শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

দুর্নীতিবিরোধী সমাজ সৃষ্টির পথে তারুণ্যই নেতৃত্ব দেবে

আত্মশক্তি বিকাশের মধ্য দিয়ে তরুণ প্রজন্ম তথা যুবসমাজ রুখে দাঁড়ালে দেশ দুর্নীতিমুক্ত হতে বাধ্য। এজন্য ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ-জীবনের সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতিবিষয়ক সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সাব্বির হোসেন রানা
  ০৪ মে ২০২৪, ০০:০০
দুর্নীতিবিরোধী সমাজ সৃষ্টির পথে তারুণ্যই নেতৃত্ব দেবে

১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে শোষণ, বঞ্চনা আর অবিচারের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা, আমার সেই প্রিয় বাংলা স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিক্রম করেছি, কিন্তু দুর্নীতির ভয়াল গ্রাসে কাঙ্ক্ষিত সোনার বাংলা হয়ে ওঠেনি আজও। দুর্নীতির দানব লাল-সবুজের পতাকাকে খামচে ধরেছে। দুর্নীতির করাল গ্রাস থেকে দেশকে মুক্ত করতে দেশের বেসরকারি একমাত্র প্রতিষ্ঠান টিআইবি ১৯৯৬ সাল থেকে আশার আলোর মশাল জ্বালিয়ে একের পর এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলে যাচ্ছে। বর্তমানে ৫ বছর মেয়াদি যেই দুর্দান্ত এক ইনিংস ২০২২ সালে শুরু হয়েছে এর নাম হলো প্যাক্টা প্রকল্প।

স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিক্রম করেছে প্রিয় বাংলাদেশ, কিন্তু দুর্নীতির ভয়াল গ্রাসে কাঙ্ক্ষিত সোনার বাংলা হয়ে ওঠেনি। দুর্নীতির দানব লাল-সবুজের পতাকাকে খামচে ধরেছে। আজকে যারা বাংলাদেশের তরুণ, তারাই আগামী দিনে বাংলাদেশের নেতৃত্বে আসবে। তাদের মধ্যে যদি এখনই দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব সৃষ্টি করা যায় তাহলে দেশ পরিচালনায় তা দারুণভাবে কাজে দেবে। টিআইবি'র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান স্যারের একটি বক্তব্য তুলে ধরছি। তিনি একটি বক্তব্যে বলেছিলেন, 'দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে শুরু থেকেই তরুণরা ইতিবাচক পরিবর্তনের অনুঘটক হিসেবে টিআইবির সঙ্গে রয়েছে। তাই তরুণদের উৎকর্ষ সাধনে টিআইবি সবসময় গুরুত্ব দিয়ে থাকে। দুর্নীতিবিরোধী সমাজ সৃষ্টির পথে এই তারুণ্যই আমাদের নেতৃত্ব দেবে।'

দুর্নীতি শব্দটি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে জড়িত হয়ে গেছে। সামাজিক জীবনে প্রতিদিনই আমরা কোনো না কোনো দুর্নীতির খবর জানছি, শুনছি এবং পড়ছি। এমন কোনো স্থান নেই যেখানে দুর্নীতি বিস্তার লাভ করেনি। আমাদের পারিবারিক জীবন এমনকি ব্যক্তিজীবনেও দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে মারাত্মকভাবে। এই দুর্নীতি রয়েছে সর্বত্র। ঋণ নিয়ে হজম করে ফেলা, সরকারি সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করা, সরকারি সম্পদ আত্মসাৎ করা, বিদু্যৎ-পানি-গ্যাস চুরি, চাকরির নামে প্রতারণা ও হয়রানি করা- দুর্নীতি কোথায় নেই? এমনকি দুস্থ মানুষকে গম, এতিমের বস্ত্র নিয়েও দুর্নীতি হচ্ছে। পরীক্ষার আগে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিক্রি, অতঃপর পরীক্ষার হলেও দুর্নীতি আধিপত্য বিস্তার করেছে। মেধা তালিকায় স্থান নির্ধারণেও চলে দুর্নীতি।

দুর্নীতির সর্বনাশা সামাজিক ব্যাধির মরণ ছোবলে বর্তমান সমাজ জর্জরিত। রাজনীতি ও অর্থনীতিতে দুর্বৃত্তায়নের কারণে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে বিদেশে পাচার হয়ে থাকে। দুর্নীতি প্রতিরোধের মাধ্যমে এই বিপুল অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব হলে তা দিয়ে শিশু ও প্রসূতির চিকিৎসা, আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেরামত ও জনকল্যাণে ব্যয়ের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে দেশ অনেকদূর এগিয়ে যেত। জাতীয় জীবনের গভীরে প্রোথিত এমন জাতীয় সমস্যার সমাধানের সুস্পষ্ট কোনো দিকনির্দেশনাও নেই। জাতীয় জীবনীশক্তি বিনাশকারী এই ভয়াবহ মহামারি থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হলে সামাজিক আন্দোলনের প্রয়োজন।

দুর্নীতির ভয়াবহ বিস্তার এবং এর ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতিসহ অন্যান্য ক্ষতির বিশালতার কারণে উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা দুর্নীতিকে বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়নের সবচেয়ে বড় অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন পিছিয়ে পড়ছে এও নতুন কথা নয়। তবু দুর্নীতি কমছে না। দিন যতই যাচ্ছে দুর্নীতি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে তত বেশি প্রবেশ করছে। সমাজে সৃষ্টি করছে চরম অস্থিতিশীলতা। দুর্নীতির কারণে সামাজিক ভারসাম্যের নষ্টের ফলে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও দুর্বল হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী দুষ্ট ক্ষতের।

জনগণের পক্ষ থেকে সহযোগিতা না পেলে একা সরকারের পক্ষে এর সমাধান সম্ভব নয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এই আন্দোলনে সরকার ও সুশীল সমাজের সম্মিলিত প্রয়াস অপরিহার্য। এজন্য আমাদের যা যা করতে হবে তা হলো : বিচার বিভাগের সক্রিয় ভূমিকা থাকতে হবে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে, স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশনের সক্রিয় ভূমিকা থাকতে হবে, জনগণের সমর্থনের ওপর সরকারের ক্ষমতায় আসা নির্ভর করে বলে সরকারকে আইনের শাসন নিশ্চিত করার মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে, মানুষের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে হবে, ধর্মীয় বিশ্বাসকে উজ্জীবিত করতে হবে। এ ছাড়া মানুষকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে উজ্জীবিত করতে হবে। রাষ্ট্র ও জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগে আকাশচুম্বী সমস্যারও সহজ ও দ্রম্নত সমাধান সম্ভব। বিশ্বায়নের এই তীব্র প্রতিযোগিতার যুগে আমরা দুর্নীতির কারণে এভাবে নিঃশেষ হয়ে যেতে পারি না। আমাদের রয়েছে প্রাকৃতিক সম্পদ ও জাতিকে উজ্জীবিত করার শক্তিশালী আদর্শ। শুধু প্রয়োজন সুচিন্তিত ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ। ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের অঙ্গীকার ও ঘোষণার মাধ্যমে শুরু হোক আমাদের হাজার মাইল পদযাত্রার প্রথম পদক্ষেপ।

বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা পেলেও এর বীজ বপন ১৯৫২ সালের রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার আহ্বান থেকে শুরু হয়। পাকিস্তানিদের হাত থেকে রক্ষা পেতে এদেশের তরুণরা রাস্তায় নেমে এসেছিল। বিভিন্ন অবিচার, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতার ফলে সৃষ্ট দারিদ্র্য থেকে দেশকে সুরক্ষিত করতেই বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের সঙ্গে তরুণ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশ স্বাধীন করেছিল। তবে তারপরও এদেশের শিক্ষিত সমাজের অনেকেই দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়। যা এখনো চলমান। দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের ফলে এর হার দ্রম্নত বিস্তৃতি না পেলেও ক্রমশ বেড়েই চলছে।

যেহেতু তরুণরাই আগামীতে দেশের নেতৃত্ব দেবে তাই এখন থেকেই এই তরুণদের তৈরি করে নিতে হবে। তাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে এখনই আমাদের করণীয় দেশের কোথায় কি সমস্যা রয়েছে তা চিহ্নিত করা। কারা কোন কাজটি সঠিকভাবে করছে না তা তুলে ধরা। দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনমূলক সংগঠন যেমন টিআইবি'র তরুণদের নিয়ে গঠিত ইয়েস গ্রম্নপে যুক্ত হওয়া।

দুর্নীতি সমাজের প্রতিটি স্তরকে কলুষিত করে তুলেছে। দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজে প্রতিটি মানুষকে তার প্রকৃত মর্যাদা দেওয়া সম্ভব হয় না। দুর্নীতি প্রতিরোধে শুধু ব্যক্তি পর্যায়ে নয় বরং সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তরুণ প্রজন্মের মনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঘৃণার চেতনা সৃষ্টি করতে হবে।

সংবিধানে আছে প্রতিটি মানুষকে তার মর্যাদা দিতে হবে। কিন্তু দুর্নীতি আচ্ছন্ন সমাজে সেটি সম্ভব নয়। দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে দরকার চেতনা। সমাজের তরুণদের দায়িত্ব দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা। সেক্ষেত্রে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবেই। সমাজের মাত্র এক শতাংশ মানুষ দুর্নীতি করে আর বাকি ৯৯ শতাংশ মানুষ এর শিকার হয়। এজন্যই দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার।

দেশের জাতীয় সমস্যা দুর্নীতি প্রতিরোধ করা। শুধু দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দিয়ে সম্ভব নয়, এজন্য প্রয়োজন গণসচেতনতা, দেশপ্রেম এবং তারুণ্যের অঙ্গীকার। তরুণ ও যুবকদেরই দুর্নীতি প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আন্দোলনের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব।

'দুর্জয় তারুণ্য দুর্নীতি রুখবেই' তরুণদের দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক মূল্যবোধ নিজেদের মধ্যে ধারণ করতে এবং পরে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্র থেকে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তরুণদের সাহসিকতা ও সংঘবদ্ধতার মাধ্যমে দুর্নীতি রোধ করা যায়। সাহসী তরুণরা যদি একত্র হয়, তবে তাদের দলগত শক্তি দিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা যাবে। সবাইকে বলতে হবে, 'দুর্নীতি করব না এবং সইব না'। দুর্নীতি প্রতিরোধে মন্দকে পেছনে ফেলে ভালোকে কাছে টানার অনুভূতি সৃষ্টি করতে হবে। পাহাড় সমান দুর্নীতি দূর করার জন্য আদর্শবান ও সৎ তরুণ-যুবকদের সমাজকল্যাণমূলক কাজের নেতৃত্বে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। আলস্নাহতাআলা ঘোষণা করেছেন, 'আর তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হোক, যারা মানুষকে কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে, সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎ দুর্নীতিমূলক কাজে নিষেধ করবে।' (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১০৪)

যুবসমাজের দ্বারা জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সমাজ থেকে দুর্নীতির শিকড় উৎপাটন করা দরকার। কারা কীভাবে দুর্নীতি করছে, সে তথ্য প্রকাশ্যে ও জনসমক্ষে তুলে ধরা উচিত। নিজেদের পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে দুর্নীতি না করার এবং প্রতিরোধেরও অঙ্গীকার করতে হবে। তরুণ যুবসমাজ এ ব্যাপারে কেবল সাহায্য-সহযোগিতা করবে। দেশের যুবসমাজ অসততা, অন্যায় ও দুর্নীতির বিরোধিতা শুরু করলে দুর্নীতিপরায়ণ লোকেরা দুর্নীতি পরিত্যাগ করতে বাধ্য হবে। এজন্য প্রয়োজন তরুণ ও যুবকদের সম্মিলিত ঐকমত্য ও সংঘবদ্ধতা। ধর্মীয় বিধিবিধান ও নৈতিক অনুশাসনের কথা জনসাধারণের কাছে সুন্দরভাবে তুলে ধরার মাধ্যমে সমাজ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব।

দুর্নীতি প্রতিরোধে নিজের ইচ্ছাশক্তি ও আত্মশুদ্ধি প্রয়োজন। মানুষের আত্মাকে নিয়ন্ত্রণ করে বিবেকবোধের মাধ্যমে সমাজে দুর্নীতিকে প্রতিরোধ করতে হবে। কেউ যদি দুর্নীতিতে আকৃষ্ট হয়েও নিজের বিবেকের তাড়নায় দুর্নীতি থেকে মুক্ত থাকতে পারেন, তাহলে তিনি খাঁটি ধর্মপ্রাণ লোক। প্রতিরোধের মাধ্যমেই দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণে আনা যেতে পারে। দুর্নীতি দমনের জন্য সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। 'সমৃদ্ধ দেশ আলোকিত মন, হয়ে উঠি সচেতন একজন'-এমন বাস্তবধর্মী স্স্নোগান সামনে রেখে তরুণ-যুবকদের সেই সুশীল সমাজ বিনির্মাণের জন্য কাজ করতে হবে, যেখানে কোনো অন্যায়-অপরাধ, প্রতারণা, দারিদ্র্য, অবিচার থাকবে না।

আত্মশক্তি বিকাশের মধ্য দিয়ে তরুণ প্রজন্ম তথা যুবসমাজ রুখে দাঁড়ালে দেশ দুর্নীতিমুক্ত হতে বাধ্য। এজন্য ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ-জীবনের সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতিবিষয়ক সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, মক্তব ও বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয় প্রভৃতি স্থান থেকে সদুপদেশ ও ধর্মীয় বিধিবিধানের আলোকে তৃণমূল পর্যায় থেকে দুর্নীতি দমনের জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা তৈরি করে সামাজিক আন্দোলন ও জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে আন্তধর্মীয় নেতাদের সম্পৃক্ততা ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। তাই আসুন, দুর্নীতিকে 'না' বলার প্রত্যয়দীপ্ত অঙ্গীকার সামনে রেখে সর্বাত্মক নৈতিকতা চর্চার সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি।

সাব্বির হোসেন রানা : নবীন কলাম লেখক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে