চালের দাম বৃদ্ধি সঠিক পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ১১ মে ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাজারে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। কেজিতে বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা। এ অবস্থা চলছে বেশ ক'দিন ধরে। অন্যদিকে চাল উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার চাল আমদানি করতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় সরকারি চালের মজুত ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। ফলে এখন সরকারি গুদামে চাল-গম মিলিয়ে মজুতের পরিমাণ গিয়ে ঠেকেছে ১২ লাখ ২২ হাজার টনে। কিন্তু এর বিপরীতে গেল বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে এর পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ২৫ হাজার টন এবং এর আগের বছর ২০২২ সালে ছিল ১৪ লাখ ২২ হাজার টন। অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের সরবরাহ বৃদ্ধি ও মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বিভিন্ন সময় শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি পর্যায়ে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি। অথচ গত চার বছর ধরে অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দর ঊর্ধ্বমুখী। আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম কমলেও দেশের বাজারে এর কোনো প্রতিফলন দেখা যায় না। চলতি অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের সরবরাহ বৃদ্ধি ও মূল্য স্থিতিশীল রাখতে গত ৭ ফেব্রম্নয়ারি আমদানি শুল্ক অব্যাহতি দিয়ে শুধু ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক নির্ধারণ করে বেসরকারি খাতে চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ মে পর্যন্ত এই সুবিধা বহাল রাখা হয়েছে। কিন্তু কোনো চাল আমদানি হয়নি। তবে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে বেসরকারি ৮০টি প্রতিষ্ঠানকে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তাবিত মোট চাল আমদানির লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২ লাখ ৭ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে ১ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল এবং ৬৭ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল রয়েছে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, ভাত-প্রধান বাঙালি যদি তাদের চাহিদামতো চাল কিনতে না পারে, কিংবা বিদেশ থেকে চাল আমদানি করতে হয়- তবে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। এরই মধ্যে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। বিশেষ করে মোটা চালের দামবৃদ্ধি কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ দেশের স্বল্প আয়ের মানুষ মোটা চালনির্ভর। মনে রাখতে হবে, চালের দাম বেড়ে গেলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। সুতরাং যে করেই হোক, চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আসলে পণ্যের সরবরাহ বা সংকটের সঙ্গে দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা হচ্ছে অসৎ ব্যবসায়ীদের হীন মানসিকতা। অতীতেও আমরা লক্ষ্য করেছি, তারা একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের পকেট কেটেছে। আর চালের দাম তো নানা অজুহাতে কয়েক দফা বাড়ল। এটা তাদের ব্যবসায়িক অসুস্থ সংস্কৃতি। এটা হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। তারা জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেন না। তারা বাজার সন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায়ে দ্রম্নত ধনী হবে- এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাদের কাছে দেশের জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা মনে করি, চাল উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে, কমাতে হবে আমদানি-নির্ভরতা।