বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক

  ০৮ মে ২০২৪, ০০:০০
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক

আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রথম ধাপের ১৪১ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এক্ষেত্রে বলা দরকার, প্রার্থীদের নানা প্রতিশ্রম্নতি আর অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মধ্য দিয়ে প্রথম ধাপের ১৪১ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে সোমবার মধ্যরাতেই। নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে এবং নির্বাচনী এলাকাগুলোতে ঘোষণা করা হয়েছে সাধারণ ছুটি। অন্যদিকে, কমিশন বলেছে, যে কোনো মূল্যে নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ করা হবে।

আমরা বলতে চাই, এর আগে বিভিন্ন নিবার্চনপূর্ব সময়ে সংঘর্ষ-সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ভোট শান্তিপূর্ণ হবে কিনা এমন শঙ্কা দেখা গেছে। এবারেও নির্বাচনের আগে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ, নির্বাচনী অফিস ও মোটর সাইকেল ভাঙচুর; রামদা, দা, লোহার পাইপ, রড, লাঠি দিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, ক্যামেরা ভাঙচুর করার পাশাপাশি মোবাইল ফোন লুটসহ বিভিন্ন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর আসে। আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলো যেমন এড়ানো যাবে না, তেমনিভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ করতে সব ধররেন পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।

তথ্য মতে, আজ রংপুর বিভাগের ১৯টি, রাজশাহী বিভাগের ২৩টি, খুলনা বিভাগের ১৭টি, বরিশাল বিভাগের ৫টি, ঢাকা বিভাগের ২৯টি, ময়মনসিংহ বিভাগের ৯টি, সিলেট বিভাগের ১১টি ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২৮টি উপজেলায় পরিষদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

উলেস্নখ্য, গত ২৩ এপ্রিল প্রথম ধাপের চূড়ান্ত প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পান। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রার্থীরা প্রতীক পেয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচারে নামেন। দেখা যায়, বৈশাখের খরতাপেও ক্লান্তিহীন ভোটের মাঠ চষে বেড়ান প্রার্থী ও সমর্থকরা। ব্যানার, ফেস্টুন আর পোস্টারে ছেয়ে যায় সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকাগুলো। ভোটারদের মন জয়ে নানা প্রতিশ্রম্নতি দেন তারা। প্রথম ধাপে তিন পদে ১ হাজার ৮৯১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। বাছাই ও প্রত্যাহারের পর ভোটের মাঠে থাকেন ১ হাজার ৬৯৩ প্রার্থী। এবার দ্বিতীয় ধাপে ১৬১টি উপজেলায় ভোট হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১২৯টি উপজেলায় ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫৫টি উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৫ জুন। এ ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬ প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে বান্দরবানের রোয়াংছড়িসহ তিন উপজেলার ভোট স্থগিত করে ইসি। ফলে বিনাভোটে বিজয়ীর সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫ জনে।

আমরা বলতে চাই, এবারেও নির্বাচন পূর্ববর্তী সহিংসতার ঘটনার তথ্য এসেছে যা সংশ্লিষ্টদের আমলে নিতে হবে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রতিটি নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হোক- এটাই সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা। আর এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের আমলে নেওয়া দরকার, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান করতে পারলে তাতে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। আর তা নিশ্চিত করাও অপরিহার্য। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, আমাদের দেশের নির্বাচনগুলো শতভাগ সহিংসতামুক্ত হতে পারছে না। ফলে নিবার্চনী সহিংসতা রোধে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংস পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কঠোর হতে হবে।

প্রসঙ্গত এটাও বলা দরকার, অতীতে নির্বাচনকেন্দ্রিক সংঘাত-সহিংসতা ও প্রাণহানিরও দৃষ্টান্ত আছে। আছে নির্বাচনোত্তর সংঘর্ষের নজির। সুতরাং, এবারের নির্বাচন ঘিরে যাতে অতীতের কোনো নেতিবাচক ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনী সহিংসতাসহ নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ফলে পরমতসহিষ্ণুতার তীব্র অভাব লক্ষ্য করা যায়। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।

সর্বোপরি বলতে চাই, উপজেলা নির্বাচন যে কোনো মূল্যে সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ হোক। এর আগে নানা সময়ে নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে- যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও ভীতিকর বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। সঙ্গত কারণেই নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংস পরিস্থিতি ও সার্বিক বিষয় আমলে নিতে হবে। সহিংসতার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর হতে হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা তৎপর থাকবে এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে