জীবনটা খুব ছোট এই ছোট্ট জীবনে মানুষ কত কিছুই না পেরিয়ে আসে, তার মধ্যে আমিও একজন। জীবন অতিবাহিত হচ্ছে, জীবনের মর্ম বুঝতেছি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবনের এক অদ্ভুত পরিবর্তন আসতেছে। শিক্ষক বাবাও অবসরে চলে গেছেন। বয়স বাড়ছে প্রতিফলন অত্যন্ত ভারী হচ্ছে, পড়াশোনার খরচ, পরিবারের চিন্তা, ভবিষ্যতের চিন্তা, চাকরির চিন্তা, নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চিন্তা। সব মিলিয়ে বয়স বাড়ছে আর বোঝার ক্ষমতা তীব্র হচ্ছে। মানুষ চিনছি বুঝছি। মানুষের ওপর দিকের ভালোটা দেখে ভেতরের নোংরাটাকে বোঝার ক্ষমতা হচ্ছে। যখন বুঝতে শিখেছি অর্থের কত মর্ম তখন থেকেই খুব হিসাব করে চলার চেষ্টা করেছি। বেকারত্ব কতটা কঠিন সেটা শুধুমাত্র একজন বেকার মানুষই বুঝবে অন্য কেউ বুঝবে না। রিকশা ভাড়ার টাকা বাঁচিয়ে কতটা পথ পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরেছি। কতটা চিন্তা-ভাবনা করে ১০ টাকা খরচ করেছি। সত্যিই বেকারত্বের জীবনটা অনেক কঠিন। দুপুরের খাবারের টাকা বাঁচিয়ে ফোনে রিচার্জ করেছি। শুধু একটা সিঙারা খেয়ে পুরো দিন পাড় করে দিয়েছি। অর্থের কারণে একটা শার্ট কিনতে পারিনি। এক শার্ট দিয়ে বছরের পর বছর কাটিয়ে দিয়েছি। তবে একজন মানুষ আমার জীবনে এসেছে, অনিশ্চিত জীবন জেনেও সে এসেছে, সে আসার পর থেকে জীবনে এক অদ্ভুত পরিবর্তন। সে না আসলে বুঝতামই না জীবনটা কত সুন্দর, সে আসার পর থেকে যেন আরও ভালোভাবে অনুভব করতে লাগলাম জীবনের সুন্দরতম মুহূর্তগুলো, সে আমার পাশে ছিল সব সময় এই বেকারত্বেও সে আমার হাতটা খুব শক্ত করে ধরে রেখেছে, সচরাচর এমন নারী এই যুগে এসে পাওয়াটা খুব কঠিন। এমন একটা মানুষকে পেয়ে নিজেকে সব সময় সৌভাগ্যবান মনে করি, একদিন মনে আছে আমার কাছে একটা টাকাও ছিল না, ফোনেও কোনো টাকা ছিল না, বলতে দেরি হয়েছে কিন্তু সে টাকা দিতে দেরি করেনি, এমন একদিন না অনেক দিনই করেছে সে। খুব খারাপ সময়গুলোতে সে সবসময় আমার পাশে ছিল। ধন্যবাদ তোমাকে অনেক অনেক, খারাপ সময়গুলোতেও এইভাবে পাশে থাকার জন্য (ধন্যবাদ দিলেও ছোট করা হবে)। এই বেকারত্বের অনিশ্চিত জীবনে কেউ থাকতে চাইবে না। আর যে থেকে যায় সে সাধারণদের মতো হয় না। ছোট্ট এই জীবনে কত কিছুর সঙ্গে যুদ্ধ করেই না বাঁচতে হয় আমাদের। আমরা কখনোই বেকারত্বের মনের গতি বুঝতে পারি না, যার এই সময়গুলো যায় শুধুমাত্র সে ছাড়া অন্য কেউই বুঝবে না।
সানোয়ারুল বারী
ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ