সুপেয় পানির তীব্র সংকট

দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস সুন্দরবনকে বিপর্যস্ত করেছে। লবণাক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ফলে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে সুন্দরবনে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে সুন্দরবনে বন বিভাগের ইকোটু্যরিজম পয়েন্টসহ ফরেস্ট স্টেশনগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুপেয় পানির আধার পুকুরগুলোও। সুপেয় পানি এখন সবচেয়ে বড় সংকট সুন্দরবনের। কেননা, বনের বন্যপ্রাণী, বনজীবী এবং বনে অবস্থানরত বনকর্মীদের সুপেয় পানির একমাত্র উৎস ছিল পুকুরগুলো। যার সবই নোনাপানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ফলে তারা বর্তমানে খাবার পানির মারাত্মক সংকটে ভুগছে। এতে সংকটে পড়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, মায়াবি হরিণসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীরা। সুপেয় পানির সংকটে আছে বনকর্মীরাও। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই এই সমস্যা নিরসন হবে না। পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিটি পুকুর সেচ দিয়ে সেখান থেকে লবণপানি বের করে দেওয়া হবে। এ ছাড়াও বৃষ্টির পানিতে পুকুরগুলো ভরার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। জলোচ্ছ্বাসে ৮০টি মিঠাপানির পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- যা এর আগে হয়নি। \হঅন্য এক খবরে প্রকাশ, ৩১ মে পর্যন্ত সুন্দরবনের কটকা ও দুবলা এলাকাসহ বনের বিভিন্ন স্থান থেকে মোট ১১১টি মৃত হরিণ ও ৪টি শূকর উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া আহত অবস্থায় আরও ১৮টি হরিণ ও একটি অজগর সাপ উদ্ধার হয়। এর আগে কখনো একসঙ্গে এত হরিণ মারা যায়নি। রেমালের আঘাতে প্রাথমিকভাবে সুন্দরবনে অবকাঠামোগত ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা মনে করি, অবকাঠামোগত ক্ষতি অর্থ দ্বারা পূরণ করা সম্ভব হতে পারে। কিন্তু রেমালের আঘাতে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির আর্থিকভাবে নিরূপণ করা অসম্ভব। এ হয়ত ক্ষতি সুন্দরবন নিজেই কাটিয়ে উঠতে পারবে। সেজন্য সুন্দরবনকে সময় দিতে হবে। বিরক্ত করা চলবে না। আর এ জন্য ৩০-৪০ বছর লাগতে পারে। বুড়িগোয়ালিনি, নলিয়ান ও বানিয়াখালী এলাকার ১১ কিলোমিটার গোলপাতা বন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সুন্দরবনজুড়ে পাখির হাজার হাজার বাসা ছিল। সেসব বাসায় ডিম ও বাচ্চা ছিল। সে ক্ষতি পরিসংখ্যানে নিরূপণ করা কঠিন। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার কারণে স্বাভাবিকতা ও সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে। বনের ভেতরে বন্যপ্রাণী হতাহতসহ গাছপালার ক্ষতি এখনো সঠিকভাবে নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রাণীর জন্য দ্রম্নত সুপেয় পানির আধার দ্রম্নত সৃষ্টি করতে হবে। আপাতত ছোট পুকুরগুলোতে শ্যালো মেশিন দিয়ে লোনাপানি ফেলে ফ্রি করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, এখন বৃষ্টির মৌসুম। সেখানে বৃষ্টির পানি জমে প্রাণীর জন্য সুপেয় পানির আধার দ্রম্নত সৃষ্টি করা জরুরি। এমন পরিস্থিতিতেও আশার কথা হলো, লবণাক্ততা কাটতে সহায়ক হবে বৃষ্টি। এ অবস্থায় সুপেয় পানি ধরে রাখার জায়গা ঠিক রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।