শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হবে

  ০৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হবে

ভূমিকম্প ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। মাঝারি থেকে শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দেশে। এ ধরনের ভূমিকম্পে সুনামির কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে। বঙ্গোপসাগরে ভূমিকম্পের চারটি সক্রিয় উৎস সমুদ্র এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি কম্পন সৃষ্টি করতে পারে- যা দেশকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাঁচটি ভূতাত্ত্বিক ফল্ট লাইন দেশের মধ্যে রয়েছে- যা একটি বড় ভূমিকম্পের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে। অনেক ভবনের ত্রম্নটিপূর্ণ কাঠামো এবং যথাযথ সচেতনতার অভাবে এ দেশে ৭ বা তার বেশি মাত্রার বড় ভূমিকম্প হলে তা দেশকে বড় মানবিক ট্র্যাজেডির দিকে নিয়ে যাবে।

তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্প সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বলেছেন, এই যে আনাতোলিয়া ফল্ট, সেখানে অনেক পেস্নটের একটা জট তৈরি হয়েছে। আর ওখানকার যে ভূতাত্ত্বিক অবস্থা, ভূমির গঠন সেটি শক্ত একটা ভিতের ওপর তৈরি। সেখানকার মাটির নিচের স্ট্রাকচারগুলো অপজিশন পেস্নটের চেয়ে বেশি দৃঢ় প্রকৃতির, যার ফলে সেখানে ভূমিকম্প দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে ভূমিকম্পের কম্পন সাধারণত দুইভাবে হয়। একটি বডি ওয়েজ, আরেকটি শকড। এটার শব্দের সঙ্গে কম্পনটা আরও দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ে। দেশের ভূপ্রকৃতির যে গঠন তা হচ্ছে কয়েকটি পেস্নটের সমন্বয়। যেমন ইন্ডিয়ান পেস্নট, ইউরেশিয়ান পেস্নট এবং পূর্বের দিকে আরেকটি। সেই দিক থেকে বিবেচনা করলে আমাদের ভূপ্রকৃতির গঠন অর্থাৎ এলিমেন্টারি অতটা শক্ত নয়। যার ফলে আমাদের দেশে ভূমিকম্প হলে সেটি চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়তে কিছুটা সময় লাগবে। এইটা হচ্ছে আমাদের জন্য একটা ভালো দিক। তবে উন্নত বিশ্বের যেমন যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি থাকে তেমনি আমাদেরও এ রকম দুর্যোগে পড়ার আগেই ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। প্রস্তুতির বিকল্প কিছুই নেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের অভ্যন্তর এবং প্রধান শহরগুলোর আশপাশে ভূমিকম্পের ঘটনাগুলো নির্দেশ করে যে সাধারণভাবে দেশের জন্য এবং বিশেষ করে শহরগুলোর জন্য ভূমিকম্পের বিশেষ ঝুঁকি বিদ্যমান। কাঠামোগত নকশা, শহর পরিকল্পনা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভূমিকম্প শক্তির বিবেচনা তাই ভবিষ্যতের দুর্যোগ প্রশমনের জন্য একটি পূর্বশর্ত। রাজধানী শহর ঢাকা ভূমিকম্পের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ অপরিকল্পিত নগরায়ণ এজন্য দায়ী।

আমরা মনে করি, ভূমিকম্প সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে গণসচেতনতা তৈরি করতে হবে। ভূমিকম্প হলে কী করতে হবে, কোথায় আশ্রয় নিতে হবে, কোথায় সাহায্যের জন্য ফোন করতে হবে ইত্যাদি বিষয় বিভিন্ন টেলিভিশন, রেডিও, সংবাদপত্র, টকশোতে প্রতিদিন প্রচার করা উচিত।

জাতীয় বিল্ডিং কোড মেনে ভবন তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি সক্ষমতা বৃদ্ধির যথাযথ প্রয়োগ বাংলাদেশে ভূমিকম্পের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে