ফের তাপপ্রবাহ

প্রয়োজনীয় উদ্যোগ জরুরি

প্রকাশ | ১৯ মে ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আবারও তীব্র তাপপ্রবাহে নাজেহাল দেশের মানুষ। সঙ্গত কারণেই তাপপ্রবাহ সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নেওয়া এবং সেই মোতাবেক উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। তথ্য মতে, সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই তাপপ্রবাহ বুধবার ৪২ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ আকারে বয়ে গেছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা আরও বেড়ে দেশের সব জেলায় বিস্তৃত হয়েছে বলেও জানা যায়। এদিন বিভিন্ন জেলায় মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ আকারে বয়ে গেছে। এছাড়া তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৫ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর সামনে আসে। অন্যদিকে রাজধানীর সড়কে অসুস্থ হয়ে আনসারের এক পস্নাটুন কমান্ডারের মৃতু্য হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, তিনি হিটস্ট্রোকে মারা গেছেন। আমরা মনে করি, সামগ্রিকভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতি এড়ানোর সুযোগ নেই। করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে তার যথাযথ বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে পাবনার ঈশ্বরদীতে। আর ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৮ ডিগ্রি। লক্ষণীয়, আবহাওয়াবিদদের মতে, সাধারণত তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। আর ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির ওপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। আমরা বলতে চাই, তাপপ্রবাহের বিষয়টি আমলে নিতে হবে, একইসঙ্গে সচেতনতা বাড়ানোসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগও অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই। এটা বিবেচনায় নেওয়া দরকার, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও মানুষ। জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, টাইফয়েড, হিটস্ট্রোকসহ গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এতে হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর ভিড়। হিটস্ট্রোকে ঘটছে মৃতু্যর ঘটনাও। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি যেমন এড়ানো যাবে না, তেমনিভাবে এটাও উলেস্নখ্য যে, তীব্র গরমে ভোগান্তিতে পড়ে শ্রমজীবী মানুষ। তবুও জীবিকার তাগিদে প্রতিদিনই কাঠফাটা রোদের মধ্যেই তাদের বের হতে হয় কাজের সন্ধানে। অন্যদিকে, তাপপ্রবাহ বাড়লে জনস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ওপর প্রভাব হঠাৎই পড়ে। ফলে এই বিষয়টিও আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। একদিকে তাপপ্রবাহে অসুখ-বিসুখ; অন্যদিকে সামগ্রিকভাবে মানুষের ভোগান্তি চরমে ওঠে। সঙ্গত কারণেই সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে তা মোকাবিলায় সতর্কতা, সচেতনতাসহ কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখা জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। মনে রাখা দরকার, এর আগে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ শুরু হয়। তীব্র গরমের কারণে স্কুল-কলেজে ৭ দিনের ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রচন্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যে মেহেরপুর, সিলেট ও নরসিংদীসহ কয়েক জেলায় হিটস্ট্রোকে বেশ কয়েকজনের মৃতু্যর খবরও আসে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া তাপপ্রবাহ বাড়তে থাকলে ক্রমশ হাসপাতালগুলোয় শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়। ফলে এই বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, আবারও তীব্র তাপপ্রবাহে নাজেহাল দেশের মানুষ- এমনটি যখন জানা যাচ্ছে, তখন সামগ্রিক পরিস্থিতি এড়ানোর সুযোগ নেই। এটি আমলে নিয়ে সচেতন ও সতর্ক থাকার পাশাপাশি শিশুদের প্রতি যত্ন ও সতর্কতাও জরুরি। সামগ্রিকভাবে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, নানা ধরনের দুর্ভোগ ও সংকট তৈরি হচ্ছে, তা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।