বেপরোয়া সাইবার অপরাধীরা রুখতে যথাযথ উদ্যোগ নিন

প্রকাশ | ০৪ জুন ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিভিন্ন সময়ে এই বিষয়টি আলোচনায় এসেছে যে, অপরাধের ধরন যেমন বদলাচ্ছে- তেমনি তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে সাইবার অপরাধও। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল, সাইবার অপরাধীদের ভয়ে দিনকে দিন তটস্থ হয়ে পড়ছে দেশবাসী। কেননা, এসব অপরাধীর হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার না করেও সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন অনেকেই। অন্যদিকে, প্রযুক্তি উন্নত হওয়ায় ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়ছে সাইবার অপরাধ। সাইবার হামলাসহ নানা ইসু্যতে বছরে ক্ষতি হয় প্রায় সাড়ে ৫৭ হাজার কোটি টাকা, এমনটিও জানা গেছে। আমরা মনে করি, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। লক্ষণীয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাইবার অপরাধীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ব্যক্তিগত সচেতনতার বিকল্প নেই। ফলে মানুষকে সচেতন করতেও উদ্যোগ নিতে হবে। প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি পেজ থেকে 'ম্যাজিক ডায়া টি' নামে একটি বিজ্ঞাপন হইচই ফেলে দিয়েছে। বিজ্ঞাপনে দেশের খ্যাতিমান পোড়া রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেনের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। আর প্রচারিত বিজ্ঞাপনে ডা. সামন্ত লালের ছবি এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যেন 'ম্যাজিক ডায়া টি' পান করলে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন। এমনকি নিয়মিত এই চা পান করলে চিরতরে ডায়াবেটিস ভালো হয়ে যাবে বলে প্রচারিত বিজ্ঞাপনে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। অথচ ডা. সামন্ত লাল জানিয়েছেন, তার কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। এর আগেও তার ছবি ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারকচক্র ও সাইবার অপরাধীরা নানা বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে। যার সত্যিকারের কোনো ভিত্তি নেই। ফলে সার্বিক পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করা জরুরি। অন্যদিকে, এই বিষয়টিও আলোচনায় আসছে যে, প্রযুক্তি এখন নিত্য ব্যবহার্য জিনিসে পরিণত হয়েছে। যত নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে, তত নতুন নতুন অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। সাইবার অপরাধ বা হামলা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। একমাত্র সচেতনতাই পারে সাইবার সংক্রান্ত অপরাধ থেকে মুক্ত রাখতে এমন অভিমত উঠে আসছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনি সৃষ্ট অবস্থা মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও জনসসচেতনতা বৃদ্ধিতেও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বলা দরকার, বর্তমান বাস্তবতাকে এড়ানোর সুযোগ নেই। কেননা, এখন মানুষের জীবনযাপন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রেই সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি জরুরি হয়ে পড়েছে। বর্তমান সময়ে এটাও স্পষ্ট, ব্যাংকিং খাত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ইন্টারনেট-এর কারণে অনেক কিছুই সহজ হয়েছে। নানা ধরনের সুবিধা পাচ্ছে মানুষ। কিন্তু একইসঙ্গে সাইবার অপরাধের কারণে নিরাপত্তাহীনতা এবং নানা ধরনের আনকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছ, সাইবার অপরাধ বিষয় সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে নানা সময়েই। শাস্তির বিধান সত্ত্বেও দিন দিন বেড়েই চলেছে সাইবার অপরাধ প্রবণতা- এমনটিও এর আগে জানা গেছে। ফলে পরিস্থিতি আমলে নিয়ে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে তৎপর হতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে হবে সাবধানতার সঙ্গে। অপরাধীদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সামগ্রিক ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, মানুষকে সচেতন হতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, অপরাধের ধরনও তত উন্নত হচ্ছে। ফলে এটিকে আমলে নিয়ে করণীয় নির্ধারণ করতে হবে। সাইবার অপরাধীদের রুখতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে রাখতে হবে। এছাড়া এর আগে জানা গিয়েছিল দিনদিন বেড়ে চলেছে সাইবার অপরাধ প্রবণতা- এই বিষয়টিকে সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সাইবার অপরাধ রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।