প্রশ্নপত্র ফাঁসে প্রতিরোধ প্রয়োজন
প্রকাশ | ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
সাকিবুল হাছান
বর্তমানে প্রশ্নপত্র ফাঁস একটি জাতীয় সমস্যা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অভিযোগ রয়েছে। স্কুল-কলেজ, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি এটাই প্রমাণ করে। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন থেকে শুরু করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে নেতৃত্ব ও সুষ্ঠু তত্ত্বাবধায়নের অভাব, কর্তব্যে অবহেলা এবং নৈতিকতার অবক্ষয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি এখন আর নতুন কিছু নয়। কোনো পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিঃসন্দেহে একটি গুরুতর অপরাধ। প্রশ্নফাঁসের দুর্যোগ আসছে ৩০ জুন অনুষ্ঠিত হওয়া এইচএসসি পরীক্ষাটিকেও যেন প্রশ্নবিদ্ধ না করে, সেদিকে কর্তপক্ষের নজর রাখতে হবে। প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টিকে এখন আর সাধারণভাবে দেখার সুযোগ নেই। যারা প্রশ্নপত্র ফাঁসচক্রের যুক্ত, তারা একদিকে যেমন জাতির মেধাবী সন্তানদের বঞ্চিত করছে, অন্যদিকে হাঁকিয়ে নিচ্ছে কোটি টাকা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা মেধাবী শিক্ষার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তারা হতাশায় ভুগে। একজন শিক্ষার্থী চিন্তা করে, এত পরিশ্রম করেও ভালো ফলাফল করতে পারলাম না অথচ আমার সহপাঠী পরিশ্রম না করেই ভালো ফলাফল করল! এ ধরনের হতাশা একজন শিক্ষার্থীর মেধাকে ধ্বংস করে দেয়। আমাদের দেশে মূলত দুই ধরনের প্রশ্ন ফাঁসের দৃশ্য দেখা যায়। একটি পরীক্ষার দুই-একদিন আগে ফাঁস হওয়া, আরেকটি পরীক্ষা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ফাঁস হওয়া। এখন নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে প্রশ্ন ফাঁস, যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কিছুসংখ্যক শিক্ষক নামদারি অসৎ মানুষ ও কোচিং সেন্টার।
প্রযুক্তির কারণে এখন প্রশ্নপত্র ফাঁস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া সহজ হয়েছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে চাই কঠোর আইন, সেই সঙ্গে প্রশ্নপত্র বিতরণে ভিন্নতা আনতে হবে। প্রশ্ন ফাঁস প্রতিরোধের জন্য সব থেকে কার্যকর পদক্ষেপ হলো 'প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রতিরোধ আইন' প্রণয়ন করা এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করা। অন্যান্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার পাশাপাশি পরীক্ষাকেন্দ্রের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমের সুষ্ঠু পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করা সম্ভব হবে।
সাকিবুল হাছান
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা কলেজ, ঢাকা