শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

সোনা চোরাচালান

রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিন
  ২৫ মে ২০২৪, ০০:০০
সোনা চোরাচালান

দেশে কোনোভাবেই সোনা চোরাচালান রোধ করা যাচ্ছে না। কিছুদিন পরপরই ধরা পড়ছে সোনার বার। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুবাই থেকে আসা ফ্লাই দুবাই এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট থেকে ৫ কোটি টাকার স্বর্ণসহ দু'জনকে আটক করা হয়েছে। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, যুগ্ম পরিচালকের নির্দেশনায়, শিফট ইনচার্জের নেতৃত্বে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেল এয়ারপোর্ট সি-শিফটের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাৎক্ষণিকভাবে সতর্কতামূলক অবস্থান গ্রহণ করেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে বিমানটি ৭নং বোর্ডিং ব্রিজে সংযুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফ্লাইটের ১৪এ এবং ১৩এফ সিটের যাত্রী লু জিহংলিয়েং এবং ছেন জেং-এর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। তলস্নাশি করে তাদের ব্যাগে তিনটি চার্জার লাইট জব্দ করা হয়। চার্জার লাইট গ্রিন চ্যানেলের ইনভেন্ট্রি টেবিলে বিভিন্ন সংস্থার উপস্থিতিতে খোলা হয়। চার্জার লাইটের ভেতরে থাকা ব্যাটারির মধ্য থেকে ৪৬ পিস স্বর্ণবার উদ্ধার করা হয়।

দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যেন সোনার খনি। সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সোনার ছোটবড় চালান আসছে, ফাঁক গলে বের হয়ে যাচ্ছে, মাঝে মাঝে দুই-একটি চালান ধরাও পড়ছে। শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশে সোনার চাহিদা বছরে ১৬ থেকে ২৬ টন। কিন্তু এর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি সোনা অবৈধপথে দেশে আসছে। পাঁচটি সোনার চালান এলে ধরা পড়ে মাত্র একটি।

আমাদের স্মরণে রাখা দরকার, এ ক্ষেত্রে কাজ করছে বড় ধরনের দেশি ও বিদেশি সিন্ডিকেট। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক চক্র বাংলাদেশকে সোনা চোরাচালানের বড় ধরনের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। এর আগে এমন খবরও সামনে এসেছে, যাদের চোরাচালান রোধ করার দায়িত্ব, তাদের মধ্যেও কেউ কেউ অবলীলায় জড়িয়ে পড়ছে সোনা চোরাচালান চক্রের সঙ্গে। চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকটি চক্রের সন্ধান পেয়েছিল গোয়েন্দারা।

বলা দরকার, বাংলাদেশ যে সোনা চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করতে চোরাচালানকারিরা তৎপর, তা বিভিন্ন সময়ের ঘটনা থেকেই স্পষ্ট হয়। এর আগেও হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দরে বিভিন্ন সময় সোনা উদ্ধার করা হয়েছে। প্যান্টের ভেতর, কম্বলের ভেতর কিংবা বিমানের টয়লেটে, এমনকি যাত্রীর জুতায়, মানিব্যাগে, লাগেজে, হ্যাঙ্গার গেটে সর্বত্রই পাওয়া গেছে সোনার বার বিভিন্ন সময়। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে তলস্নাশি চালিয়েও উদ্ধার করছে সোনার বার। দেশের সীমান্ত এলাকায়ও ধরা পড়ছে সোনার চোরাচালান। আমরা মনে করি, এ ধরনের ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর হতে হবে। কেননা, এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে তা দেশের জন্য বিপজ্জনক। এটা দেশের ভাবমূর্তিরও প্রশ্ন।

এবারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। যারা সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত, তারা রাতারাতি ধনী হতে চায় এবং তারা দেশ ও জাতির শত্রম্ন, মানুষের শত্রম্ন। কেননা, এর ফলে দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা খুবই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি এবং এই পরিস্থিতির অবসান হওয়া জরুরি। সরকারের পরিকল্পিত ও কার্যকর কঠোর উদ্যোগই কেবল পারে সোনা চোরাচালান রোধ করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে