অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার পরিকল্পিত উদ্যোগ জরুরি
প্রকাশ | ১৬ জুন ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
পবিত্র ঈদুল আজহার আগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বাজার সিন্ডিকেট। ঈদে যে পণ্যগুলোর চাহিদা থাকে সবার শীর্ষে, ইতোমধ্যেই দফায় দফায় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সেগুলোর দাম। একদিনের ব্যবধানেই কেজিপ্রতি মরিচের দাম বেড়েছে ৫০-৬০ টাকা, আর সপ্তাহের মধ্যেই বেড়েছে ৮০-১০০ টাকা পর্যন্ত। দেশি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত, বিদেশি (ভারত) কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি করে। এ ছাড়া প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি করে এবং লাউ প্রতি পিস ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও বাজারে কাঁচামরিচ ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হতো। গত বছর ঈদুল আজহার আগে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে ৭০০ টাকায় উঠেছিল। বাজার ফাঁকা, ক্রেতা নেই বললেই চলে। তবুও বিক্রেতারা সব ধরনের সবজি অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে। বাজারের ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। সবজি বিক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত বাড়তি দামে সব ধরনের সবজি কিনে আনতে হয়েছে। যে কারণে খুচরা বাজারে সবজির দাম বেশি। মূলত ঈদের সময় হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সবজি ভর্তি ট্রাক বাজারে কম ঢুকেছে। সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বাড়তি। কোরবানির ঈদে সংসারে মসলার প্রয়োজন কয়েকগুণ বেড়ে যায়। বিশেষ করে মাংস রান্নার জন্য পেঁয়াজ, রসুন, আদার মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সঙ্গে লাগে উলেস্নখযোগ্য পরিমাণে গরম মসলাও। মসলার বাজারে খরচের বড় খড়গ লেগেছে। শেষ কয়েকদিনের ব্যবধানেও দাম বেড়েছে আরেক দফা। এখন রাজধানীর বাজারে দেশি পেঁয়াজ দামের দিক থেকে শতক ছুঁইছুঁই করছে। কোথাও ছুঁয়েছেও। তবে মোটা দাগে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ৮০ টাকা আর এক মাস আগে ৬০ টাকা ছিল। রসুনের দাম ২০ টাকা বেড়ে ২৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বড় লাফ দিয়েছে আদার দাম। ৮০ টাকা বেড়েছে কেজিপ্রতি। এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ২৪০-২৫০ টাকা ছিল। এছাড়া অন্যান্য গরম মসলার দামও আকাশছোঁয়া। এমন পরিস্থিতিতে ঈদের প্রয়োজনীয় এসব মসলা কিনতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। একেবারে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তরা নিত্যপণ্যের দরে ঊর্ধ্বগতিতে নাজেহাল হয়ে পড়ছেন। গরম মসলার বাজারে এ বছর সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এলাচের। গত বছরের তুলনায় এখন মসলাটির দর প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি। মানভেদে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৬শ' থেকে ৪ হাজার ২শ' টাকা। গত বছর এ দর ছিল ১ হাজার ৬শ' থেকে ২ হাজার ৪শ' টাকা। খুচরা বিক্রেতারা বলেছেন, এখন ডলারের দাম বেশি। বিশ্বব্যাপী মসলার দাম বেশি। মসলা আমদানিতে পরিবহণ খরচ বেড়েছে। এসব কারণে দাম বেড়েছে।
বিশ্ববাজারে পণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে অনেক দেশে মূল্যস্ফীতি ঘটে। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক ও মূল্য হ্রাসের কারণে অনেক দেশে পর্যায়ক্রমে নেমে আসে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি উল্টো আরও বাড়তে থাকে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির ওই ধারা অব্যাহত আছে এখনো।
আমরা মনে করি, এর জন্য দায়ী বাজার ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে না পারা এবং বাজার সিন্ডিকেট। বাজার সিন্ডিকেট একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে জনসাধারণের পকেট কাটে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে হলে দ্রম্নত বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য।