হাসিনা-মোদি বৈঠক দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হোক
প্রকাশ | ১২ জুন ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে যেতে প্রতিবেশী ও আঞ্চলিক দেশগুলোর মধ্য সহযোগিতা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। এক্ষেত্রে বলা দরকার, বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারত। ফলে, দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ বজায় রাখার মধ্য দিয়ে সম্পর্কের উন্নয়নে উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল- বাংলাদেশ ও ভারতের বিদ্যমান সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগ্রহ প্র্রকাশ করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানিয়েছে যে, 'দুই নেতা আশা প্রকাশ করেছেন, বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও গভীর হবে।' মূলত টানা তিন মেয়াদে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট জয়ী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদি আবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন রোববার সন্ধ্যায়। ওই অনুষ্ঠানের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠকে এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয় বলে জানা যায়।
আমরা মনে করি, দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা এবং সমৃদ্ধির লক্ষ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট রাখতে হবে। এছাড়া দুই দেশের মধ্যকার যেসব বিষয় ইসু্য আছে সেগুলোর সমাধানে কাজ করতে হবে। এটাও জানা যাচ্ছে যে, শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। আমরা মনে করি, এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে একইসঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে পরাস্পরিক সহযোগিতাও বজায় রাখতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, অত্যন্ত 'উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে' রাষ্ট্রপতি ভবনে দুই সরকারপ্রধানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে- যা স্বাভাবিকভাবেই আশাব্যঞ্জক।
এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশ ভারত এই দুই দেশের মধ্যে অনেক বিষয় জড়িত। ফলে বহুমাত্রিক সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত এবং আরও গভীর হবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা। আমরা এটাও বলতে চাই যে, ভারত আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র আর প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা সামগ্রিকভাবেই ইতিবাচক; একইসঙ্গে দুই দেশের অগ্রগতির প্রশ্নেও জরুরি। এ কথাও বলা দরকার, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নানা বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের তিন দিকেই ভারতের অবস্থান হওয়ায় দেশটির সঙ্গে আমাদের রয়েছে বিশাল সীমান্ত এলাকা। বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে ভারতের অভিন্ন নদীব্যবস্থা- যা সরাসরি দুই দেশের সম্পর্ক নির্ধারণ করে। এর বাইরেও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা বিষয় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে প্রভাবিত করে থাকে।
এটাও উলেস্নখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পারস্পরিক সম্পর্ক আরও উষ্ণ হয়েছে। প্রসার ঘটেছে বাণিজ্যসহ সহযোগিতার অন্যান্য ক্ষেত্র। নানা ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, তিস্তার পানিবণ্টন সমস্যার সমাধান আজও হয়নি। এমনকি মোদি সরকার বারবার প্রতিশ্রম্নতি দেয়া সত্ত্বেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এছাড়া বন্ধ হয়নি সীমান্তহত্যা- যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এসব দিক বিবেচনায় আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, নরেন্দ্র মোদির এবারের শাসনামলে বাংলাদেশের সমস্যাগুলো সমাধান হবে। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় বাংলাদেশের মানুষ। আর অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর সমাধানের মাধ্যমেই তা আরও বেশি দৃঢ় হতে পারে।
সর্বোপরি বলতে চাই, বাংলাদেশ ও ভারতের বিদ্যমান সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এটি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও গভীর হবে এবং দুই দেশে সহযোগতিার পরিধি আরও বিস্তৃত হবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা। লক্ষণীয় যে, বিগত শাসনামলে বাংলাদেশের সমস্যা সমাধানে আমরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আন্তরিকতা লক্ষ্য করেছি। এবারও এর ব্যত্যয় ঘটবে না বলেও আমরা আশাবাদী। দুই দেশের স্বার্থ রক্ষা, তিস্তা, সীমান্ত হত্যাসহ সামগ্রিক বিষয়গুলো আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক। বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ভারত; ফলে, বন্ধুত্বপূর্ণ এই সম্পর্কে আরও বেশি দৃঢ় করতে দুই দেশের সংশ্লিষ্টরা সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে গ্রহণযোগ্য ও কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।