এক দশকে সর্বনিম্ন রিজার্ভ কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ১৫ মে ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আবারও রিজার্ভ কমে আসার বিষয়টি জানা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বলা দরকার, এর আগেও এটা আলোচনায় এসেছিল যে, ধারাবাহিকভাবে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ফলে এখন যখন রিজার্ভ কমার বিষয়টি সামনে এলো তখন তা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগজনক। যা আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখা। তথ্য মতে, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১৬৩ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নেমেছে ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। এতে দেখা যাচ্ছে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। উলেস্নখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯৮২ কোটি ৬৭ লাখ মার্কিন ডলার (বিপিএম-৬) বা ১৯ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। আর আকুর ১৬৩ কোটি ডলার দায় পরিশোধের পর রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়াল ১ হাজার ৮১৯ বিলিয়ন ডলার (বিপিএম-৬) বা ১৮ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার। জানা যায়, সোমবার পর্যন্ত সময়ে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলারে। এক্ষেত্রে আমলে নেওয়া দরকার, ২০১৪ সালের শুরুর দিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়ানোর পর আর কখনো নিচে নামেনি। আমরা মনে করি, রিজার্ভ সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। একইসঙ্গে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। এছাড়া বলা দরকার, এর আগে যেমন রিজার্ভ কমার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে, তেমনি অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে বাড়ছে উদ্বেগ- এমন বিষয়ও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছিল। ফলে, রিজার্ভ কমার বিষয়টিকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১৬৩ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নেমেছে ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। এক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, আকু একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে প্রতি দুই মাস অন্তর বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। একসঙ্গে দায় পরিশোধ এটিই বড়। সোমবার মার্চ-এপ্রিলের আমদানি বিল বাবদ ১৬৩ কোটি ডলার বিল পরিশোধ করা হয়। আমরা মনে করি, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। এছাড়া এটাও আমলে নেওয়া দরকার, একদিকে যেমন করোনা পরবর্তী সময়ে ঋণ বেড়ে যায়, তেমনি দেশের মধ্যে তীব্র ডলার সংকটে খোলাবাজার পরিস্থিতি ছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে সংকট আরও জটিল হয়। বাধাগ্রস্ত হয় এলসি খোলা। বাজার পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশেষ করে জরুরি পণ্য আমদানিতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রিও করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ কারণে প্রতি মাসে বাজারে ডলার চলে যাওয়ায় কমছে রিজার্ভের পরিমাণ এটাও এর আগে সামনে এসেছিল। এছাড়া জানা গিয়েছিল, রিজার্ভ ধরে রাখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিলেও ঘাটতি কমছে না। অন্যদিকে, রিজার্ভ কমে যাওয়াটা অর্থনীতির জন্য ভালো খবর না এটাও বারবার আলোচনায় এসেছে। ফলে এখন যখন দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। তখন এটি আমলে নিয়ে, সর্বাত্মক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। প্রসঙ্গত, আইএমএফ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। দুই কিস্তি ইতোমধ্যে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। দ্বিতীয় কিস্তি পরিশোধের আগে আইএমএফের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর শেষ করেছে। এ সময়ে রিজার্ভের পরিমাণ ১৮ বিলিয়নে ঠেকল। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে- এই বিষয়টিকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। রিজার্ভ সংক্রান্ত পরিস্থিতি আমলে নেওয়া এবং অর্থনীতিবিদরা যে বিষয়গুলো বলছেন সেগুলোকে বিবেচনায় রেখে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। রিজার্ভ সংক্রান্ত যে বিষয় সামনে আসছে তা বিবেচনায় নেওয়ার পাশাপাশি করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে পদক্ষেপে গ্রহণ ও এর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।