শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

মিঠাপানির মাছ চাষে সাফল্য

উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে
  ১০ জুন ২০২৪, ০০:০০
মিঠাপানির মাছ চাষে সাফল্য

বলা হয়ে থাকে মাছে-ভাতে বাঙালি। বাঙালির খাদ্যতালিকায় নানা ধরনের মাছ থাকে। বিশেষ করে অতিথি আপ্যায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশন করা বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু মাছ। ফলে খাদ্যতালিকায় মাছের জুড়ি মেলা ভার। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, মিঠাপানির মাছ আহরণে বিশ্বে তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চীন এবার তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে। এই তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে ভারত। ৮ জুন শনিবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থার (এফএও) প্রকাশ করা বিশ্বের মৎস্য সম্পদ বিষয়ক প্রতিবেদন 'ওয়ার্ল্ড স্টেট অব ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার-২০২৪'-এ এই তথ্যগুলো উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে ২০২২ সালের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতি দুই বছর পরপর এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। মূলত নদ-নদী, বিল, হাওড়, বাঁওড়সহ উন্মুক্ত জলাশয়ের মাছ আহরণকে ওই হিসাবে নেওয়া হয়েছে। তবে পুকুর ও অন্যান্য জলাশয়ে চাষ মিলিয়ে মাছের উৎপাদনে বাংলাদেশ এবার তৃতীয় অবস্থান থেকে দুই ধাপ পিছিয়ে পঞ্চম অবস্থানে নেমে এসেছে। এফএওর ২০২২ সালের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে ছিল। এর আগে ২০২০ থেকে এর আগের টানা পাঁচবার বাংলাদেশ ছিল পঞ্চম অবস্থানে। ইলিশের প্রজনন এবং জাটকা রক্ষায় উদ্যোগ নেওয়ায় বিশ্বের উন্মুক্ত জলাশয়ের মাছের উৎপাদনে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। তবে দেশের হাওড় ও বিলগুলোতে ছোট ও মাঝারি অন্য মাছের জাতগুলোর প্রজননের সময় সুরক্ষা দেওয়া উচিত। উলেস্নখ্য, উন্মুক্ত জলাশয় থেকে আহরণ করা মাছের অর্ধেকই ইলিশ। বাংলাদেশ ২০২৩ সালে মোট সাড়ে ছয় লাখ টন শুধু ইলিশ উৎপাদন করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ স্বাদুপানির মাছ উৎপাদন করে ১৩ লাখ ২২ হাজার টন, যা বিশ্বের মোট মাছের ১১ দশমিক ৭ শতাংশ। বিশ্বের স্বাদুপানি ও চাষের মাছে শীর্ষে থাকা দেশগুলোর বেশিরভাগ এশিয়া মহাদেশের। এখানকার স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে মাছের চাষ বেশি হয়। বিশেষ করে চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়ায় নদী ও জলাভূমি বেশি থাকায় সেখানে স্বাদুপানির মাছ সংগ্রহ ও চাষের জন্য উপযুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশ রয়েছে। এখানকার অধিবাসীদের জীবিকা ও পুষ্টির জোগান দিতে মাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এ কথা কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই, মৎস্য খাতে সরকার সময়োপযোগী নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণের কারণে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আমরা মনে করি এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ সাফল্য লাভ করলেও বাজারে মাছের লাগাম ছাড়া দাম। স্বাভাবিক নিয়মে মাছের উৎপাদন ও সরবরাহ বেশি থাকলে দাম কমার কথা। অথচ বাজারে উল্টো চিত্রই চোখে পড়ে। নদী-জলাশয়ে, খালে-বিলে প্রাকৃতিক মাছ কমে যাওয়ায় এখন অধিকমাত্রায় মাছের চাষ হচ্ছে। এর ফলে মাছের চাহিদা পূরণ হচ্ছে, পাশাপাশি কর্মসংস্থানও হচ্ছে। সরকারের কার্যকর পদক্ষেপই কেবল পারে মৎস্য উৎপাদনে আরও সমৃদ্ধি লাভ করতে। সে জন্য বর্তমান সাফল্য ধরে রাখতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে