অনলাইন জুয়া রোধে উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ২৬ জুন ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন জুয়ার বিষয়টি বিভিন্ন সময়েই আলোচনায় এসেছে। এক্ষেত্রে বলা দরকার, অনলাইন জুয়ায় যেমন অনেকেই সর্বস্বান্ত হচ্ছে, তেমনি ঘটছে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, মোবাইল ফোনসহ ইলেকট্রনিক ডিভাইসে অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে একটি অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেছেন, অনলাইন জুয়ায় মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে আমাদের বিভিন্ন বয়সের ছেলেমেয়েরা যুক্ত হয়েছেন। এমনকি অনেক বয়স্ক, রিটায়ার্ড পারসনরাও এর মধ্যে আসছেন। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ৫০ লাখ মানুষ কীভাবে যেন এ অবৈধ জুয়ার সাইটগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন বলেও জানিয়েছেন। আমরা বলতে চাই, দেশের ৫০ লাখ মানুষ অবৈধ জুয়ার সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন- এই বিষয়টি কোনোভাবেই সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। বরং সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, অবৈধ জুয়ার সাইটগুলোকে বস্নক (বন্ধ) করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি সচেতনতা তৈরি করার চেষ্টাও চলছে, যেন সাধারণ মানুষ এ ধরনের কোনো প্রলোভনে পড়ে প্রতারিত না হন, দেশের মুদ্রা যেন বিদেশে পাচার না হয়। এছাড়া এ পর্যন্ত দুই হাজার ৬০০টি জুয়ার সাইট বস্নক করার কথাও জানিয়েছেন। অন্যদিকে, মোবাইল অ্যাপগুলো প্রতিনিয়ত বস্নক করা হচ্ছে বলেও জানা যায়। আমরা বলতে চাই, অনলাইন জুয়ায় জড়িয়ে নানা ঘটনা ঘটছে এটাকে যেমন এড়ানো যাবে না, তেমনিভাবে স্মর্তব্য যে, অনলাইন জুয়ার পস্নাটফর্মের মাধ্যমে বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচার সংক্রান্ত খবরও এর আগে উঠে এসেছে। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিকল্প নেই। একইসঙ্গে আইনের প্রয়োগ ও সচেনতা বৃদ্ধির কার্যক্রমও অব্যাহত রাখতে হবে। বলা দরকার, এর আগে এমনটিও খবরের মাধ্যমে জানা গিয়েছিল, সারাদেশে অনলাইন জুয়াড়িদের বিশাল নেটওয়ার্ক আছে। প্রথম দিকে কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে খেললেও শেষ পর্যন্ত জুয়ায় আসক্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। আসক্তরা ঘরে বসেই বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে অনলাইনে দেশে ও বিদেশে জুয়া খেলছেন এমন খবরও উঠে আসে। ফলে সার্বিক বিষয়গুলোকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। মনে রাখা দরকার, দেশে সব ধরনের জুয়া আইনগতভাবে নিষিদ্ধ। ফলে অনলাইন জুয়ার প্রসার ঘটবে মানুষ আসক্ত হয়ে পড়বে এবং ঘটতে থাকবে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা- এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। উলেস্নখ্য যে, এর আগে এ সংক্রান্ত উদ্বেগজনক বিষয় আলোচনায় এসেছিল যে, লাগামহীন হয়ে পড়ছে অনলাইন জুয়া। স্মার্ট মোবাইল ফোনে চলছে জুয়া। অন্যদিকে, জুয়ায় হেরে নিঃস্ব হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। এছাড়া জুয়া খেলার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে ঘটছে নানা ধরনের অপরাধ। অনলাইন জুয়ার প্রসঙ্গতে এটাও সংশ্লিষ্টদের আমলে নেওয়া দরকার, এর আগে জানা গিয়েছিল, শহরের ও গ্রামের নিম্ন আয়ের মানুষের অনেকেই লুডু খেলার অ্যাপস মোবাইল ফোনে ডাউনলোড করে টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলছেন। আবার অনেকেই বাজি ধরে খেলছেন। এ ক্ষেত্রে এটা এড়ানো যাবে না যে, বাজিও এক ধরনের জুয়া। যা আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা মনে করি, যা আইনগতভাবে নিষিদ্ধ তা যদি ঘটতে থাকে তবে বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের। ফলে আইনের প্রয়োগ যেমন ঘটাতে হবে, তেমনিভাবে সচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগী হতে হবে। জুয়ার কুফল সম্পর্কে প্রচার প্রচারণা চালাতে হবে। সর্বোপরি বলতে চাই, জুয়া সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। দেশের ৫০ লাখ মানুষ অবৈধ জুয়ার সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন- এই বিষয়টিকে সহজ করে দেখার যেমন সুযোগ নেই, তেমনি সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে অনলাইন জুয়া রোধে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। মানুষকে যেমন সচেতন করতে হবে, নিরুৎসাহিত করতে হবে, তেমনি জুয়ার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে, আইনের প্রয়োগ ঘটাতে হবে। অনলাইন জুয়া সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা তৎপর থাকবে এমনটি কাম্য।