সড়কে মৃতু্যর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে
প্রকাশ | ০৩ মে ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
সড়ক দুর্ঘটনা ও দুর্ঘটনায় মৃতু্য থেমে নেই। ঘাতক চাকার নিচে একের পর এক মানুষ চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, যখন প্রতিনিয়ত সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে এবং ঝরে যাচ্ছে তরতাজা প্রাণ- তখন পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করা জরুরি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় ট্রাকের সঙ্গে প্রাইভেট কারের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চারজন একই পরিবারের সদস্য; অপরজন প্রাইভেট কারটির চালক। উলেস্নখ্য, বুধবার রাত ২টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হরিতলা বাদশা গেটের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি। জানা গেছে, পরিবারটি ঢাকার সাভার এলাকায় বাসাভাড়া করে বসবাস করেন। মাজার জিয়ারতের জন্য তারা সবাই মিলে প্রাইভেটকারে সিলেট গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে বুধবার রাত ২টার দিকে প্রাইভেট কারটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে শাহপুরে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। আর এতে প্রাইভেট কারটি দুমড়ে-মুচড়ে ঘটনাস্থলেই সব আরোহী নিহত হন।
আমরা বলতে চাই, শুধু এবারই নয়- প্রতিনিয়তই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটছে। ফলে সামগ্রিকভাবে সড়ক দুর্ঘটনার যে চিত্র পরিলক্ষিত হয় তা সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। বরং সড়ক কতটা ভীতিপ্রদ হয়ে উঠেছে তা আমলে নিতে হবে। যখন দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে, লাশের মিছিল ভারী হচ্ছে- তখন সামিগ্রক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য বলেই প্রতীয়মান হয়। বিবেচনায় নেওয়া দরকার, এর আগে বারবার এমন বিষয় সামনে এসেছে যে, বিপজ্জনক অভারটেকিং, বেপরোয়া গতি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা, ছোট যানবাহন ক্রমেই বৃদ্ধি, বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে সার্ভিস লেন না থাকায় ইজিবাইক, রিকশা, অটোরিকশা মহাসড়কে নেমে আসা, গুরুত্বপূর্ণ জংশনে, রাস্তার মোড় ও বাস স্টপেজগুলোতে যানজট তৈরি করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকাংশ বাড়িয়ে দিচ্ছে। সঙ্গত কারণেই, এই বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিশ্চিত করতে হবে।
অন্যদিকে, কেন সড়ক নিরাপদ হচ্ছে না, কেন বাড়ছে লাশের সংখ্যা- এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে উদ্যোগ গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে যে, সড়ক দুর্ঘটনার ডজন দুয়েক কারণ চিহ্নিত করা হলেও তা প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় মৃতু্যর মিছিল থামছে না। বরং সড়কে লাশের সারি দিন দিন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। আর তার সঙ্গে পালস্না দিয়ে বাড়ছে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণও। ফলে, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে করণীয় নির্ধারণ ও তার বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। এটাও এড়ানোর সুযোগ নেই, গণপরিবহণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন- দায়িত্বহীনতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে সড়কে মৃতু্য কমছে না। একই সঙ্গে পথচারী ও যানবাহন চালকদের অসচেতনতা, যানবাহনের বেপরোয়া গতি, ফিটনেসবিহীন গাড়ি পরিচালনা এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বলে মনে করেন তারা। ফলে, এই বিষয়গুলোকে আমলে নিতে হবে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।
সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় ট্রাকের সঙ্গে প্রাইভেট কারের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন যার মধ্যে চারজন একই পরিবারের সদস্য; অপরজন প্রাইভেট কারটির চালক- এই ঘটনার ভয়াবহতা আমলে নিতে হবে। আর এটাও মনে রাখতে হবে নানা প্রতিশ্রম্নতি সত্ত্বেও সড়ক নিরাপদ হয়নি। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। প্রতিনিয়ত দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতু্যর বিভীষিকা থেকে কিছুতেই যেন রক্ষা পাচ্ছে না মানুষ। ফলে একের পর এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা কেন ঘটছে তা আমলে নিতে হবে এবং দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দোষীদের শনাক্ত করে শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে। দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলো বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।