রোববার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১

পণ্য রপ্তানি কমেছে সঠিক উদ্যোগ জরুরি

  ০৭ জুন ২০২৪, ০০:০০
পণ্য রপ্তানি কমেছে সঠিক উদ্যোগ জরুরি

সুখবর নেই রপ্তানি আয়ে। মে মাসে রপ্তানি আয় কমেছে ১৬ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মে মাসে বাংলাদেশ থেকে বিশ্ববাজারে ৪০৭ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আর ২০২৩ সালের মে মাসে রপ্তানি হয়েছিল ৪৮৪ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের পণ্য। সে হিসাবে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১৬ দশমিক ০৬ শতাংশ কম রপ্তানি হয়েছে। ইপিবি বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করেছে, অর্থমূল্য বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া শীর্ষ পণ্যগুলো হলো- পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষিপণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং হোম টেক্সটাইল। অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ১৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। কৃষি পণ্যের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ শতাংশ। পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। হোম টেক্সটাইল পণ্যের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। রপ্তানিকারক ও অর্থনীতিবিদরা বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনীতিক অস্থিরতা, পোশাক পণ্যের মূল্যের নিম্নগতি, ডলার সংকট এবং উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিকে রপ্তানি আয়ের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির জন্য দায়ী করেছেন। আয়ে প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হওয়ার কারণ হচ্ছে বর্তমানে কার্যাদেশ কম। অন্যদিকে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে যে কার্যাদেশ আছে তাও ব্যবসায়ীরা গ্রহণ করতে পারছে না। একদিকে ক্রেতারা পণ্যের ন্যায্যমূল্য দিচ্ছে না, অন্যদিকে বিদু্যৎ, গ্যাস ও অন্যান্য সেবার মূল্যবৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। ফলে মূল্য প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ টিকে থাকতে পারছে না। এ ছাড়া ডলার সংকটের কারণে এলসি খুলতে অনেক সময় লাগে। ফলে বৈশ্বিক ক্রেতারা লিড টাইম বেড়ে যাওয়ার কারণে অর্ডার কম দিচ্ছে। অন্যদিকে তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো যথাসময় অর্থ দিতে পারছে না। আবার যা দিচ্ছে তাও পরিমাণের তুলনায় অনেক কম। ফলে ব্যবসার পরিচালন ব্যয় ও সময় দুটোই বেড়ে যাচ্ছে। তাই রপ্তানিকারকরা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনতে এসব সমস্যা দ্রম্নত সমাধানের দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। এপ্রিল মাসের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির কারণ ছিল ঈদের ছুটি। কিন্তু মে মাসের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির চিন্তার বিষয়। পোশাক পণ্যের ইউনিট মূল্য কমে যাওয়ার কারণে সামগ্রিক রপ্তানি আয়ে প্রভাব পড়েছে।

এটা সত্য, চলমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক অর্থনীতি একটি সংকটময় মুহূর্ত অতিক্রম করছে। আশার বিষয় হচ্ছে, শিল্পে আমরা নতুন নতুন উদ্যোক্তাদের পদচারণা দেখতে পাচ্ছি। এটা সত্য, বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংকটে আমাদের অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। তবে একই সময় বেশ কিছু নতুন কারখানা ও নতুন বিনিয়োগ এসেছে। শত প্রতিকূলতার মধ্যে এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় অনুপ্রেরণা। রপ্তানি খাতে মন্দাভাব কাটিয়ে ওঠার জন্য বরাবরই বাজার সম্প্রসারণ ও নতুন বাজার তৈরির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তৎপর ও মনোযোগী হতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে