বৈধপথে রেমিট্যান্স না পাঠিয়ে অনেকেই হুন্ডির মাধ্যমে পাঠাচ্ছেন। প্রবাসীদের এ প্রবণতা রোধ করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য ব্রিটেনে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গত শুক্রবার বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডন আয়োজিত রেমিট্যান্স মেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈধপথে বাংলাদেশে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ সুরক্ষিত থাকবে এবং এই অর্থ থেকে সরকারি প্রণোদনাসহ সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মাধ্যমের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি মুনাফা অর্জনের সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, যারা বৈধপথে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠাবেন তাদের জন্য 'রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড' প্রবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে। রেমিট্যান্স প্রেরণের জন্য ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা থেকে ৩ শতাংশ বৃদ্ধির যে প্রস্তাব রেমিট্যান্স প্রেরণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জানিয়েছে, তা বিবেচনার জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে উত্থাপন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসীদের কল্যাণে ও তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছেন। উলেস্নখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে যুক্তরাজ্যে সোনালী ব্যাংক চালু করে যুক্তরাজ্য থেকে বৈধপথে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর সূচনা হয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নীতি অনুসরণ করে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেমিট্যান্স প্রেরণের জন্য ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা ও সিআইপি মর্যাদাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবাসীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদানের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
বাংলাদেশ জনসংখ্যাবহুল দেশ। সঙ্গত কারণেই দেশের জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তর করা সার্বিক অগ্রগতির প্রশ্নেই জরুরি।
মনে রাখা দরকার, যখন প্রবাসী আয়ে সুখবর আসে তখন তা আশাব্যঞ্জক। বৈধপথে রেমিট্যান্স কীভাবে আনা যায় এবং রেমিট্যান্স কীভাবে বাড়ানো যায় এই লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে তৎপর থাকতে হবে। প্রবাসী আয় দেশের সার্বিক অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে অবদান রাখছে। প্রবাসী আয়ে ধস নামলে বিষয়টিকে সহজভাবে দেখার যেমন সুযোগ নেই, তেমনি রেমিসট্যান্সের অগ্রগতি ধরে রাখতে সব ধরনের পদক্ষেপও গ্রহণ অপরিহার্য।
স্মর্তব্য, দেশের অগ্রগতিতে রেমিট্যান্সের উলেস্নখযোগ্য অবদান রয়েছে। এছাড়া, রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ করে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রবাসে দক্ষ জনশক্তি যত বেশি পাঠানো সম্ভব হবে ততই দেশের সুনাম বাড়বে এবং জনশক্তি রপ্তানিও বৃদ্ধি পাবে।
আমরা মনে করি, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যই ইতিবাচক। ফলে নতুন নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করাসহ দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি নিশ্চিত করতে হবে।