রোববার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১

নির্বাচনী সহিংসতা কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

  ১৭ মে ২০২৪, ০০:০০
নির্বাচনী সহিংসতা কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে এবং যথাযথ নিয়মনীতি মেনে প্রচার-প্রচারণা চালানো হবে, এমনটি প্রত্যাশিত হলেও, নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতার ঘটনা বিভিন্ন সময়েই ঘটে- যা অত্যন্ত উৎকণ্ঠাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের ৪ জেলায় হামলা, সংঘর্ষ, নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় একজন নিহত এবং ২৫ আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন।

জানা যায়, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকরা পরাজিত প্রার্থীর এক সমর্থককে মারধরের জের ধরে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরা সংঘবদ্ধ হয়ে বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থক এবং তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। পরবর্তী সময়ে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ৬ জন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, ঝালকাঠিতে উঠান বৈঠক চলাকালে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়েছেন ২০ জন। এছাড়া রাজশাহীর দুর্গাপুর ও ঢাকার ধামরাইয়ে নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এসব সহিংসতার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে বলেও জানা গেছে। অন্যদিকে, গোপালগঞ্জে মহাসড়ক অবরোধ করে শোকর্ যালি করেছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিজিবি মোতায়েন করার বিষয়টিও জানা যাচ্ছে।

আমরা মনে করি, সামগ্রিকভাবে যে সহিংসতার ঘটনার তথ্য আসছে তা সংশ্লিষ্টদের আমলে নিতে হবে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমরা বলতে চাই, প্রতিটি নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হোক- এটাই সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা। আর এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের আমলে নেওয়া দরকার, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান করতে পারলে তাতে যেমন গণতন্ত্রের সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। আর তা নিশ্চিত করাও অপরিহার্য। অন্যদিকে, নির্বাচনের আগে কিংবা পরে সহিংসতার ঘটনাও ব্যাপক নেতিবাচক ও উদ্বেগজনক বলেই প্রতীয়মান হয়। সঙ্গত কারণেই নির্বাচনকেন্দ্রিক যে কোনো ধরনের সহিংসতা রোধে কঠোর হতে হবে।

দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, আমাদের দেশের নির্বাচনগুলো শতভাগ সহিংসতামুক্ত হতে পারছে না। ফলে নির্বাচনী সহিংসতা রোধে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে, রাজনৈতিক সংস্কৃতি উন্নত করতে হবে। প্রয়োজনে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংস পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কঠোর হওয়াও জরুরি। বলার অপেক্ষা রাখে না, নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে নির্বাচনী উৎসবে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যা কাম্য হতে পারে না। নির্বাচনকেন্দ্রিক সংঘাত-সহিংসতা অব্যাহত থাকলে ভোটারদের উপস্থিতি উদ্বেগজনক হারে কমে যাওয়া এবং ভোটারদের উপস্থিতি কম হলে ভোট ডাকাতি ও জাল ভোটের সংখ্যা ভয়াবহভাবে বাড়বে এমন আশঙ্কাও এর আগে উঠে এসেছে। এছাড়া জয়ী এবং পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও নতুন নয়। সঙ্গত কারণেই, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সহিংসতা-সংঘাতের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে যেমন উদ্যোগী হতে হবে, তেমনি নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিশ্চিত করার পাশাপাশি নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা রোধে সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছিল, আর সম্প্রতি যখন ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের ৪ জেলায় হামলা, সংঘর্ষ, নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় একজন নিহত এবং ২৫ আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তখন সার্বিক পরিস্থিতি এড়ানো যাবে না। এছাড়া মনে রাখা দরকার, এর আগেও নানা সময়ে নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন মানুষ- যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও ভীতিকর বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। আমরা মনে করি, নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংস পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর হতে হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা তৎপর থাকবেন এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে