শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

অপরাধ-দুর্নীতির কারণে দেশের অর্জন ম্স্নান হচ্ছে

সব অনিয়ম, দুর্নীতি ও সামাজিক সহিংসতার বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হওয়া একান্ত প্রয়োজন। তাহলে সার্থক হবে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তদান, সুন্দর হয়ে উঠবে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল।
বেলস্নাল হাওলাদার
  ০৬ জুন ২০২৪, ০০:০০
অপরাধ-দুর্নীতির কারণে দেশের অর্জন ম্স্নান হচ্ছে

এই পৃথিবীটাকে সৃষ্টিকর্তা সাজিয়েছেন সুচারুরূপে, অপরূপ দৃশ্যের অবতারণা করেছেন দিগন্তজুড়ে। কোথাও সমতল ভূমিতে বিস্তৃত, কোথাও পাহাড়, নদী, জঙ্গল, সাগর, আবার কোথাও জলের অতলে ডুবন্ত বিশাল ভূমি। এই সুচারু পৃথিবীরই একটি অংশ ৫৬ হাজার বর্গমাইলের আমাদের এই লাল সবুজের বাংলাদেশ। সারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে চলছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের এ দেশ। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু ট্যানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎ কেন্দ্রসহ নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড দেশ-বিদেশে অনেক সুনাম অর্জন করছে। চোখে পড়ার মতো ব্যাপক উন্নয়নের রোল মডেলে রূপান্তিত হয়েছে। তেমনি উন্নয়নের পাশাপাশি বিস্তার ঘটেছে অপরাধী ও দুর্নীতির রাঘব বোয়ালদেরও। দুর্নীতিবাজরা নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে কোটিপতি বনে যাওয়ার মানসিকতায় বড় বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে দেশকে। যার ফলে, অপরাধ ও দুর্নীতির কারণে দেশের বড় বড় অর্জন ম্স্নান হচ্ছে। সম্প্রতি সাবেক সেনাবাহিনীর প্রধান আজিজ ও পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের অনিয়ম আর দুর্নীতির খবরে দেশের মানুষের মধ্যে নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। রাষ্ট্রের দু'টি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের দু'জন শীর্ষ পদে থেকে তাদের বিরুদ্ধে যে ধরনের অভিযোগ আসছে তা অত্যন্ত লজ্জার। এদের কারণে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আস্থা রাখতে পারাটা মুশকিল হয়ে পড়েছে। এরা এত সম্পদ গড়ার সুযোগ পেল কী করে? এই জল্পনা-কল্পনা সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে। এছাড়াও আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ভারতে এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের মর্মান্তিক হত্যাকান্ডে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা এমনকি আমজনতার মাঝে প্রবল তোলপাড় চলছে। এই হত্যাকান্ডটি কলকাতা সিআইডি ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করছে। পাশাপাশি একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এমপি আনার হত্যাকান্ডের কারা জড়িত এবং কি কারণে হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে, এসব বিষয়ে অনুসন্ধানে মাঠে রয়েছে। গত ২৫ মে পত্রিকার নিউজে দেখলাম, 'চোরাচালানের ৫০০ কোটি টাকা ভাগ নিয়েই খুন হন এমপি আজীম।' সে নিউজে আসছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুসন্ধানে, 'হত্যাকান্ডে নেপথ্য ঘিরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত অঞ্চলের স্বর্ণ চোরাচালান ও মাদক পাচারের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে একের পর এক। চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেটের অন্যতম শক্তিধর সদস্য হলেন এমপির বন্ধু আকতারুজ্জামান শাহিন। চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন একাধিক সাবেক সংসদ সদস্য ও এই দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীসহ এক ডজন লোকের একটি সিন্ডিকেট। লেনদেনের ভাগবাটোয়ারার ৫শ' কোটি টাকা এমপি আনার একাই আত্মসাৎ করেন। এই টাকা নিয়ে শাহিনসহ সিন্ডিকেটের সদস্যদের একাধিক বৈঠক হয়েছে। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছিল পাওনাদাররা। কিন্তু এমপি আনার টাকার ভাগ তো দেননি, উল্টো স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে একক আধিপত্য বিস্তার করে চলেছেন। এই ঘটনার পর সিন্ডিকেটের সদস্যরা এমপি আনারকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তিনি বেঁচে থাকলে এই অঞ্চলের পুরো নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতছাড়া হয়ে যাবে।' যার কারণে এমপি আনারকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে, যা হিন্দি সিনেমাকেও হার মানিয়েছে বলে একাধিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। মানুষ রাগ ও ক্ষোভের কোন পর্যায়ে পৌঁছালে হিতাহিত জ্ঞানবুদ্ধি বিবেচনা হারিয়ে ফেলে এমন অঘটনের জন্ম দেন! এরা দেশ ও সমাজের জন্য ভয়ংকর। এমপি আনারের মেয়ের বুকফাটা আর্তনাদ, আহাজারিতে দেশের মানুষের হৃদয় নাড়া দিয়েছে। বাবা-হারা মেয়েটি তার বাবাকে শ্বাস রোধ করে মেরে দেহকে যারা টুকরো টুকরো করেছে, তাদের বিচার দাবি করেছে। আমরাও চাই হত্যাকারীদের কঠিন শাস্তি হোক। এমন নির্মম হত্যা জাতির জন্য লজ্জা ও কষ্টের এবং গোটা দেশকে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। কিন্তু এমপি আনারের কৃতকর্মের এমন কিছু অপরাধ তাকে হত্যার পর বেরিয়ে আসছে- যা জেনে শুনে বিস্মিত হয়েছে জাতি। তাহলে এই ঘটনা সূত্রে বোঝা যাচ্ছে, দেশের ক্ষমতার শীর্ষস্থানে থাকা কতিপয় ব্যক্তি মাদক পাচারকারী চক্রের মূল হোতা। এদের কারণে মাদকাসক্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে। সঙ্গে দেশে বাড়ছে পারিবারিক ও সামাজিক অস্থিরতা। অথচ এরাই মঞ্চে সভা সমাবেশে এমনকি মহান সংসদে ভাষণ দিয়ে বেড়ায় মানবিকতার কথা শোনায়, মাদকের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে হুংকার দেয়। এই মাদকের কারণে যুবসমাজ, ছাত্রসমাজ মেধাশক্তি হারিয়ে ফেলে বিপথগামী হচ্ছে। এর দায়ভার কার? এমন ক্ষমতাধরদের নয় কি? যা প্রতিরোধে ব্যর্থ সরকার, প্রশাসন ও আমাদেরই তো বটে। মোটেও সংঘটিত ঘটনাগুলোর দায়সারা সমাধানের সুযোগ নেই, হতে হবে সঠিক তদন্ত ও ন্যায় বিচার। এ দেশের সমাজব্যবস্থা, চিকিৎসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও যে হারে অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, তাতে যুবসমাজ ছাত্রসমাজ সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ ও জাতি এবং নতুন প্রজন্মকে কীভাবে আলোকিত করবে? একজন শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর, তিনি যখন তার মেয়ের সমতুল্য একজন ছাত্রীর সঙ্গে অপকর্মে লিপ্ত হয়। তখন মনে হয় সুশিক্ষার পরিবেশ ক্রমেই কুশিক্ষায় পরিণত হচ্ছে। যখন একজন শিক্ষকের চরিত্র খুবই ন্যক্কারজনভাবে জাতির সামনে ফুটে ওঠে তখন শিক্ষার মানও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এই সমস্ত অশোভনীয় কৃতকর্মের কারণে যাদের সর্বোচ্চ মেধাবী হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তারা তাদের মেধার যথার্থ প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়- যা খুবই দুঃখজনক একটা বিষয়। এ সমস্ত কুকর্মে শিক্ষার্থীদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। যার ফলে, আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটে! তার হিসেব মিলাতে বেশিদূর যেতে হবে না, এ বছরে এসএসসি ও সমমনা ফলাফলের দিকে তাকালেই বাস্তবতা পরিলক্ষিত হবে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই কাঙ্ক্ষিত ফলাফল বয়ে আনতে পারেনি। খবর পাওয়া গেছে কিছু প্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষার্থীও পাস করেনি। এটা শিক্ষা ব্যাবস্থার জন্য অত্যন্ত লজ্জার। দেশের প্রতিটি সেক্টরে অনিয়ম দেখা যায়। বিশেষ করে চিকিৎসা ক্ষেত্রেও ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে অনিয়ম ও দুর্নীতি। বড় বড় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা নানান ধরনের অপরাধ প্রকাশ পাচ্ছে পত্রপত্রিকায়। বাদ যায়নি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ তিনি ব্যাপক দুর্নীতি করে গেছেন। বর্তমান উপাচার্যের টুকিটাকি অনিয়মের অভিযোগ এসেছে। তিনি কতটুকু স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করেন তা দেখতে আরও সময় অপেক্ষা করতে হবে। তবে একজন চিকিৎসক যার নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় চলে যিনি রোগীর সেবা দিয়ে থাকেন তার দ্বারা কীভাবে অন্যায় অনিয়ম হয়! অনেক রোগী চিকিৎসা নিতে এসে মেডিকেল ডাক্তার নার্সদের সামনেই মৃতু্যর কোলে ঢলে পড়ে। মৃতু্যর খবর শুনলে বা দেখলে মানুষের মন নরম হয়। তারও মৃতু্য হবে এমনটা চিন্তায় নিজের কৃতকর্মের জন্য আলস্নাহর কাছে মাফ চায়, অনুশোচনা করে এবং হেদায়েত চায়। অথচ একজন ডাক্তার মৃতু্যর দৃশ্য চোখে দেখেও নিজেদের ভেতরে মৃতু্যর ভয় আসে না। আসলে ডাক্তারের হৃৎপিন্ড অনেক বড়, যার কারণে মানুষের মৃতু্য তাদের হৃদয় কাঁপে না। এজন্য দুর্নীতি করতেও এদের বাঁধে না। কিছু ক্ষেত্রে নির্দ্বিধায় বলা যায়, তারা নৃশংস ও বিবেকহীন। তবে সবাই এমন নয়, কিছু কিছু ভালো চিকিৎসকের দেখা পাই যাদের মধ্যে মানবিকতা এখনো বিদ্যমান। তাদের সুন্দর মন-মানসিকতা, মনুষ্যত্ব ও মানবিক গুণাবলি আছে বলেই এখন পৃথিবী সুন্দর লাগে। এ দেশে বাস করে ১৮ কোটির অধিক মানুষ। এই মানুষকে দিক-নির্দেশনা দিয়ে গেছেন এবং দিয়ে চলছেন অসংখ্য অলি, আউলিয়া, জ্ঞানী, গুণি, বোদ্ধা, লেখক, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও সুশীলরা। বিশেষ করে সাংবাদিক, লেখক, কবি-সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ ও সুশীলরা এরা সবাই জাতির বিবেক। যখন দেশে আইনের শাসনের ব্যত্যয় ঘটে, চিকিৎসা কিংবা শিক্ষা অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংকট দেখা দেয় তখন সামাজিক অস্থিরতাও ভীষণ রকম বেড়ে যায়। তখন দেশের বিবেকবান কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিকরা জেগে ওঠে। তাদের বিবেকে নাড়া দেয়, যার ফলে তারা তাদের শৈল্পিক ভাবনায় কলমের মাধ্যমে তুলে ধরে অন্যায়, অনিয়ম ও অপরাধকর্মের বাস্তব কাহিনী। সুশীলারাও সভা-সমাবেশ, টিভির টকশোতে অংশ নিয়ে এই বিষয়ের ওপর গভীরভাবে আলোচনা-সমালোচনা করে থাকেন। রাজনীতিবিদরা সভা ডেকে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ন্যায়নীতির কথা বলেন। এমপি/মন্ত্রীরা সংসদে বক্তব্যে মানুষের কল্যাণের কথা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলে এবং দেশের উন্নয়নের ছক আঁকে। তারপরও কি বন্ধ হচ্ছে অপকর্ম দুর্নীতি? দেশে উন্নয়নের ফলে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এখন নানা কর্মে ব্যস্ত মানুষ। তারপরেও দেশে অনিয়ম, দুর্নীতি, অন্যায়, ধর্ষণ ও অপরাধ বেড়েই চলেছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে কী বিচার-বিশ্লেষণ ও আত্মসমালোচনা করা উচিত নয়? এর কারণ খুঁজলে বেরিয়ে আসে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক আশ্রয়-প্রশ্রয় পাওয়া এক শ্রেণির প্রভাবশালীর ইন্ধন, এমন কি কতিপয় সাংবাদিক, লেখক ও সুশীলরা স্বার্থের কারণে অপকর্মের ছাফাই করে থাকেন! মুখে ন্যায়নীতির কথা বললেও অন্তরে বাসা বেঁধেছে অপকর্মের সমর্থনের কৌশলগত বাগ্মিতা। যার কারণে এমন কিছু ঘটনা সংঘটিত হতে দেখা যায়- যা বিশ্বাস করাও অনেক সময় কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে পড়ে। বেশ কয়েকদিন আগে বাংলা ট্রিবিউন অনলাইনে সাংবাদিক নাজনীন মুন্নীর একটি লেখা পড়লাম 'দলীয় সাংবাদিক ও সাংবাদিকতায় অনাস্থা' শিরোনামে তিনি লিখেছেন, 'মানুষ গণমাধ্যমের ওপর দিন দিন আস্থা হারাচ্ছে। সাংবাদিকদের বলা হয় কলম সৈনিক। কলমটা তার অস্ত্র এবং তা দিয়েই প্রতিনিয়ত তার যুদ্ধ। সশস্ত্র বাহিনী যেমন কোনো বিশেষ দলের না, দেশের জন্য লড়াই করে, দেশের জন্য প্রাণ বিসর্জন দিতে প্রস্তুত। সাংবাদিকরাও একেকজন যোদ্ধা, তাদের হওয়ার কথা দেশের, নির্দিষ্ট কোনো দলের নয়। কিন্তু আমরা দলীয় হয়েছি, হয়ে পড়ছি।' আমি মনে করি, শুধু সাংবাদিক নয়, দেশের কবি, লেখক ও সুশীলরাও দলীয় হয়ে গেছে। এরা অনেকেই ব্যস্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের তোষামোদ করে কোনো না কোনোভাবে লাভবান হতে। আমি দেখেছি, 'তারা সরাসরি বলেন, আমি ওমুক নেতার লোক, ওমুক দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছি। তবে সবাই নয় কিছুসংখ্যক বলা যায়। কবি, লেখক ও সাংবাদিকরা একেকজন যোদ্ধা, তারা সত্য সুন্দরের পথে চলবে, তাদের কলম হবে ন্যায়ের হাতিয়ার, নির্দিষ্ট কোনো দল বা ব্যক্তিকে খুশির জন্য নয়। তবে যে সব কবি, লেখক ও সাংবাদিকরা দেশপ্রেম হৃদয়ে লালন করে ও মানুষের কল্যাণে পেশাদারিত্বে নিজেকে এবং নিজের কলমকে শক্তিশালী করেছেন, তাদের কারণেই মূলত সব দুষ্টু লোকের অপকর্ম, দুর্নীতি, খুন ও ধর্ষণ ইত্যাদির খবর প্রকাশ পায়। যে লেখক, সাংবাদিক অন্যায় দুর্নীতির অপরাধের বিরুদ্ধে তার কলম চালাবে, সে যদি অন্যায় দুর্নীতি করা ব্যক্তির তোষামোদ করে নিজ স্বার্থে সুসম্পর্ক বজায় রাখে, তাহলে দেশে খুন ধর্ষণ অনিয়ম, দুর্নীতি, মাদক পাচার চলবেই, এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সামাজিক অস্থিরতার জন্য এই পরিস্থিতিও দায়ী বহুলাংশে। এদের তোষামদির কারণে মাদকাসক্তি, অপরাধ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, অন্যায় ও অবৈধভাবে অর্থোপার্জনের পথ নিশ্চিত করবার স্বার্থে। মোদ্দা কথা, আইনের শাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক ব্যক্তি, কবি, লেখক ও সাংবাদিক সুশীলরা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন না করতে পারলে সামাজিক অস্থিরতার অবসান হবে না।

সব অনিয়ম, দুর্নীতি ও সামাজিক সহিংসতার বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হওয়া একান্ত প্রয়োজন। তাহলে সার্থক হবে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তদান, সুন্দর হয়ে উঠবে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল।

বেলস্নাল হাওলাদার :সংগঠক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে