আবারও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খুনের ঘটনা ঘটেছে। কক্সবাজারে উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারের জেরে এক রোহিঙ্গাকে খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বালুখালী ৮-ইস্ট নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ ঘটনা ঘটে। নিহত ৩৫ বছর বয়সি মো. সালেক ওই ক্যাম্পের ডি-৭৬ বস্নকের মো. নুর আলমের ছেলে। নিজের ঘরে ফেরার পথে বোরকা পরা ৩-৪ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি সালেকের পথ আটকায়। তারা সালেকের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা সালেককে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখানের চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেয়। সেখানে নেওয়ার পথে সালেকের মৃতু্য হয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সক্রিয় সন্ত্রাসী দলগুলোর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে ধারণা এ পুলিশ কর্মকর্তার। বলা দরকার, শুধু এবারের ঘটনাই নয়, এর আগেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার পর থেকে মাদক, অস্ত্র চোরাচালানসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন সময়েই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেমন ঘটছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, তেমনি অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারসহ ঘটছে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা- যা আমলে নেওয়া জরুরি। এর আগে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিশেষ অভিযান চালিয়ে পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদসহ আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী আবদুলস্নাহকে গ্রেপ্তার করেছিল ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। দেশীয় তৈরি বড় ওয়ান শুটার গান একটি, মাঝারি সাইজের ওয়ান শুটার গান দু'টি, রাইফেলের গুলি ২০ রাউন্ড, শর্টগানের কার্তুজ একটি, রাইফেলের গুলির খোসা ২০টি, পিস্তলের গুলির খোসা তিনটি উদ্ধার করা হয়। রোহিঙ্গা সংকটের যৌক্তিক সমাধানের ব্যাপারে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কেবল আশারবাণী শোনানো হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এছাড়া পর্যায়ক্রমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করা হবে, এ ধরনের আশ্বাস বাংলাদেশকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবে আলোর মুখ দেখেনি। মনে রাখা দরকার, প্রায় ১৭ কোটির অধিক বাংলাদেশি নাগরিকের জনবহুল বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের চাপ আর কতদিন সইতে হবে- এই প্রশ্ন অযৌক্তিক নয়। যা আন্তর্জাতিক মহলকেও ভাবতে হবে। মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার অর্থ এই নয় যে, তাদের আজীবন রাখতে হবে। এটা এখন বাংলাদেশের জন্য বিরাট বোঝা। বাংলাদেশ চায় সুষ্ঠু সুন্দর ব্যবস্থাপনায় নাগরিক মর্যাদায় তাদের পূর্ণ অধিকার দিয়ে ফেরত নেওয়া হোক। আর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বা অস্থিরতা রোধে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে এমনটি প্রত্যাশিত।