শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার

পরিকল্পিত উদ্যোগ জরুরি
  ০৯ জুন ২০২৪, ০০:০০
অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার

উচ্চ মূল্যস্ফীতির কবলে পড়েছে দেশ। জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের জনগণ। সব ধরনের নিত্যপণ্য, এমনকি মসলাজাত পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী দীর্ঘদিন ধরেই। সপ্তাহের ব্যবধানেই বেড়ে যাচ্ছে বিভিন্ন সবজির দাম। বিশেষ করে ডিম, আলু, পেঁয়াজসহ কিছু সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে বাদামি ডিমের দাম ডজনে পাঁচ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা দরে। যা গত সপ্তাহেও ছিল ১৫৫ টাকা। আগের মতোই উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে শাক-সবজি, চিনি, চাল, আটা, ডাল ও মাছ-মাংস। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহেও অনেক জায়গায় ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। স্থানভেদে পাকা টমেটোর কেজি ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে ৫০-৬০ টাকা, জাত ও মানভেদে বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০-৬০ টাকা, বরবটি ৬০-৮০ টাকা ও পটল ৫০-৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। স্থান ও মানভেদে কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমে কেজিতে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। চিচিঙ্গা ৭০-৮০ টাকা, ঝিঙা ৬০-৭০ টাকা, কচুর লতি ৭০-৮০ টাকা, কচুরমুখী মানভেদে ১০০ টাকা, গাজর ৮০-১০০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকা ও কাঁচা কলার হালি ৩০-৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ জাতভেদে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। বিভিন্ন জাতের এবং আমদানি করা রসুন ২০০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায়। গরুর মাংসের কেজি ৭৮০-৮০০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজি স্থানভেদে ২২০-২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সোনালি ও লেয়ার জাতের মুরগির কেজি স্থানভেদে ৩৫০ থেকে ৩৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস আগের মতোই ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজেট উত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বছর শেষে কমবে মূল্যস্ফীতি। নতুন সরকার গঠনের পরপরই বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, খুব দ্রম্নতই সিন্ডিকেট ভাঙার পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ে যত কথাই বলা হোক না কেন, বাস্তব চিত্র হচ্ছে নিত্যপণ্যের বাজার বেসামাল। কোনো আশ্বাসবাণীই কাজে আসছে না।

বিশ্ববাজারে পণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে অনেক দেশে মূল্যস্ফীতি ঘটে। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক ও মূল্য হ্রাসের কারণে অনেক দেশে পর্যায়ক্রমে নেমে আসে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি উল্টো আরও বাড়তে থাকে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির ওই ধারা অব্যাহত আছে এখনো।

বাংলাদেশের বর্তমান মূল্যস্ফীতির পেছনে স্থানীয় কারণের চেয়ে বৈশ্বিক পরিস্থিতিকে বেশি দায়ী করছে সরকার। বলা হচ্ছে, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতকে কেন্দ্র করে বৈশ্বিক জ্বালানির বাজারে অস্থিরতা ও ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিয়েছে। ওইসময় প্রায় একইসঙ্গে বাংলাদেশ ও বিশ্বের অন্যান্য দেশেও মূল্যস্ফীতি বাড়তে শুরু করে। এরপর ২০২২ সালেই বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমতে শুরু করে। যদিও বাংলাদেশের বাজারে এর তেমন কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। এক পর্যায়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসা শুরু হলেও ভিন্ন চিত্র বাংলাদেশের।

আমরা মনে করি, এর জন্য দায়ী বাজার ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে না পারা এবং বাজার সিন্ডিকেট। বাজার সিন্ডিকেট একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে জনসাধারণের পকেট কাটে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে হলে দ্রম্নত বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে