শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১

কালবৈশাখীতে মৃতু্য

সতর্কতা অবলম্ব্বন জরুরি
  ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০
কালবৈশাখীতে মৃতু্য

বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রাকৃতিক দুর্যোগকে রোধ করার কোনো উপায় নেই। কিন্তু এটিও আমলে নেওয়া জরুরি, প্রয়োজনীয় সচেতনতা ও যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের মধ্যে দিয়ে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। সে ক্ষেত্রে আগাম প্রস্তুতির বিষয়টি অগ্রগণ্য। প্রসঙ্গত বলা দরকার, মাত্র ১২ মিনিটের তুমুল কালবৈশাখী ও ভারী বৃষ্টিতে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম লন্ডভন্ড ও শিশুসহ তিনজনের মৃতু্য হয়েছে বলে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেছে।

তথ্য মতে, ঝড়ের কবলে পড়ে দুই নারী ও জমে থাকা পানিতে ডুবে মারা গেছে আড়াই বছরের এক শিশু। ঝড়ে টিনের চালা উড়ে গেছে, উড়ে গেছে কাঁচা বাড়িঘর। গাছ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। শনিবার ভোর ৫টার সময় এই ঝড়ের তান্ডবে ঘরের টিন নষ্টসহ সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী এবং সিমেন্ট ব্যবসায়ীর পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও খবরে উঠে এসেছে। এছাড়া রাস্তায় একাধিক গাছ ভেঙে পড়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। কিছু এলাকায় বিদু্যৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। পলস্নী বিদু্যৎ সমিতির বালিয়াডাঙ্গী জোনাল অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, ঝড়ে ৪০টির বেশি বৈদু্যতিক খুঁটি উপড়ে এবং ভেঙে গেছে। এ ছাড়াও অনেক স্থানে বৈদু্যতিক তারের ওপর গাছ ভেঙে পড়েছে। অন্যদিকে, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, ঝড়ে মরিচ, বোরো ধান, পটলসহ বিভিন্ন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আমরা বলতে চাই, কালবৈশাখী শুরু হলে এ সময়টায় কতটা সচেতনতা এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি দরকার তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে সতর্কতা এবং পূর্বাভাসের বিষয়টি আমলে নেওয়া অপরিহার্য। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাদের পুনর্বাসনের বিষয়টিও সরকার সংশ্লিষ্টদের আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। ঝড়ের তান্ডবের বিষয়টিসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণে সংশ্লিষ্টরা তৎপর থাকবে এমনটি কাম্য। এছাড়া কালবৈশাখীতে তিনজনের মৃতু্য এবং সামগ্রিকভাবে ক্ষতির বিষয়টি আমলে নিতে হবে। কালবৈশাখী ঝড়ের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে আগাম প্রস্তুতি ও পূর্বাভাস প্রদানের মধ্য দিয়ে মানুষকে সচেতন করারও উদ্যোগ আবশ্যক। এছাড়া বলার অপেক্ষা রাখে না, আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুহূর্তে মানুষ কতটা অসহায় হতে পারে। ফলে এটি অনুধাবন করা এবং নিহত হওয়ার ঘটনা ছাড়াও ক্ষয়ক্ষতির যে বিষয় সামনে আসেছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা মনে করি, দুর্যোগের পূর্বাভাস দেওয়াসহ সচেতনতা বাড়াতে কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি যেন নূ্যনতম মাত্রার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা যায়, সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না।

প্রসঙ্গত বলতে চাই, শুধু ঠাকুরগাঁও নয়, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখীর আশঙ্কা উঠে এসেছে। কালবৈশাখীসহ বজ্রবৃষ্টির আশঙ্কা আছে এমনটিও জানা যায়। ফলে, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। কালবৈশাখীতে কতটা উৎকণ্ঠাজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে, সেটি বিগত সময়ের বিভিন্ন ঘটনা আমলে নিয়ে আগামী দিনের ক্ষয়ক্ষতি কমাতেও প্রস্তুতি নিতে হবে। পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই। এছাড়া এ সময়ে করণীয় সম্পর্কিত বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে মানুষকে সচেতন করা জরুরি।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, মাত্র ১২ মিনিটের তুমুল কালবৈশাখী ও ভারী বৃষ্টিতে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম লন্ডভন্ড ও শিশুসহ তিনজনের মৃতু্য হয়েছে- এটি এড়ানোর সুযোগ নেই। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে কাজ করতে হবে। ক্ষয়ক্ষতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি আগামীতে প্রস্তুতি হিসেবে করণীয় নির্ধারণ ও সেই মোতাবেক সামগ্রিক উদ্যোগ জারি রাখাও বাঞ্ছনীয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাসসহ এ সময়টায় করণীয় সংক্রান্ত বিষয়গুলোরও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে জনসাধারণেরও উচিত পূর্বাভাসকে অবহেলা না করে গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্ব্বন করা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে