শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

শিশুশ্রম বন্ধে প্রয়োজন সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গীকার

বাংলাদেশের শ্রমবাজারে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। করোনা মহামারির ফলে শিশুশ্রম আরও বহুগুণে বেড়ে গিয়েছে।
ইমরান ইমন
  ১২ জুন ২০২৪, ০০:০০
শিশুশ্রম বন্ধে প্রয়োজন সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গীকার

'ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে'। অর্থাৎ, আজকের শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। শিশুরাই আগামীর দেশ ও জাতি গড়ার কারিগর। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ শিশু। কিন্তু শ্রমের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে শিশুদের দুরন্ত শৈশব এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অন্ধকারের অতলে হারিয়ে যায়।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে শিশুশ্রম একটি ভয়াবহ সমস্যা। যে বয়সে একটি শিশু বই হাতে নিয়ে বিদ্যালয়ে দুরন্ত শৈশব অতিবাহিত করার কথা সে বয়সে তাকে ইটভাটা বা শিল্পকারখানায় মানবেতর শ্রম দিতে হচ্ছে। সব ক্ষেত্রে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ হলেও ঘর থেকে বের হলে দেখতে পাওয়া যায় শিশুশ্রমের করুণ চিত্র। হোটেল, মোটেল, লঞ্চ, বাস, ইটভাটা, পাথর ভাঙা, মোটর গ্যারেজ, অ্যালুমিনিয়াম কারখানা, কলকারখানা, বাসাবাড়ি, মিষ্টি ও বিস্কুট ফ্যাক্টরি, তামাক শিল্প, চামড়া শিল্প, চা শিল্প, ভারী শিল্প ইত্যাদিতে প্রতিনিয়ত দেখা যায় শিশুশ্রমের নির্মম চিত্র। দারিদ্র্যের নির্মম কষাঘাতে জর্জরিত পরিবারের সন্তানরা দু'বেলা দু'মুঠো ভাত মুখে দেওয়ার জন্য নিরুপায় হয়ে শিশুশ্রমে জড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শিশুশ্রমের প্রথম ও প্রধান কারণ হলো 'অর্থনৈতিক দুরবস্থা'।

শিশুর বয়সসীমা ও শিশুশ্রম নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা হয়েছে। ১৯৭৪ সালে চিল্ড্রেন অ্যাক্ট-এ শিশুর বয়স ১৬ বছর করা হয়। ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে মতামত রাখা হয়েছিল ১৮ বছর হবে শিশুর সর্বোচ্চ সময়কাল। ১৯৯৪ সালে প্রণীত জাতীয় শিশুনীতিতে শিশুদের বয়স ১৪ বছর করা হয়েছিল। ২০০৩ সালের ১ জুন শিশুর বয়সসীমা ১৬ বছর নির্ধারণ করা হয়। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২(৬৩) ধারায় 'শিশু' অর্থ ১৪ বছর বয়স পূর্ণ করেন নাই এমন কোনো ব্যক্তি। ২০১১ সালে জাতীয় শিশুনীতি ২-১ ধারায় শিশু বলতে ১৮ বছরের কমবয়সি কোনো ব্যক্তিকে বোঝায়।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ও জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে শিশুশ্রম প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, 'যখন কোনো শ্রম বা কর্মপরিবেশ শিশুর দৈহিক, মানসিক, আত্মিক, নৈতিক ও সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক ও ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়ায়, তখন তা শিশুশ্রম হিসেবে গণ্য হবে।' ইউনিসেফ শিশুশ্রম সংজ্ঞায়িত করেছে, 'যে ধরনের কাজ শিশুর স্বাস্থ্য ও শিক্ষাকে ব্যাহত করে তাই শিশুশ্রম।' শিশুদের অধিকার রক্ষা এবং ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে ২০০২ সাল থেকে জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ওখঙ) ১২ জুন 'বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস' পালন করে আসছে। প্রতি বছর বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৮০টি দেশে এ দিবসটি পালন করা হয়।

আইএলওর জরিপ অনুযায়ী, পৃথিবীতে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৩৬ কোটি ৬০ লাখ। প্রতি ৬ জন শিশুর মধ্যে একজন শিশুশ্রমে নিযুক্ত। পাচার, সন্ত্রাস, নির্যাতন প্রভৃতি কারণে প্রতি বছর প্রায় ২২ হাজার শিশু মারা যায়। শ্রম অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, দেশে ৬৯ লাখ শিশু শ্রমিক রয়েছে। ইউনিসেফের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে দেশে শিশুর সংখ্যা ছয় কোটিরও বেশি। ৯০ শতাংশ প্রাথমিকভাবে স্কুলে গেলেও শিক্ষা সমাপ্ত করার আগেই অর্ধেকের বেশি ছেলেমেয়ে স্কুল থেকে ঝরে পড়ে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৭ শতাংশ শিশু শ্রম দিচ্ছে কেবল খাদ্যের বিনিময়ে। ২৩.৭ শতাংশ শিশুকে মজুরি দেওয়া হলেও এর পরিমাণ শিশু আইনের তুলনায় নগণ্য।

বাংলাদেশে সংবিধানের ১৭ অনুচ্ছেদে শিশুদের বাধ্যতামূলক অবৈতনিক শিক্ষা, ১৮ অনুচ্ছেদে পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ২৮ অনুচ্ছেদে কল্যাণ ও উন্নয়ন বিশেষ আইন প্রণয়ন করা এবং ৩৪ অনুচ্ছেদে জোরপূর্বক শিশুশ্রমে নিয়োগ নিষিদ্ধ করার সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিশুশ্রম বন্ধের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রয়েছে অসংখ্য নীতিমালা। ২০১১ সালে প্রণীত জাতীয় শিশুনীতিতে বলা হয়েছে, ৫-১৮ বছরের কোনো শিশুকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানো যাবে না। ৫-১৪ বছরের শিশুকে কর্মে নিয়োগ দেওয়া দন্ডনীয় অপরাধ। শিশু আইন-২০১৩ এ বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি তার দায়িত্বে থাকা শিশুকে আঘাত, উৎপীড়ন বা অবহেলা করেন তা হলে ওই ব্যক্তি অনধিক ৫ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ও ইউনিসেফ পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায় যে, বর্তমানে বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে প্রায় ৩১০ ধরনের অর্থনৈতিক কাজ-কর্মে শিশু শ্রমিকরা শ্রম দিচ্ছে।

আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়তই ঘটছে শিশু শ্রমিকদের প্রতি অমানবিক নির্যাতন। শিশু গৃহকর্মী কাজ করতে গিয়ে পেস্নট ভাঙার অপরাধে মালিকের নির্মম নির্যাতন, হোটেলের শিশু ওয়েটার গস্নাস ভাঙার অপরাধে মালিকের নির্যাতন, শিশু শ্রমিক কাজে ভুল করায় বেঁধে লোমহর্ষক নির্যাতন। এমনই বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত শিশুরা প্রতিনিয়ত কীভাবে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়, তা আমরা গণমাধ্যমে প্রায়শই দেখে থাকি।

শিশুশ্রমের ভয়াবহতা দিন দিন বেড়েই চলছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ৭০ শিশু জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু এ নতুন শিশুর জন্য রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে কোনো বাজেট বরাদ্দ থাকে না। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতিটি শিশু ৬০ হাজার টাকা ঘাটতি বাজেট নিয়ে বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে।

লোকাল এডুকেশন অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ২০-২৫ লাখ শিশু আছে যাদের পথশিশু বলা হয়। এসব শিশু অভাবের তাড়নায় ভেঙে যাওয়া পরিবার থেকে বেরিয়ে পথে নেমেছে। এসব শিশুরা রাত কাটায় বাসস্টেশন, রেলস্টেশন, ফুটপাত, পার্ক, রাস্তা কিংবা খোলা জায়গায়। এরা পথশিশু। এরা পথেই থাকে, পথেই জীবিকা নির্বাহ করে। এদের সবার বয়স ৫-১৮ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন প্রকার অপরাধ, অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে, কেউ কেউ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। কেউ পাচার চক্রের পালস্নায় পড়ে বিদেশে পাচার হয়ে যায়। কারও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে নেওয়া হয়। একপ্রকার দুষ্টচক্রের সিন্ডিকেট এসব পথশিশুদের নানান অপরাধমূলক কর্মকান্ডে ব্যবহার করে। মেয়েশিশুদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও যৌনকর্মে লিপ্ত করানো হয়। সোশ্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক এনহ্যান্সমেন্ট-এর তথ্যমতে, এ পথশিশুর ৪৫ শতাংশ মাদকাসক্ত, ৪১ শতাংশ শিশুর ঘুমানোর কোনো জায়গা নেই, ৪০ শতাংশ শিশুর গোসলের ব্যবস্থা নেই, ৪৫ শতাংশ শিশুর টয়লেট ব্যবস্থা নেই। প্রায় ৫৫ শতাংশ শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকলেও তাদের দেখার কেউ নেই। আর ৭৫ শতাংশ শিশু অসুস্থ হলে ডাক্তারের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগই করতে পারে না। ৫১ শতাংশ শিশু অশ্লীল বাক্যবাণের শিকার হয়। ৪৬ শতাংশ মেয়েশিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। ১৯ শতাংশ শিশু হিরোইনে আসক্ত। ৪০ শতাংশ ধূমপায়ী। ২৮ শতাংশ শিশু ট্যাবলেটে আসক্ত এবং ৮ শতাংশ শিশু ইনজেকশনে আসক্ত।

শিশুশ্রম বন্ধে আমাদের করণীয় :

১) শিশুশ্রমকে বলা হয় দারিদ্র্যের ফসল। শিশুশ্রমের মূলে রয়েছে দারিদ্র্যতা, শিশুশ্রম বন্ধ করতে হলে প্রথমে দারিদ্র্যতাকে নিরসন করতে হবে।

২) অমানবিক শিশুশ্রম বন্ধে মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে, অন্যের শিশুকে নিজের সন্তানের মতো মনে করতে হবে।

৩) প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ১৪ বছরের কম শিশুদের সমস্যা চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধান করতে হবে।

৪) শিশুশ্রম বন্ধে গ্রাম ও শহরভিত্তিক পুনর্বাসন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। অভাবের কারণে যেসব শিশুরা শ্রমে নিয়োজিত হচ্ছে তাদের তালিকা তৈরি করে তাদের শিশুভাতা প্রদান করতে হবে।

৫) শিশুশ্রম নিরসনে যেসব আইন রয়েছে তা বাস্তবায়ন এবং স্বল্প, মধ্য, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা সরকারকে গ্রহণ করতে হবে। সবার সমন্বিত উদ্যোগে শিশুশ্রম নিরসন সম্ভব।

৬) শিশুশ্রম নিরসনের জন্য কোথায় কোথায় শিশুশ্রম হচ্ছে তা খুঁজে বের করা দরকার এবং গণমাধ্যমে এ বিষয়ে বেশি বেশি প্রচার করতে হবে।

৭) দেখা যায়, অনেক মালিক আছে যারা বেশি বেতন দিতে হবে এজন্য বড়দের কাজে রাখে না। শিশুদের দিয়ে কাজ করায়, এসব মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

৮) জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মকৌশলে শিশুশ্রমকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দিতে হবে।

৯) শ্রমজীবী প্রতিটি শিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

১০) শিশুশ্রম এবং শিশুদের অধিকার সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। শিশুশ্রম নিরসনে সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে।

শিশুরাই দেশ ও জাতির কর্ণধার। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের দেশ গড়ার কারিগর। আজকের শিশুরাই আগামীর রাষ্ট্র পরিচালনার সুমহান দায়িত্ব হাতে নেবে। এজন্য শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে, সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা অত্যাবশ্যক। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও মেধার বিকাশের জন্য নানা ধরনের পরিচর্যার ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে শিশুরা অশিক্ষা ও দারিদ্র্যের কারণে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে নানাভাবে বঞ্চিত হচ্ছে। অভাবের কারণে জীবনের শুরুতেই তারা বিভিন্ন শ্রমের পেশায় জড়িত হতে হচ্ছে।

বাংলাদেশের শ্রমবাজারে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। করোনা মহামারির ফলে শিশুশ্রম আরও বহুগুণে বেড়ে গিয়েছে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও ইউনিসেফ তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, কোভিড-১৯ সংকটের ফলশ্রম্নতিতে আরও লাখ লাখ শিশুকে শিশুশ্রমে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে- যা গত ২০ বছরের অগ্রগতির পর প্রথম শিশুশ্রম বাড়িয়ে দিতে পারে। ইউনিসেফের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৬ কোটি ৮০ লাখ শিশু শিশুশ্রমে নিয়োজিত। আর বাংলাদেশের ৪৭ লাখ শিশু শিশুশ্রমে নিয়োজিত। 'কোভিড-১৯ ও শিশু শ্রম : সংকটের সময়, পদক্ষেপের সময়' শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত শিশুশ্রম ৯ কোটি ৪০ লাখ কমেছে, কিন্তু বর্তমানে করোনা মহামারির কারণে এই অর্জন এখন ঝুঁকির মুখে।

শিশুশ্রম সরকারের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে একটি বাধা। কিন্তু আশার কথা হলো, সম্প্রতি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুকে শিশুশ্রম থেকে প্রত্যাহারে ৬ মাসের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং ৪ মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ শিশুরা প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে উপবৃত্তি পাবে। উপবৃত্তির এ অর্থ মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে দেওয়া হবে। এক লাখ শিশুকে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম থেকে প্রত্যাহার করা হবে। ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম থেকে শুধু এই এক লাখ শিশুকে প্রত্যাহারই নয়- এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে সর্ব প্রকার শিশুশ্রম থেকে শিশুদের প্রত্যাহার করা হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে শিশুশ্রমমুক্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আমাদের এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

এভাবে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বাড়তে থাকলে পুরো দেশ ও জাতি অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ, দেশের প্রাণশক্তি। এ বিপুল পরিমাণ জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তর করতে না পারলে আমাদের সার্বিক উন্নতি মুখ থুবড়ে পড়বে। কেননা, আজকের যারা শিশু, যারা নবীন তাদের ওপরই আগামীর দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। শিশুদের শ্রম থেকে মুক্তি দিয়ে তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে দুরন্ত শৈশব, করে তুলতে হবে শিক্ষার আলোয় আলোকিত। শিশুশ্রম বন্ধে প্রয়োজন সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবধর্মী কার্যকর পদক্ষেপ, প্রয়োজন গণসচেতনতা। সর্বোপরি শিশুশ্রম বন্ধে এবং শিশুদের অধিকার রক্ষায় আমাদের সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।

ইমরান ইমন : গবেষক ও কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে