নিয়ম রক্ষায় কেন বন উজাড়

প্রকাশ | ০৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

নিয়ামুর রশিদ শিহাব
অসহনীয় গরমে গাছতলাতে একটু প্রশান্তি খোঁজেন মানুষ। গাছপালায় ঠিকানা খুঁজে নেয় পাখ-পাখালি। তীব্র গরমে সরকার যখন গাছ লাগানোর জন্য নিচ্ছে নানা উদ্যোগ, তখনই সড়কে কাটা পড়ছে প্রায় ৩০ বছরের পুরনো মেহগনি, রেইনট্রি, কড়ই, শিশু, বাবলা, আকাশমনি দেড় শতাধিক গাছ। সামাজিক বনায়ন বিধিমালার নিয়ম রক্ষা করতে উপকারভোগীদের ন্যায্য হিস্যা দিতে সড়কের দুই পাশের গাছ কাটা হচ্ছে বলে দাবি বনবিভাগের। তবে বিধিমালা পরিবর্তন করে উপকারভোগীদের অন্য ধরনের সুবিধা দেওয়ার পরামর্শ পরিবেশবিদদের। পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার উলানিয়া বাজার গ্রামীণ ব্যাংক হইতে সদরের দিকে ১ কিলোমিটার রাস্তার পাশে ১৯৯২-৯৩ সালে মেহগনি, রেইনট্রি, কড়ই, শিশু, বাবলা, আকাশমনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করা হয়। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় চারটি লটের মাধ্যমে মোট ১৬২টি গাছ কাটা হচ্ছে। উপকারভোগী সংশ্লিষ্ট বাগান হওয়ায় তাদের ন্যায্য হিস্যা প্রদানের লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা পরিবেশ বন উন্নয়ন কমিটির অনুমোদনসাপেক্ষে গাছ বিক্রি করা হয়েছে। জানা যায়, বিক্রি করা এই অর্থ বন অধিদপ্তর ১০ শতাংশ, ভূমি মালিক সংস্থা ২০ শতাংশ, উপকারভোগী ৫৫ শতাংশ, পুনরায় বাগান করার জন্য ১০ শতাংশ এবং ইউনিয়ন পরিষদ পাবে ৫ শতাংশ। দুই পাশের এই গাছগুলো সড়কটিকে ছায়া দিয়ে রাখত। ছায়া দেওয়া এসব গাছের কোনোটিই রাখা হচ্ছে না। ছোট-বড় সব গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। গাছগুলোতে আশ্রয় নেওয়া পাখিগুলো হারাচ্ছে আবাসস্থাল। যেহেতু ওই জায়গায় রাস্তা প্রশস্তসহ কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে না। সে ক্ষেত্রে গাছ কাটলে কোনো উপকার তো হবেই না, বরং পরিবেশ অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। পরিবেশবিদদের মতে, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে একটি দেশের মূল ভূখন্ডের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা দরকার। দক্ষিণাঞ্চলে বনাঞ্চলের পরিমাণ ভালো থাকলেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে বিশেষ করে মাটি ক্ষয় ও মানব সৃষ্ট কারণে বন উজাড় হচ্ছে। নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে। এতে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেবে। এখন যে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন চলছে, সে ক্ষেত্রে গাছ কাটা নিঃসন্দেহে পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে গাছ খুবই দরকার। গাছ পরিবেশকে ঠান্ডা রাখে। তাই বিধিমালা পরিবর্তন করে উপকারভোগীদের অন্য ধরনের সুবিধা দেওয়ার বিধান প্রণয়ন করতে হবে। গাছ কাটার বদলে বেশি করে গাছ রোপণ করতে হবে। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সবাকেই সচেতন হতে হবে। তবে এর ব্যতিক্রমে জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশের বিরূপ প্রভাবে দুর্যোগগুলো দেখা দিবে। যা মনুষ্য সমাজের জন্য হয়ে দাঁড়াবে হুমকিস্বরূপ। নিয়ামুর রশিদ শিহাব শিক্ষার্থী ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি