আরও ১৮ হাজার বাড়ি হস্তান্তর

উদ্যোগ অব্যাহত থাক

প্রকাশ | ১৩ জুন ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করতে সরকারের আবাসন কর্মসূচি আশ্রয়ণ-২ পরিকল্পনার আওতায় মঙ্গলবার সারাদেশে গৃহ ও ভূমিহীন পরিবারকে আরও ১৮ হাজার ৫৬৬টি বাড়ি হস্তান্তর করেছেন- যা ইতিবাচক। তথ্য মতে, প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ, কক্সবাজারের ঈদগাঁও ও ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে সুবিধাভোগীদের কাছে জমির মালিকানা দলিলসহ বাড়ি হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের ফ্ল্যাগশিপ আবাসন কর্মসূচি আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত বাড়িগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে হস্তান্তর করেন জনপ্রতিনিধি ও মাঠ প্রশাসন। ঘর বিতরণের পাশাপাশি ২৬টি জেলার সব উপজেলাসহ আরও ৭০টি উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা। যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে। আর এর মধ্য দিয়ে দেশের ৫৮ জেলা ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত হলো। বলা দরকার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে গৃহহীনদের পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহ ও ভূমিহীনদের ঘর ও জমির মালিকানা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আমরা বলতে চাই, আরও গৃহ ও ভূমিহীন পরিবারকে বাড়ি হস্তান্তর করা হলো তখন তা ইতিবাচক। একইসঙ্গে এটাও উলেস্নখ্য যে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে যাদের ঘরবাড়ি একেবারে ভেঙে গেছে, তাদের ঘর তৈরি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গত কয়েকদিন আগে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস হয়ে গেল। সেখানে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। ইতোমধ্যে তালিকা করার বিষয়টিও জানিয়েছেন যে, কোন কোন এলাকায় কতগুলো ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেগুলো সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে, তাদের ঘর তৈরি করে দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। এছাড়া আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো নির্মাণে উপকরণ দিয়ে সহায়তার বিষয়টিও জানান। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়ার দরকার এর যথাযথ বাস্তবায়ন করা। জানা যায়, এর আগে প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রথম ধাপে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ হাজার ৩৩০টি, তৃতীয় ধাপে ৫৯ হাজার ১৩৩টি ও চতুর্থ ধাপে ৩৯ হাজার ৩৬৫টি বাড়ি বিতরণ করেন। প্রকল্পের আওতায় ভূমি ও গৃহহীন প্রতিটি পরিবারকে দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ জমির মালিকানা দিয়ে একটি আধা-পাকা বাড়ি দেওয়া হচ্ছে- যা স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই হবে। প্রতিটি বাড়িতে দুটি বেডরুম, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট ও বারান্দা রয়েছে। এ কথাও বলা দরকার, আশ্রয়ণ প্রকল্প জেলার গৃহ ও ভূমিহীন মানুষকে শুধু আশ্রয়ই দেয় না, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে তাদের স্বাবলম্বী করে তোলে। ফলে, এটির গুরুত্ব ও তাৎপর্যও অনুধাবন করতে হবে। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের তথ্য মতে, আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট সাত লাখ ৭১ হাজার ৩০১টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। পুনর্বাসিত মানুষের সংখ্যা ৩৮ লাখ ৫৬ হাজার ৫০৫ জন (একটি পরিবারে পাঁচজন ব্যক্তি হিসেবে)। এছাড়া, প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত সারাদেশে আট লাখ ৬৭ হাজার ৯০৪ ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের প্রায় ৪৩ লাখ ৪০ হাজার মানুষকে আশ্রয়ণ এবং অন্যান্য কর্মসূচির আওতায় পুনর্বাসন করা হয়েছে। শুধু আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে পাঁচ লাখ ৮২ হাজার ৫৩ ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের ২৯ লাখ ১০ হাজার ২৬৫ জনকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন। প্রশিক্ষণ ও ঋণ প্রদানের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা। আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ। এর মতো বিষয়গুলো আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্দেশ্য। ফলে, এরই উদ্দেশ্যগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। এছাড়া বলা দরকার, বিভিন্ন সময়ে ঘর নির্মাণে নানা ধরনের অনিয়ম অভিযোগ এসেছে। ফলে, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে।