রোববার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১

উদ্বাস্তু মানুষের সংখ্যা বাড়ছে কার্যকর উদ্যোগ জরুরি

  ১৮ মে ২০২৪, ০০:০০
উদ্বাস্তু মানুষের সংখ্যা বাড়ছে কার্যকর উদ্যোগ জরুরি

যতই দিন যাচ্ছে; সারা বিশ্বে উদ্বাস্তু মানুষের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। বিশ্বে ২০২৩ সাল শেষে রেকর্ড ৭ কোটি ৫৯ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে উদ্বাস্তু হয়েছেন। সুদান ও ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান সংঘাতের জেরে এ সংখ্যা আরও বেড়েছে। বেসরকারি সংগঠন ইন্টারনাল ডিসপেস্নসড মনিটরিং সেন্টার (আইডিএমসি) এ তথ্য জানিয়েছে। সংগঠনটি বলছে, গত পাঁচ বছরে নিজ দেশের সীমানার ভেতর উদ্বাস্তুর সংখ্যা ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ২০২২ সাল শেষে এ সংখ্যা ছিল ৭ কোটি ১১ লাখ। সংঘাতসহ নানা কারণে যারা উদ্বাস্তু হয়ে নিজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে অন্য দেশে চলে যেতে বাধ্য হন, তাদের শরণার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর যারা নিজ দেশের সীমানার ভেতরই এক জায়গা থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত হন, তাদের অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু বলা হয়।

বার্ষিক প্রতিবেদনে আইডিএমসি বলছে, সংঘাত ও সহিংসতায় বিশ্বের প্রায় ৬ কোটি ৮৩ লাখ মানুষকে অভ্যন্তরীণভাবে উদ্বাস্তু হতে হয়েছে। আর দুর্যোগের কারণে হয়েছেন আরও প্রায় ৭৭ লাখ। সংঘাত ও এর ফলে মানুষ যে ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি হয়, তা থেকে বেরিয়ে এসে নতুন করে জীবন সাজাতে লাখো মানুষের বছরের পর বছর সময় লেগে যায়।

এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাস্তুচু্যত মানুষের সংখ্যা যদি বাড়তে থাকে তবে তা উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে রেকর্ডসংখ্যক মানুষ বাস্তুচু্যত হচ্ছেন। আগামী দিনগুলোতে এ সংখ্যা তিনগুণ হতে পারে বলছেন জাতিসংঘের ইউএনএইচসিআর। তথ্য মতে, ইতোমধ্যে আমাদের দেশে ৬০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচু্যত হয়েছেন। ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতি ৭ জনে একজন জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাস্তুচু্যত হবেন। আর এ হিসাবে ২০৫০ সালে দেশে বাস্তুচু্যত মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে এক কোটি ৩০ লাখ। অন্য এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বে ১৩ কোটি মানুষ আশ্রয় হারানোর ঝুঁকিতে আছেন। এক্ষেত্রে মনে রাখা জরুরি যে, এর আগে কখনো বিশ্বে এক বছরে এত সংখ্যক মানুষ আশ্রয়হীন হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে বিশ্ব নেতৃত্ব ও সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হতে হবে। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্প, সুদানের সামরিক বাহিনী ও আধাসামরিক আইএসএফের সংঘাত, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় মোচা, গাজায় হামাস-ইসরাইল যুদ্ধসহ বিভিন্ন ঘটনায় মানুষ বেশি বাস্তুচু্যত হয়েছেন।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বৈরী আবহাওয়ার পাশাপাশি সংঘাত ও মানবাধিকার লঙ্ঘন কোটি কোটি পরিবারকে বাস্তুচু্যত করার পাশাপাশি ত্রাণ ও মানবিক সহায়তার জন্য হাত পাততে বাধ্য করেছে। আরও আশঙ্কার বিষয় হলো, চলতি বছর এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধির ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। আমরা বলতে চাই, সার্বিক পরিস্থিতি যেমন বিশ্ব নেতা ও সংশ্লিষ্টদের আমলে নিতে হবে, তেমনি দেশের সংশ্লিষ্টদেরও বাস্তুচু্যত সংক্রান্ত পরিস্থিতি আমলে নিয়ে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে