শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১

তামাকমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়

সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে
  ০২ জুন ২০২৪, ০০:০০
তামাকমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। এ প্রত্যয় পূরণে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। শুক্রবার সকালে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। দেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক সেবন করে এবং প্রায় ১৫ লাখ মানুষ তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। ধূমপান ও তামাক সেবনের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসারসহ নানা অসংক্রামক রোগ দেখা দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান স্পিকার সামিটে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। তা বাস্তবায়নে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি প্রণয়ন, জাতীয় তামাক কর নীতি প্রণয়ন ও বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও বাস্তবায়ন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ও গণমাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা পরিচালনা করা হচ্ছে। বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতা দূর করে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতি বছর দেশে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃতু্যবরণ করে। তামাকজনিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় সরকারের ব্যয় এ খাত থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব আয়ের তুলনায় অনেক বেশি।

সাম্প্রতিক সময়ে ই-সিগারেটের ব্যবহার বাড়ছে। যা আরও অধিক ক্ষতিকর। 'তামাক থেকে দূরে সরি, সুস্থ-সবল প্রজন্ম গড়ি' এমন কথা প্রায়ই উচ্চারিত হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তরুণ প্রজন্মকে ধূমপান ও তামাক থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। মূলত তরুণ এবং শিশুদের টার্গেট করে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস উৎপাদন ও বাজারজাত করছে তামাক কোম্পানিগুলো। যেখানে রয়েছে উদ্ভাবনী কৌশল, সুগন্ধি ব্যবহার ও আকর্ষণীয় ডিজাইন। এতে কিশোর এবং তরুণদের মধ্যে বিশেষত বিদ্যালয়গামী শিশুদের মধ্যে এসব তামাকপণ্যের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বাড়ছে- যা তরুণ প্রজন্মের জন্য উদ্বেকজনক।

প্রকাশ্যে ধূমপান করলে ৩০০ টাকা জরিমানা। তা সত্ত্বেও মানুষ প্রকাশ্যে ধূমপান করছে। বাসের চালক হেলপারও প্রকাশ্যে ধূমপান করছে। যেন দেখার কেউ নেই। প্রতিবাদ করলেও কোনো ফল হয় না। হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন পাবলিক পেস্নস ও পাবলিক পরিবহণে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা (ডিএসএ) থাকলেও অধূমপায়ীদের পাশাপাশি সেবাকর্মীরাও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন।

মনে রাখতে হবে, তামাক সেবনের ক্ষেত্রে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বাংলাদেশে। এমন পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা করেছেন। আমরা মনে করি, আমাদের সামনে এটি একটি বড় মাইলস্টোন। এই লক্ষ্য অর্জন করতে গেলে ধাপে ধাপে আমাদের কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশকে অবশ্যই তামাকমুক্ত করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে