শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

৫০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে চার গুণ

চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে
  ২৩ মে ২০২৪, ০০:০০
৫০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে চার গুণ

গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে চালের উৎপাদন চার গুণেরও বেশি বেড়েছে। এর ফলে দেশে এখন চালের ঘাটতি নেই। অভ্যন্তরীণ উৎপাদন দিয়েই চাহিদা মেটানো যাচ্ছে। মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার বালিতে চলমান ১০ম ওয়ার্ল্ড ওয়াটার ফোরামের 'গ্রহ ও মানুষের জন্য ধান' শীর্ষক মিনিস্টিরিয়াল সেশনে কৃষিমন্ত্রী এ কথা বলেন। কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকার কৃষিতে ভর্তুকির পরিমাণ বৃদ্ধি, গবেষণা খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি, গবেষণা অবকাঠামোর উন্নয়ন, গবেষণার সুযোগ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা করেছে। এসব বহুমুখী উদ্যোগ বিশ্বে বাংলাদেশকে কৃষিপণ্য উৎপাদনের রোল মডেলে পরিণত করেছে। বিশেষ করে চালে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে ও স্বয়ংসম্পূর্ণতা বজায় রাখতে দারুণভাবে সাহায্য করেছে। এই অর্জন না হলে আমাদের লাখ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটে পড়ত, খাদ্য শরণার্থী হয়ে যেত এবং বিশ্বব্যাপী সংকট তৈরি হতো।

তবে বাজারে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। কেজিতে বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা। এ অবস্থা চলছে বেশ ক'দিন ধরে। অন্য এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাল উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার চাল আমদানি করতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় সরকারি চালের মজুত ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। ফলে এখন সরকারি গুদামে চাল-গম মিলিয়ে মজুতের পরিমাণ গিয়ে ঠেকেছে ১২ লাখ ২২ হাজার টনে। কিন্তু এর বিপরীতে গেল বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে এর পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ২৫ হাজার টন এবং এর আগের বছর ২০২২ সালে ছিল ১৪ লাখ ২২ হাজার টন। অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের সরবরাহ বৃদ্ধি ও মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বিভিন্ন সময় শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি পর্যায়ে অশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি। অথচ গত চার বছর ধরে অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দর ঊর্ধ্বমুখী। আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম কমলেও দেশের বাজারে এর কোনো প্রতিফলন দেখা যায় না।

আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, ভাত-প্রধান বাঙালি যদি তাদের চাহিদামতো চাল কিনতে না পারে, কিংবা বিদেশ থেকে চাল আমদানি করতে হয়- তবে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। এরই মধ্যে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। বিশেষ করে মোটা চালের দামবৃদ্ধি কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ দেশের স্বল্প আয়ের মানুষ মোটা চালনির্ভর। মনে রাখতে হবে, চালের দাম বেড়ে গেলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। সুতরাং যে করেই হোক, চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

আসলে পণ্যের সরবরাহ বা সংকটের সঙ্গে দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা হচ্ছে অসৎ ব্যবসায়ীদের হীন মানসিকতা। অতীতেও আমরা লক্ষ্য করেছি, তারা একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের পকেট কেটেছে। আর চালের দাম তো নানা অজুহাতে কয়েক দফা বাড়ল। এটা তাদের ব্যবসায়িক অসুস্থ সংস্কৃতি। এটা হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। তারা জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেন না। তারা বাজার সন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায়ে দ্রম্নত ধনী হবে- এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাদের কাছে দেশের জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা মনে করি, চাল উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে, কমাতে হবে আমদানি-নির্ভরতা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে