শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

জাল টাকার বিস্তার রোধ করতে হবে

  ১২ জুন ২০২৪, ০০:০০
জাল টাকার বিস্তার রোধ করতে হবে

কিছুতেই জাল টাকার বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে জাল টাকার কারবারিরা। প্রতি বছর ঈদ সামনে রেখে একটি সংঘবদ্ধ চক্র জাল টাকা বাজারে ছড়িয়ে দেয়। ঈদের বাজারে বেচাকেনা ও ব্যস্ততা বাড়ার সময়টাকে মোক্ষম সুযোগ হিসেবে বেছে নেয় চক্রটি। বিভিন্ন বিপণি কেন্দ্রে আসল নোটের সঙ্গে মিশিয়ে জাল নোট চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে তারা। ক্রেতা সামলানোর ব্যস্ততায় এ সময় প্রতিটি নোট যাচাই-বাছাই করাও কঠিন হয়ে পড়ে। যে কারণে সহজে জাল নোট কারবারিরা ধরা পড়ে না। দেশের বিভিন্ন মার্কেট, হাটে-ঘাটে সিন্ডিকেট করে জাল নোট বিক্রি করে। এক্ষেত্রে এক লাখ টাকার জাল নোট বিক্রি হয় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকায়। ঈদ ছাড়াও অন্য ধর্মাবলম্বীদের উৎসবমুখর ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের আগে মার্কেটে কেনাকাটার সময় তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে বিক্রেতাদের এসব জাল টাকা গছিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিটি উৎসবের আগমুহূর্তে জাল নোট তৈরির চক্রগুলোর জাল টাকা নিখুঁত করার ব্যাপারে প্রতিযোগিতা চলে। কারণ যে চক্রের টাকা যত নিখুঁত, তার টাকার দাম তত বেশি, বিক্রিও বেশি। জাল টাকা তৈরির পর সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে চক্রের সদস্যরা। প্রিন্টার ও অন্য সরঞ্জামের সহায়তায় বিশেষ ধরনের কাগজে নিখুঁতভাবে জাল টাকা তৈরি করছে এরা। জাল টাকা ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন ধাপে কাজ করে চক্রের সদস্যরা। তারা শুধু টাকাই নয়, বিভিন্ন দেশের জাল মুদ্রাও তৈরি করছে। জাল টাকা কারবারিরা মাঝেমধ্যে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হয়, সাজাও খাটে। কখনো আইনের ফাঁকফোকর গলে বেরিয়ে আবারও জড়িয়ে পড়ে চক্রে। জাল নোটের কারণে সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এর স্থায়ী কোনো সমাধান মিলছে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এদের ধরার জন্য অতিরিক্ত গোয়েন্দা নজরদারি রাখলেই এ চক্রের হাত থেকে সাধারণ মানুষ কিছুটা রক্ষা পেতে পারে।

আশার কথা, জাল মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে দেশে প্রথমবারের মতো একটি নতুন ও পূর্ণাঙ্গ আইন করা হচ্ছে। এতে অপরাধীদের কঠিন শাস্তির পাশাপাশি গ্রাহক হয়রানি বন্ধে রাখা হচ্ছে বেশ কিছু বিধান। কোনো গ্রাহক অজান্তে জাল নোট বহন করলে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা যাবে না।

পুরাতন আইনে জাল মুদ্রার কারবারি ও সংশ্লিষ্টদের বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যায় আসামিরা। আমরা মনে করি, এখন নতুন যে আইন হচ্ছে সেই আইনে বিচারের পদ্ধতি যেন সহজ হয়। তিন মাসের মধ্যে এসব অপরাধের বিচার সম্পন্ন করতে পারলে অপরাধীরা সাজা পাবে এবং এই অপরাধ কমে আসবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে