নির্বাচনী সহিংসতা কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ০৪ মে ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে এবং যথাযথ নিয়ম-নীতি মেনে প্রচার-প্রচারণা চালানো হবে, এমনটি প্রত্যাশিত হলেও, নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতার ঘটনা বিভিন্ন সময়েই ঘটে- যা অত্যন্ত উৎকণ্ঠাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে- উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। দুই দিনে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় কমপক্ষে ১৬ জন আহত হয়েছেন বলেও জানা যায়। আমরা মনে করি, সহিংসতাকেন্দ্রিক সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। তথ্য মতে, নাটোরের বাগাতিপাড়ায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এ এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে অন্য প্রার্থী শরিফুল ইসলামের লোকজনের বিরুদ্ধে। বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার সোনাপুর বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাহাঙ্গীর হোসেন উপজেলার সোনাপুর হাটে বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করছিলেন। এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী শরিফুল ইসলামের কর্মীরা জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলা চালান। এছাড়া একই রাতে মাগুরার শ্রীপুরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় নির্বাচনী অফিস ও একাধিক মোটর সাইকেল ভাঙচুর করা হয় বলেও খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে। তথ্য মতে, উপজেলার নবগ্রাম বাজারে বুধবার রাতে উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শরীয়তউলস্নাহ হোসেন মিয়া রাজনের মোটর সাইকেল প্রতীকের সমর্থক ও এম এম মোস্তাসিম বিলস্নাহ সংগ্রামের ঘোড়া প্রতীকের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। মোটর সাইকেল প্রতীকের নির্বাচনী অফিস ও উভয় গ্রম্নপের ১০ থেকে ১২টি মোটর সাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে বলেও জানা যায়। অন্যদিকে বরিশাল সদর উপজেলায় নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন একাধিক সংবাদকর্মী। সদর উপজেলা নির্বাচনের প্রচারণা চলাকালীন আনারস ও মোটর সাইকেল প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের মারামারির ঘটনা ঘটে আর সংবাদ পেয়ে বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে চন্ডীপুর মোহাম্মদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে যান কয়েকজন সাংবাদিক। এ সময় অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জন রামদা, দা, লোহার পাইপ, রড, লাঠি দিয়ে সাংবাদিকদের ওপর এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভাঙচুর করার পাশাপাশি মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায় বলেও খবরে উঠে এসেছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিকভাবে যে সহিংসতার ঘটনার তথ্য আসছে তা সংশ্লিষ্টদের আমলে নিতে হবে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমরা বলতে চাই, প্রতিটি নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হোক- এটাই সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা। আর এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের আমলে নেওয়া দরকার, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান করতে পারলে তাতে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। আর তা নিশ্চিত করাও অপরিহার্য। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, আমাদের দেশের নির্বাচনগুলো শতভাগ সহিংসতামুক্ত হতে পারছে না। ফলে নির্বাচনী সহিংসতা রোধে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে, রাজনৈতিক সংস্কৃতি উন্নত করতে হবে। প্রয়োজনে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংস পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কঠোর হতে হবে। আমরা বলতে চাই, নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে নির্বাচনী উৎসবে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যা কাম্য হতে পারে না। নির্বাচনকেন্দ্রিক সংঘাত-সহিংসতা অব্যাহত থাকলে ভোটারদের উপস্থিতি উদ্বেগজনক হারে কমে যাওয়া এবং ভোটারদের উপস্থিতি কম হলে ভোট ডাকাতি ও জাল ভোটের সংখ্যা ভয়াবহভাবে বাড়বে এমন আশঙ্কাও এর আগে উঠে এসেছে। সঙ্গত কারণেই, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সহিংসতা-সংঘাতের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে যেমন উদ্যোগী হতে হবে, তেমনি নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে- এটি যখন সামনে আসছে তখন তা এড়ানো যাবে না। এর আগে নানা সময়ে নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন মানুষ যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও ভীতিকর বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। আমরা মনে করি, নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংস পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর হতে হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা তৎপর থাকবেন এমনটি কাম্য।