সামাজিক নিরাপত্তায় ঋণ সহায়তা

দারিদ্র্যের মাত্রা কমবে

প্রকাশ | ১৩ জুন ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বর্তমানে বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা খাত বেশ উজ্জ্বল ও দৃঢ়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ব্যয়ের আকার ৭ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে উপকারভোগীর সংখ্যাও। এছাড়া আগামী অর্থবছরে সমাজের অন্যান্য অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ৯০ হাজার ৮৩২ জনকে ভাতার আওতায় আনা হবে। এ খাতে ১ লাখ ৩৩ হাজার ২৭২ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের ১৩০টি কর্মসূচির আওতায় বাজেটে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। হিজড়া, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর আওতায় ১২ হাজার ২২৯ জনকে আগামী বাজেটের মাধ্যমে ভাতা সুবিধা দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীও বাড়ছে। এটা দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ইতিবাচক উদ্যোগ। আশার কথা, বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এ লক্ষ্যে সরকারের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে তারা। আর্থসামাজিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দুর্বল জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করার লক্ষ্যে এবং বাংলাদেশের সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও উন্নত করার লক্ষ্যে ২৫ কোটি ডলারের এই ঋণচুক্তি হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে এই চুক্তি সই হয়। চুক্তিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পদ বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং এডিবির পক্ষে সই করেন সংস্থাটির এ দেশীয় প্রধান এডিমন গিন্টিং। এডিবির নতুন এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দেশের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির প্রতিরোধ ও সুরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানো হবে। জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ২০২১-২৬-এর দ্বিতীয় ধাপের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে নতুন এই কর্মসূচি। এই কর্মসূচি সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধিসহ সবচেয়ে অরক্ষিত মানুষকে নিরাপত্তা দেবে। এই কর্মসূচি সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি ব্যবস্থাপনার মানোন্নয়ন করবে। অংশগ্রহণমূলক ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে এটা করা হবে। এতে মানুষের অসহায়ত্ব কমবে অর্থাৎ দারিদ্র্যের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা কমবে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কারা সবচেয়ে অরক্ষিত অবস্থায় আছে, তা চিহ্নিত করে উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা বৃদ্ধি ও তাদের সুনির্দিষ্ট চাহিদা মেটাতে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া। বিধবা ভাতা কর্মসূচির আওতায় ভাতাভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি ও ট্রান্সজেন্ডার মানুষের জীবিকা নির্বাহ কর্মসূচি সম্প্রসারণ করাও এই ঋণ কর্মসূচির লক্ষ্য। নারী উদ্যোক্তাদের পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য গঠিত স্মল এন্টারপ্রাইজ রিফিন্যান্সিং স্কিমের বরাদ্দ দ্বিগুণ করা হচ্ছে। শ্রমজীবীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শ্রমিক সংগঠন, নিয়োগদাতা ও সরকারের সমন্বয়ে ত্রিপক্ষীয় জোট গঠন করা হবে। তিন পক্ষের অংশীদারি নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে শ্রমজীবীদের সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করাই এর উদ্দেশ্য। দেশের সামাজিক নিরাপত্তা খাত আরও শক্তিশালী হোক, মানুষের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।