বেসরকারি শিক্ষকদের দুঃখ আর কতদিন?

সব ধরনের বৈষম্যের একমাত্র সমাধান অনার্স ও মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিও প্রদান। এর মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সব কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকার ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে আসতে হবে।

প্রকাশ | ১৩ মে ২০২৪, ০০:০০

মো. শাহাদাত হোসেন
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় উচ্চশিক্ষা প্রদানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। অধিভুক্ত বেসরকারি ১৩৬১টি কলেজ ও ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষা গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষের দৌড়গড়ায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে। এসব অধিভুক্ত কলেজসমূহে লাখ লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে নিজ নিজ কর্মস্থলে প্রতিভার সাক্ষর রাখছে। এসব প্রতিভাবান শিক্ষার্থীর কর্মকান্ডের কারণে দেশের অর্থনীতি প্রতিনিয়ত গতিশীল হচ্ছে কিন্তু যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম আর ত্যাগের বিনিময়ে এসব শিক্ষার্থী তৈরি হচ্ছে তাদের বেতন, ভবিষ্যৎ ও কর্মপরিবেশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলে আসছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যখন আঞ্চলিক কলেজগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছিল ঠিক তখনই ১৯৯২ সালে সাংবিধানকিভাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় জন্ম লাভ করে। ১৯৯৩ সালে কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে আজোবধি ২২৫৭টি প্রতিষ্ঠান অধিভুক্তির মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে মানসম্পন্ন শিক্ষকের কোনো বিকল্প নেই। বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সফলতা পেলেও এ ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সফলতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। গুটিকয়েক কলেজ ব্যতীত পর্যাপ্তসংখ্যক শিক্ষক কোনো কলেজেই নেই; কিন্তু হাস্যকর বিষয় হচ্ছে কাগজে-কলমে প্রতিটি কলেজ পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক দেখিয়ে থাকে। আর শিক্ষকদের বেতনের কথা বলা বাহুল্য যেখানে তাদের জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় নিম্নতম বেতন প্রদান করা হয় না। আর এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরই উদাসীন ভাব নিয়ে থাকে। শুধু কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহণের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বেতন ও ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা প্রদান করে থাকে- যা কখনো যাচাই-বাছাইযের প্রয়োজন পড়ে না আর করলে সেটা হয় আরেক প্রহসন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অডিট সেকশন বা কলেজ পরিদর্শন বিভাগ থাকলেও তার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য প্রকাশ্যে থাকলেও অডিট কমিটির মাধ্যমে কোনো কলেজের অনার্স-মাস্টার্স কোর্স বাতিল করার কোনো নোটিশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে চোখে পড়েনি। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান চলে স্বল্প বেতনের খন্ডকালীন শিক্ষকের মাধ্যমে আর শিক্ষাবিদদের মতে, খন্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে কখনো কাঙ্ক্ষিত পাঠদান সম্ভব হয় না কারণ খন্ডকালীন শিক্ষক কখনোই শিক্ষকতায় মনোযোগ দিতে পারে না। কেননা, সে হয়তো বিকল্প চাকরির খোঁজ করবে অথবা প্রাইভেট টিউশনি নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হবে- যার ফলে, সে কখনোই ভালো শিক্ষার্থী হতে পারে না আর একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়ার পূর্বশর্ত হলো ভালো শিক্ষার্থী হওয়া। আরেক মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হলো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। এরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সুযোগ ও সুবিধা নিতে চাইলেও অনার্স-মাস্টার্স লেভেলের কোনো শিক্ষককে অনুরূপ সুযোগ ও সুবিধা দিতে চান না। আর সব কমিটিতে তাদের অগ্রগণ্য থাকতেই হবে অন্যথায় তাদের সম্মান মাটিতে লুটিয়ে পড়ার মতো অবস্থা। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে অনার্স-মাস্টার্স লেভেলের নিয়মিত শিক্ষক থেকেও এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা অতিরিক্ত বেতন-ভাতা নিয়ে থাকেন। আর অনার্স-মাস্টার্স লেভেলের নিয়মিত শিক্ষকদের পদোন্নতির প্রশ্ন আসা মাত্রই ফান্ড একমাত্র সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়- যার ফলশ্রম্নতিতে আজীবন প্রভাষক থেকেই অবসরে যেতে হয়। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান অবসর ও কল্যাণ ভাতা প্রদানের অঙ্গীকার করলেও বিদায়কালীন আদৌ তারা প্রতিষ্ঠান থেকে এ ভাতা নিয়ে যেতে পারবেন কিনা তা নিয়ে অনার্স মাস্টার্স শিক্ষকরা অতল গভীর সাগরে ডুবে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে উত্তরপত্র মূল্যায়ন সর্বক্ষেত্রেই অনার্স মাস্টার্স লেভেলের শিক্ষকরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে বিমাতা সুলভ আচরণ পেয়ে থাকে অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি অবহেলিত হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় একমাত্র প্রতিষ্ঠান যে কিনা নিজের নিয়োগকৃত শিক্ষক অপেক্ষা অন্য শিক্ষককে বেশি মর্যাদা দিয়ে থাকে। দীর্ঘ ৩২ বছর যাবত অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা যতবার এমপিও দাবি আদায়ের চেষ্টা করছে ততবারই সরকারের পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিমাতা সুলভ আচরণ প্রকাশ করছে। ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি- মার্কসবাদী লেখক কবি সুকান্তের কথাটি সর্বক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। প্রশ্ন যখন শিক্ষার মান তখন এ কথাটি আরো বেশি প্রযোজ্য। একজন শিক্ষকের আনুষ্ঠানিক দৈনিক ডিউটি ৬ ঘণ্টা হলেও ক্লাসের বাইরে লেকচার প্রস্তুত ও অর্গানাইজ করার জন্য তার চেয়ে ঢের বেশি সময় দিতে হয়। অর্থাৎ একজন ভালো মানের শিক্ষক হতে হলে শিক্ষকদের সর্বদাই একজন ভালো ছাত্র হতে হয়। শিক্ষক স্বল্পতা ও খন্ডকালীন শিক্ষকের কারণে শিক্ষার মান ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলশ্রম্নতিতে জাতি কিছু অনূর্বর গাছের চারা পাচ্ছে- যা থেকে কোনো প্রকার ফল আশা করা যাচ্ছে না। এভাবে একটি দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। মনে রাখতে হবে আমাদের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার থাকা সত্ত্বেও আমরা বিশ্বসেরা হতে পারিনি। তাছাড়া এশিয়ার সেরা ৩০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমাদের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। তাই একটি জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে সবার পারফরমেন্স ভালো হতে হবে। এজন্য সরকারকে শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজের দিকে নজর দিলে চলবে না কেননা, শিক্ষার্থী সংখ্যা বিবেচনা করলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজসমূহকে বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। কেননা, জাতির প্রায় অর্ধেকের নেতৃত্ব দিচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজসমূহ। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের মতে, যে দ্বিচক্রযানের দুই চাকার মধ্যে ভারসাম্য নেই সে যান কখনো কাঙ্ক্ষিত গতিতে এগিয়ে যেতে পারে না। তাই শিক্ষার মান উন্নয়নে সবার আগে সব শিক্ষককে যথাযথ সম্মানের পাশাপাশি সম্মানী প্রদানের মাধ্যমে বৈষম্য দূর করতে হবে। শিক্ষা কখনো বিক্রীত হয় না বা হওয়ার নয় বটে- তবে শিক্ষকের জীবনধারণের নূ্যনতম চাহিদা পূরণের ঘাটতি আর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ প্রতীয়মান হলে সেখানে নীতিকথা আর টিকে না। লোভ-লালসাকে বিসর্জন দিয়েই শিক্ষকতায় আসতে হয়- তাই সবাই শিক্ষকতায় আসতে পারে না। একজন শিক্ষক আগে মানুষ- পরে শিক্ষক। তাই সবার আগে সামাজিক জীব হিসেবে মৌলিক চাহিদা পূরণে এগিয়ে আসতে হয়। এজন্য পেশার বিনিময়ে সে নূ্যনতম আর্থিক প্রাপ্তি কামনা করে। আক্ষেপের বিষয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রায় সব কলেজ ও প্রতিষ্ঠান তাদের শিক্ষকদের নূ্যনতম আর্থিক মজুরি প্রদান করে না আর পিএফ এবং অবসর ও কল্যাণ ভাতার কথা বাদই দিলাম। বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের বেতন ৫০০০ টাকা থেকে শুরু হয়। বিভাগীয় স্বল্প সংখ্যক কলেজ ব্যতীত সচরাচর অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান ও সম্মানী প্রদান করে না। তাই শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য সবার আগে শিক্ষককে আর্থিক ও সামজিক নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে। সব ধরনের বৈষম্যের একমাত্র সমাধান অনার্স ও মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিও প্রদান। এর মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সব কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকার ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে আসতে হবে। বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, সরকার ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যে কেউ চাইলেই এমপিও'র ব্যবস্থা করতে পারে, শুধু প্রয়োজন নীতিগত সিদ্ধান্ত। বেসরকারি কলেজসমূহে ইন্টার, ডিগ্রি শিক্ষকের পাশাপাশি মাত্র ২ থেকে ৩ জন শিক্ষক কর্মরত আছে। বিভিন্ন উৎস থেকে জানা যায়, প্রায় ৫ হাজার শিক্ষক বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদান করছেন। সেক্ষেত্রে বর্তমান বেতন স্কেল হিসেব করলে দেখা যায়, প্রতি মাসে (৫০০০, ২৩,৫০০) বা ১১,৭৫,০০,০০০ টাকা এবং বার্ষিক ১৪১,০০,০০,০০০ টাকা এবং বিভিন্ন সুবিধা প্রদানের কারণে এ খরচ ৩০% বাড়িয়ে ধরলে দ্বাড়ায় ১৮৩,৩০,০০,০০০ টাকা এবং স্কেলের তারতম্যের কারণে আরও বাড়িয়ে ধরলেও মাত্র ২০০শ' কোটি টাকা জোগান হলে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকের এমপিও প্রদান করা সময়ের ব্যাপার। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে শিক্ষা খাতের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ২৮ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা আর শিক্ষা খাতের মোট বরাদ্দের কথা বাদই দিলাম। অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকের এমপিও এর জন্য প্রয়োজন মাত্র ২শ' কোটি টাকা- যা উন্নয়ন বাজেটের ০.৬ শতাংশ অর্থাৎ এক শতাংশের চেয়ে কম। এ থেকে বুঝা যায় অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকের এমপিও'র বাধা শুধু নীতিগত সিদ্ধান্ত। আরো মজার বিষয় হলো অর্থ ব্যবহার করতে না পারায় ২০২২-২০২৩ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রায় ৪৮০০ কোটি অর্থ মন্ত্রণালয়কে ফেরত পাঠায়। এ থেকেও বুঝা যায়, অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকের এমপিও প্রদানে সরকারকে কোনো প্রকার সমন্বয় করা লাগবে না। সমন্বিত আন্দোলন ও সংগ্রামের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দু'টি ডিও লেটার সংগ্রহ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কর্তৃক দু'টি সুপারিশ আদায়, ডিজি মহোদ্বয়ের সুপারিশ প্রাপ্তিসহ হাইকোর্ট বিভাগের চূড়ান্ত রায় পাওয়ার পর অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ২০১৮ সালে এমপিও নীতিমালা সংশোধন কমিটিও অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের জনবল কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করে। সর্বশেষ ২০২৩ সালে বর্তমান ভিসি ও শিক্ষামন্ত্রী আশা দেখালেও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আপত্তি থাকার কারণে ৩২ বছর ধরে শোষিত শিক্ষকের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তার দায়ভার এড়াতে পারে না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রতিবেদন অনুযায়ী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় প্রায় ১,৫৭৬ কোটি টাকা। অথচ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকের এমপিও'র জন্য লাগে মাত্র ২০০শ' কোটি টাকা। অর্থাৎ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিজেও এমপিও প্রদানের ব্যবস্থা করতে পারে- যার জন্য প্রয়োজন সদিচ্ছা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিকল্প ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এর আয় ব্যয় না করেও এমপিও প্রদান করতে পারে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী বেসরকারি কলেজসমূহে প্রায় ২৮ লাখ শিক্ষার্থী আছে। প্রতি শিক্ষার্থীর বেতন থেকে বার্ষিক ৭১৫ টাকা অর্থাৎ মাসে ৬০ টাকার মতো সংগ্রহ করা গেলে এমপিও প্রদান করা সম্ভব। সুতরাং, শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৮ লাখ হলেও সমস্যা নেই। সেক্ষেত্রে ১০০ টাকা সংগ্রহ করতে হবে। অথচ অনার্স পর্যায়ের সব বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ৫০০ টাকার মতো। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের প্রদানকৃত বেতনের একটা অংশ সংগ্রহের মাধ্যমেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও এ সমস্যার সমাধান দিতে পারে। যে জাতি শিক্ষককে সম্মান দিতে পারে সে জাতি কখনো উন্নতি করতে পারে না। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯২৯ সালে তার কবিতায় জন্য লিখেন আমার মনের বেদনা বন্ধু ছাড়া কেউ জানে না এ গানটি। এ গানে সাম্যের কবি জাতির দুঃসময়ে কোনো একজনকে খুঁজে পেয়েছিলেন যে জাতিকে ওই সময়ের বিপদ থেকে মুক্ত করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন আর একবিংশ শতাব্দীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের দুঃখ ঘুচানোর জন্য রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে আমলা পর্যন্ত কাউকে অণুবীক্ষণযন্ত্র দিয়ে সনাক্ত করা যাচ্ছে না। সবাই পাশে থেকে কেউ যেন পাশে নেই কেমন জানি বাচ্চাদের চোর পুলিশ খেলার মতো। মো. শাহাদাত হোসেন : শিক্ষক ও কলাম লেখক