আবার অগ্নিকান্ড
প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন
প্রকাশ | ৩০ জুন ২০২৪, ০০:০০
দেশে একের পর এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। মার্কেট, বস্তি, বিভিন্ন কারখানা থেকে শুরু করে উঁচু ভবনে বিভিন্ন সময়ে হৃদয়বিদারক এবং ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই। প্রসঙ্গত, আবারও ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটল। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার রিয়াজউদ্দিন বাজারের একটি মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আর এ ঘটনায় তিনজন নিহত এবং একজন দগ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে বাজার এলাকার রিজওয়ান কমপেস্নক্সে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের নন্দনকানন স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ আলী জানিয়েছেন, রাত দেড়টার দিকে মার্কেটের ব্রাদার্স টেলিকম নামের একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে আগুন আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পরে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। আমরা বলতে চাই, সামগ্রিকভাবে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনার ভয়াবহতা অনুধাবন করতে হবে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় বৈদু্যতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে। অন্যদিকে, মার্কেটে বাতাস চলাচলের সুযোগ না থাকায় আগুন নেভাতে সময় লেগেছে বলেও জানা যায়। শুক্রবার মার্কেট বন্ধ থাকায় অনেকে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। না হলে হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা ছিল- এমন আলোচনাও উঠে এসেছে। উলেস্নখ্য, রিজওয়ান কমপেস্নক্স মার্কেটটি আটতলা বিশিষ্ট। সেখানে মোবাইলের যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস পণ্যের দোকান রয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বলেছেন, বাজারে অগ্নিকান্ডের সময় একটি ভবনের একটি বাসা থেকে হতাহত ব্যক্তিরা বের হতে পারেননি। ধোঁয়ায় তারা অচেতন হয়ে পড়েন। আমরা বলতে চাই, বিভিন্ন সময়েই একের পর এক অগ্নিকান্ডের মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে। সাম্প্রতিক সময়ে এটিও আলোচনায় আসে যে, দেশে অগ্নিকান্ডের মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনা বাড়ছে। এতে জনমনে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও। ফলে, সার্বিক পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগের তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এর আগে বিশ্লেষকরা অগ্নিকান্ড প্রতিরোধে সচেতনতার ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। ফলে, যখন আবার ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটল, তখন সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, অগ্নিকান্ডের যে চিত্র পরিলক্ষিত হয়, তা অত্যন্ত উৎকণ্ঠাজনক এবং ভীতিপ্রদ। ফলে তা অনুধাবন করা এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য। স্মর্তব্য, শুধু এবারই নয়- এর আগেও বিভিন্ন সময়ে মার্কেটে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভবন অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে বলেও জানা গিয়েছিল। ফলে শুধু চট্টগ্রাম বা রাজধানী ঢাকা নয়, সারাদেশে যেসব ভবন অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে তা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমলে নেওয়া দরকার, অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে রেহাই পায়নি বস্তি থেকে শুরু করে মার্কেট, কেমিক্যাল গোডাউন কিংবা আধুনিক বহুতল ভবনও। বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে ঘটে যাওয়া বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ ও সতর্ক না হওয়ায় অগ্নিদুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে, এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। সর্বোপরি বলতে চাই, এবারের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া মার্কেট, পস্নাস্টিক কারখানা, কেমিক্যাল গোডাউন থেকে শুরু করে আধুনিক বহুতল ভবন, কারখানা, বস্তিসহ বিভিন্নভাবে অগ্নিকান্ডের যে ঘটনা ঘটেছে- প্রত্যেকটি ঘটনা আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। অগ্নিদুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে- এর চেয়ে ভয়ানক আর কী হতে পারে! পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে এই প্রশ্নও অযৌক্তিক নয়, অগ্নিকান্ডের পুনরাবৃত্তি রোধ করা যাচ্ছে না কেন! ফলে, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যে কোনো ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।