পাঠক মত

শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবহণ ব্যবস্থা চাই

প্রকাশ | ১৫ মে ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের প্রথম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। কুষ্টিয়া জেলা শহর থেকে ২৪ কিলোমিটার এবং ঝিনাইদহ জেলা শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে দুই জেলার সীমান্তে অবস্থিত সবুজে ঘেরা এই ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীদের জন্য পূর্ণ আবাসিকতা না থাকায় শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ কুষ্টিয়া এবং ঝিনাইদহ শহরে থাকেন। যে কারণে এটি এক প্রকার পরিবহণনির্ভর ক্যাম্পাস। প্রতিদিন দুই শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব এবং ভাড়া করা বাসে যাতায়াত করে ৫-৬ হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী। শিক্ষকদের জন্য আলাদা এসি বাস রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বেশকিছু বড় বাস এবং দ্বিতল বাস রয়েছে। সবগুলো দ্বিতল বাস শিক্ষার্থীদের জন্য দেওয়া হলেও অধিকাংশ বড় বাস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে অল্প কয়েকটি বাস। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ফিটনেসবিহীন ভাড়া গাড়িতে যাতায়াত করে। এমনকি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেওয়া বাসগুলোতে সিট ফাঁকা থাকলেও শিক্ষার্থীদের সবসময় উঠতে দেওয়া হয় না, কখনো বা কটু কথাও শুনতে হয়। আবার প্রায় সময়ই শিক্ষার্থীদের দেওয়া বাসগুলোতে স্থানীয় লোকজন যাতায়াত করে। যার কারণে শিক্ষার্থীদের শিট ছাড়াই যাতায়াত করতে হয়। এমনকি ভাড়া করা বাসগুলো বিভিন্ন স্টপেজে থামিয়ে ভাড়ার বিনিময়ে যাত্রী ওঠানো হয়। আবার অনেক সময় শিক্ষার্থীরা বাসের ড্রাইভার ও কর্মকর্তাদের দ্বারা নিগৃহীত হয়। তাই শতভাগ শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবহণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। আবুল বাশার শিক্ষার্থী, আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ট্রেন ভ্রমণে চাই সময়ের সঠিক ব্যবহার ব্রিটিশ ভারতে স্থলপথে যোগাযোগের সবচেয়ে সময় সাশ্রয়ী মাধ্যম ছিল রেল। ব্রিটিশরা তাদের নানা প্রয়োজনে সব ভারতবর্ষে রেলপথ নির্মাণ করে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করেছিল। কালক্রমে ভারতবর্ষ ভেঙে ভারত, পাকিস্তান ও পরে বাংলাদেশ- এই তিনটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। তখনও রেলই ছিল স্থলপথে যোগাযোগের সবচেয়ে বড় মাধ্যম। হাল আমলে সড়ক পথের উন্নয়ন হয়ে রেলের ওপর কিছুটা চাপ কমেছে। তবুও যোগাযোগের সুষ্ঠু ও অধিকতর নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে রেল এখনো সমান জনপ্রিয়। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আজকাল ট্রেন ভ্রমণে এত বিড়ম্বনা যে, প্রতিটি ট্রেন তার ঠিক সময়ের চেয়ে নিম্ন্নে তিন থেকে চার ঘণ্টা লেট করে আসে। অথচ এই ট্রেনে যাতায়াত করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী। যাদের সময়ের মূল্য অনেক বেশি। এখানে থাকে চাকরিজীবীসহ নানা পেশার মানুষ। ট্রেনে ভ্রমণ করে অসুস্থ রোগীসহ গর্ভবতী মায়েরা। ট্রেন লেট করে আসার কারণে অনেক সময় যাত্রীরা ঘুমিয়ে পড়ে। ফলে ট্রেন মিস করার ঘটনাও শুনা যায়। সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েন নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। অসুস্থ ব্যক্তি ও সন্তানসম্ভাবা নারীদের জন্য ট্রেন যাত্রা যেন 'পৃথিবীর ফুলসিরাত'। বেশকিছু স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনযাত্রা করতে হয়। তাই সঠিক সময়ে ট্রেনযাত্রা সব সমস্যার সমাধান করতে পারে। সবকিছুর উন্নতি হয় কিন্তু ট্রেন বিড়ম্বনা থেকেই যায়। তাই অবহেলিত হাজারো মানুষের সীমাহীন এই কষ্ট লাঘবে সঠিক সময়ে ট্রেন চলাচলের জন্য সংশ্লিষ্ট রেল কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি। মো. নুরুন্নবী আকন্দ আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া। আমরা মানুষ হবো কবে? শিশুদের জন্য পিতা-মাতা পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল। তারপর ধারাবাহিকভাবে পরিবারের অন্যরা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রতিবেশী, পরিচিতজন নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে পরিগণিত হয়। কিন্তু এই নিরাপদ আশ্রয়স্থলগুলোই যখন অনলাইন ও আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তখন পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্র প্রশ্নবিদ্ধ হয়। সামাজিক জীব হওয়ার দরুন আমাদের অবশ্যই এই বাস্তুতন্ত্রের অব্যাহত নিরাপদ চলন নিশ্চিত করতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে শিশুদের। কারণ 'আজকের শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ' কথাটি কে না জানে! কিন্তু আমরা কি আসলেই শিশুদের নিরাপত্তা এবং নিরাপদ আশ্রয়স্থল নিশ্চিত করতে পেরেছি? ২৮/৪/১৯ এ ইইঈ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের হেডলাইন ছিল 'বাংলাদেশ শিশু পরিস্থিতি : ২০১৮ সালে ২২৭ শিশু নির্যাতন, ধর্ষণের শিকার ৩৫৬।' ২৭/৯/২৩ এ প্রথম আলো কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদন 'শিশু নির্যাতনের সংবাদে আমরা কি অভ্যস্ত হয়ে উঠছি? এ বলা হয়েছে- জুলাই/২৩ পর্যন্ত এদেশে ২৯২ জন শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৭ জনকে অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে।' ৭/২/২৪ এ প্রথম আলোর আর একটু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে 'শিশু নির্যাতনের ঘটনার ৭৬ শতাংশই যৌন নিপীড়নের।' ইইঈ-র প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে- 'এসব শিশু নির্যাতিত হয়েছে প্রতিবেশী, বন্ধু, আত্মীয়স্বজন, উত্ত্যক্তকারী, মাদকসেবী বা পরিচিত ব্যক্তির দ্বারা।' আর চলতি বছরের চেয়ে মর্মান্তিক নির্যাতনের ঘটনা হচ্ছে 'কুমিলস্নায় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ঝুমুরকে (৯) ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার ঘটনা।' এতসব বেদনাদায়ক ঘটনার পরও কি আপনি আপনার সন্তানকে পথে একা ছেড়ে দেবেন?-দিয়েন না। সন্তানের খোঁজ রাখুন, তার সঙ্গে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে কিনা কি খবর রাখুন, স্কুলে যাওয়া-আসার সময় নিজে সঙ্গী হোন। কারণ সন্তান হারালে আপনিই সন্তানহারা হবেন। মনে রাখবেন, আজকের শিশু বাঁচলেই বাঁচবে সমাজ, বাঁচবে রাষ্ট্র, গড়বে বিশ্ব। সবশেষে, এতসব মর্মান্তিক-লোমহর্ষক ঘটনা দেখে, শুনে, সাক্ষী হয়ে মনে একটা প্রশ্ন উঁকি দেয় 'আমরা কি আদৌ মানুষ হতে পেরেছি? না পারলে মানুষ হবো কবে!' মো. আবু হামজা শিক্ষার্থী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া