পাঁচ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই বাংলাদেশ-কাতার সম্পর্ক দৃঢ় হোক

প্রকাশ | ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রশ্নে অন্য দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা করে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থানসহ নানা বিষয়ই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ- যা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ সমীচীন। প্রসঙ্গত বলা দরকার, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, বন্দর ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা এগিয়ে নিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের সঙ্গে পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার ঢাকার তেজগাওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। আমরা বলতে চাই, বর্তমান বিশ্বে একটি দেশের সার্বিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির প্রশ্নে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, বন্দর ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং বিভিন্ন দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্ববহন করে। ফলে যখন এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের বিষয়টি জানা যাচ্ছে তখন তা আশাব্যঞ্জক বলেই প্রতীয়মান হয়। যা আমলে নিয়ে সর্বাত্মক উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। তথ্য মতে, যে চুক্তিগুলো সাক্ষরিত হয়েছে তা হলো- আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা চুক্তি। পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা চুক্তি। দ্বৈত কর পরিহার ও কর ফাঁকি রোধ চুক্তি। সাগর পথে পরিবহণ সংক্রান্ত চুক্তি। দুই দেশের যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি। অন্যদিকে, সমঝোতা স্মারকগুলো হলো- কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা বাড়াতে সমঝোতা স্মারক। যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে সমঝোতা স্মারক। শ্রমশক্তি ও কর্মসংস্থান বিষয়ে সমঝোতা স্মারক। উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা খাতে সহযোগিতা বাড়াতে সমঝোতা স্মারক। বন্দর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সমঝোতা স্মারক। আমরা মনে করি, চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের বিষয়গুলো আমলে নিতে হবে এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। এছাড়া লক্ষনীয় যে, কাতারের কাছে দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গভবনে ঢাকায় সফররত কাতারের আমির সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে এ সহায়তা চান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বাংলাদেশকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) দেওয়ার জন্য কাতার সরকারকে ধন্যবাদও জানান রাষ্ট্রপতি। অন্যদিকে জানা যাচ্ছে, রাষ্ট্রপতি বৈঠকে বলেছেন, আমিরের সফর এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) আগামী দিনে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতাকে আরও সম্প্রসারিত করবে। আমরা চাই, এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হোক এবং পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা করে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাক। এছাড়া এটাও জানা যাচ্ছে যে. বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগের জন্য ১০০ অর্থনৈতিক বিশেষ অঞ্চল স্থাপন করেছে। কাতারের বিনিয়োগকারীরা পেট্রো-কেমিক্যাল, জ্বালানি, মেশিনারিজ, তথ্যপ্রযুক্তি, ইলেকট্রনিক্স, সিরামিক, কৃষি-ব্যবসা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মতো কিছু ক্ষেত্রে প্রণোদনা পেতে এবং সহায়তা করতে পারে- যা তারা আমলে নেবে এমনটি প্রত্যাশিত। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন প্রায় ৩.৭৫ লাখ বাংলাদেশিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ার জন্য কাতার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন। এছাড়া তিনি বলেছেন, এই জনবল কাতার এবং বাংলাদেশ উভয় দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্রতিনিয়তই অবদান রাখছেন। অন্যদিকে, কাতারের আমির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নেরও প্রশংসা করেছেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে, সামনের দিনে বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে। যা আশাব্যঞ্জক বলেই প্রতীয়মান হয়। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো স্বাক্ষরিত হলো তা আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখুক। এছাড়া কাতারের আমির বলেছেন, বাংলাদেশ-কাতারের সই করা বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক দু'দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে আরও কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। আমরাও প্রত্যাশা করি, দুই দেশের মধ্যে সার্বিকভাবে সম্পর্ক আরও এগিয়ে যাক। সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাক এবং সামগ্রিকভাবে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হোক এমনটি কাম্য।