শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

১৪ পণ্য পেল জিআই সনদ

উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে
  ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
১৪ পণ্য পেল জিআই সনদ

সম্প্রতি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ি, গোপালগঞ্জের রসগোলস্না ও নরসিংদীর অমৃতসাগর কলাসহ ১৪টি পণ্যকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে এসব পণ্যের নিবন্ধন সনদ বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। আর এ নিয়ে ডিপিডিটি কর্তৃক জিআই সনদপ্রাপ্ত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের সংখ্যা দাঁড়াল ৩১ টিতে। এক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমির মাল্টিপারপাস হলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব সনদ বিতরণ করা হয়।

দিন যত যাচ্ছে, বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে বাড়ছে জিআই পণ্যের স্বত্বের গুরুত্ব। বিশ্বব্যাপী নিজস্বতা ব্যাপারটি অনেক আকাঙ্ক্ষিতও। সঙ্গত কারণেই বিশ্বব্যাপী জিআই পণ্যের চাহিদা অনেক। এছাড়া মনে রাখা দরকার, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় জিআই পণ্য এগিয়ে থাকে। জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার পর পণ্যগুলো রপ্তানি বাজার বেড়ে যায়। সঙ্গত কারণেই ভবিষ্যতে আমাদের দেশীয় পণ্যগুলোর জিআই স্বীকৃতির ব্যাপারটি নিয়ে আরও গভীরভাবে ভাবতে হবে। যেহেতু, জিআই স্বত্বপ্রাপ্তি একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হয়, তাই যেসব সংস্থা কিংবা ব্যক্তির ওপর দায়িত্ব থাকবে, তাদের আরও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকতে হবে। সেই সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় যেন আবেদন বিলম্বিত বা বিঘ্নিত না হয়, সেদিকেও নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে খেয়াল রাখতে হবে। তবেই আমাদের দেশজ উৎপাদিত পণ্যকে আমরা বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড় করাতে পারব। আর এ ব্যাপারে সরকারের নজরদারিও বাড়ানো জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়।

বলা দরকার, পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ একটি অমিত সম্ভাবনাময় দেশ। ষড়ঋতুর এ দেশকে প্রকৃতি যেমন দু'হাত ভরে বৈচিত্র্যময় সম্পদ ঢেলে দিয়েছে, তেমনই এ দেশের মেহনতি মানুষ তাদের আপন শৈল্পিক কারুকার্যের মাধ্যমে অনন্য সাধারণ সামগ্রী প্রস্তুত করে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের সুনাম ও খ্যাতি বৃদ্ধি করেছে। এছাড়া মাটি, বায়ু, পানি, পরিবেশ, কারিগরদের দক্ষতা প্রভৃতি স্বতন্ত্র ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ছোট এ ভূখন্ডের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব পণ্যকে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি এর গুণগত মানও টেকসই সংরক্ষণের দিকেও নজর দিতে হবে বলেও মন্ত্রী জানান। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ সমীচীন বলেই আমরা মনে করি।

বিশ্ববাজারে জিআই পণ্যের প্রচার ও প্রসারে আমাদের এখনই কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনসমূহ, দেশের সব আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেন্দ্রীয়ভাবে এসব পণ্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মেলায় জিআই পণ্যসমূহ প্রদর্শন করা যেতে পারে।

প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা, কারিগরি সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব সম্পদ ও পণ্যের প্রচার-প্রসার ঘটাতে হবে। জানা গেছে, এরই মধ্যে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে এমন ৫০০টি পণ্যের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ফলে এসব আমলে নিয়ে যথার্থ পদক্ষেপ নিতে হবে। জিআই পণ্যকে সুরক্ষা দিতে হবে এবং একইসঙ্গে এর পেটেন্ট দিতে হবে। জিআই পণ্যের প্রচার-প্রসারে বিভিন্ন উৎসব, পালাপার্বণ ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এসব পণ্যকে উপহার হিসেবে দেওয়া যেতে পারে এমন আলোচনাও উঠে এসেছে। তাছাড়া এসব পণ্য সম্পর্কে টিভিসি, ডকুমেন্টারি তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া যায়- এ সংক্রান্ত বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে এমনটি প্রত্যাশিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে