শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১

৫১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেনি কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

  ১৪ মে ২০২৪, ০০:০০
৫১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেনি কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

দেশের শিক্ষা পরিস্থিতি সুখকর নয়। ভালো সংবাদের মধ্যে খারাপ সংবাদও রয়েছে, উঠে এসেছে পাস না করার চিত্র। ২০২৪ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল রোববার প্রকাশ করা হয়েছে। এসএসসি-সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক শূন্য ৪। এবারে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ৯৮ হাজার ৭৭৬ জন। ছাত্র ৮৩ হাজার ৩৫৩ জন। এবারও ছাত্রীরা এগিয়ে। দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, এই পাসের হারের মধ্য ৫১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে একজন শিক্ষার্থীও পাস করতে পারেনি। ২০২৩ সালে বছর এমন প্রতিষ্ঠান ছিল ৪৮টি। এর আগে ২০২২ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়ও ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। অন্যদিকে, গত ২০২১ শিক্ষাবর্ষে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়ও ১৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করতে পারেনি। বিগত চার বছরের চিত্র সুখকর নয়। কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করবে না এবং ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা যদি ৫১টি হয়, তা নিঃসন্দেহে হতাশাজনক। এই পরিস্থিতির বদল ঘটাতে হবে।

এটা অস্বীকার করার উপায় নেই, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার ভিত ও মান শক্ত না করেই একের পর এক উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি হচ্ছে- যা সনদ বিতরণ করলেও দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। আর এ কারণে বাংলাদেশে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর বেকার থাকা সত্ত্বেও অনেক খাতে উচ্চ বেতন দিয়ে বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তাদের যুক্তি, দেশে দক্ষ জনশক্তির অভাব রয়েছে। এর অর্থ দাঁড়ায় আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা সময়ের চাহিদা মেটাতে পারছে না। ফলে এ অবস্থার অবসানের দিকেই সংশ্লিষ্টদের জোর দিতে হবে।

দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ ও শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাসহ সংশ্লিষ্টরা এর আগে বলেছেন, প্রধানত শিক্ষার নিম্নমানই এর জন্য দায়ী। তারা বলছেন, উচ্চশিক্ষার মান তলানিতে পৌঁছেছে। মানহীনতার পাশাপাশি প্রশিক্ষণের অভাব, দক্ষ জনবলের ঘাটতি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চাহিদা অনুযায়ী উপযুক্ত শিক্ষা দিতে না পারা ও শিক্ষায় কম বিনিয়োগ ইত্যাদি এর কারণ হিসেবে আলোচিত হচ্ছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বেকারত্ব কমাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশের চিত্র অনেকটাই বিপরীত। এ দেশে শিক্ষিতের বেকার হওয়ার আশঙ্কা অশিক্ষিতদের তুলনায় বেশি। এর মধ্যে যদি দেশের ৫১ প্রতিষ্ঠানে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কেউ পাস না করে বিষয়টি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বরাবরই বলা হয়ে থাকে, ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি নেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে ফেল করার চিত্র বদলাচ্ছে না কেন? এটা খুবই লজ্জাজনক অবস্থা। আমরা মনে করি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে