রোববার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১

উদ্বেগ বাড়ছে অর্থনীতিতে

সঠিক পদক্ষেপ নিন
  ১৬ মে ২০২৪, ০০:০০
উদ্বেগ বাড়ছে অর্থনীতিতে

উদ্বেগ বাড়ছে দেশের অর্থনীতিতে। বিশেষ করে বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় চার ধরনের উদ্বেগ রয়েছে। এগুলো হলো ১. চলতি হিসাবে বড় ঘাটতি, ২. রিজার্ভ কমে যাওয়া ও টাকার অবমূল্যায়ন, ৩. দীর্ঘমেয়াদে উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং ৪. রাজস্ব আহরণ কম হওয়া। সরকারের গৃহীত কিছু ভুলনীতি ও সঠিক পদক্ষেপের অভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাই অর্থনীতিতে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) আয়োজিত 'সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতাও এর চ্যালেঞ্জ' বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সাদিক আহমেদ। তিনি বলেন, খলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে দুর্বল ও সমস্যাযুক্ত ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রদান বন্ধ করা দেওয়া উচিত। এটা সত্য, গত কয়েক বছর ধরে সামষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য অংশীজন ও নীতিনির্ধারকদের গুরুত্বসহকারে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ১৬টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বিতরণ করা মোট ঋণের ১০ শতাংশের ওপরে ছিল। এর মধ্যে ৯টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ছিল ২০ শতাংশের বেশি। এই সমস্যাযুক্ত ব্যাংকগুলোর বেশিরভাগই ব্যাংকিং পরিচালনা রীতি (ব্যাসেল ৩ নিয়মের আওতায় মূলধন পর্যাপ্ততার শর্ত) পূরণ করেনি। বাংলাদেশে যে দীর্ঘমেয়াদি অগ্রগতি হচ্ছিল, তা গত চার বছরে একাধিক বাহ্যিক ধাক্কায় হুমকির মুখে পড়েছে। অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, তবে এর ফলাফল এখন পর্যন্ত আশানুরূপ নয়। বর্তমানে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট ও জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিম্নমুখী রয়েছে। বিনিয়োগ ও রপ্তানি বৃদ্ধির হারও কম। বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে আমদানি ব্যয় বাড়ায় বড় ধরনের বাণিজ্য ও চলতি হিসাবের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সরকার আমদানি কমিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করেনি। ফলে, উলেস্নখযোগ্য পরিমাণে রিজার্ভ কমেছে। মাত্র ১১ মাসে ৪৪ শতাংশ বা ২১ বিলিয়নের বেশি রিজার্ভ কমেছে। এটা বড় ধরনের চাপ। বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় দ্বিতীয় উদ্বেগ হচ্ছে রিজার্ভ কমে যাওয়া ও টাকার অবমূল্যায়ন। আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও শুল্ক বৃদ্ধির পরও সরকার রিজার্ভের ঘাটতি রোধ করতে পারেনি। সরকার দীর্ঘদিন যাবত বিনিময় হার এক জায়গায় বেঁধে রেখেছিল। এখন টাকার অবমূল্যায়ন করে বিনিময় হার সমন্বয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে, বর্তমান মূল্যস্ফীতির জন্য টাকার অবমূল্যায়নকে নয়, বরং বিনিময় হার ধরে রাখাকে দোষ দিতে হবে।

২০২২ সালের জানুয়ারিতে দেশে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৯ শতাংশ- যা ২০২৩ সালের আগস্টে বৃদ্ধি পেয়ে ৯ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছায়। এরপর থেকে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের আশপাশে থাকছে। এছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে কর-জিডিপি হার বাড়ছে না। এসব বিষয়ে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। তবে আশ্চর্যজনকভাবে কোনো উদ্যোগই কাজ করেনি। দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করতে হলে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে