে লাগে নতুন ধাক্কা। এর ফলে কমে প্রবাসী আয়।
বাংলাদেশ জনসংখ্যাবহুল দেশ। সঙ্গতকারণেই দেশের জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তর করা সার্বিক অগ্রগতির প্রশ্নেই জরুরি। দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি অর্জন এবং অগ্রগতিতে রেমিট্যান্স ভূমিকা রাখছে। এটা সত্য, নানা উদ্যোগের ফলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়ছে। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে এমন প্রত্যাশাও উঠে এসেছে। আমরা মনে করি, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণসাপেক্ষে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণসাপেক্ষে ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। এটাও বলা দরকার, নানা সময়ে রেমিট্যান্সে ধস নামা বিষয়টি সামনে এসেছে। ফলে প্রবাসী আয়ে ধস নামলে বিষয়টি যেমন এড়ানো যাবে না, তেমনি ইতিবাচক রেমিট্যান্সের অগ্রগতি ধরে রাখতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণও অপরিহার্য।
মনে রাখতে হবে, দেশের অগ্রগতিতে রেমিট্যান্সের উলেস্নখযোগ্য অবদান রয়েছে। এছাড়া রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে- যা ইতিবাচক। বিশেষ করে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক- এমন আলোচনা সামনে এসেছে। আমরা মনে করি, রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যই ইতিবাচক। ফলে প্রবাসী আয়ের বিষয়টিকে সামনে রেখে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করা এবং দক্ষ জনশক্তি নিশ্চিত করা জরুরি। আর সেই লক্ষ্যে বাড়াতে হবে প্রশিক্ষণের পরিধিও।