গণতন্ত্র সংহত ও সুরক্ষায় শেখ হাসিনার অবদান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়া কিছু নেই। সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তিনি নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়াই তার স্বপ্ন। তার স্বপ্ন সাধারণ মানুষের মুক্তি। তার স্বপ্ন পূরণ হোক এই-ই প্রত্যাশা।

প্রকাশ | ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

সাইফুজ্জামান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মময় জীবন ও রাজনৈতিক ঘটনা মনোযোগ আকর্ষণ করে। পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সান্নিধ্য, পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ, দেশ পরিচালনায় তার দূরদৃষ্টিভঙ্গি তাকে উদ্ভাসিত করেছে। তিনি আপসহীন, অনড়, সিদ্ধান্ত গ্রহণে পারদর্শী হয়ে উঠেন অল্প সময়ে। আজ শেখ হাসিনার পরিচিতি বিশ্বব্যাপী। অসংখ্য পুরস্কার, সম্মাননায় ভূষিত তিনি। ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানি চুক্তি, পার্বত্য শান্তিচুক্তি, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত নাগরিকদের বাংলাদেশে আশ্রয় প্রদান, নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণ, জাতিসংঘের অধিবেশনে করোনা সংক্রান্ত বিষয়ে বিশ্বনেতাদের মধ্যে ঐকমত্য ও কার্যকরী পদক্ষেপ সৃষ্টি শেখ হাসিনাকে বিশেষভাবে পরিচিত করে তুলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মময় জীবন ও রাজনৈতিক ঘটনা পরম্পরায় তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকান্ডের পর আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সংকট উত্তরণে ১৯৮১ সালে দলীয় প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণের পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতে তার আপসহীন ভূমিকা তেজদীপ্ত অংশগ্রহণ, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জনবান্ধব কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন তাকে ইতিহাসে স্মরণীয় করে রাখবে। ১৯৪৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠা জাতীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করে। ভাষা আন্দোলন, স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব প্রদান করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গ্রেপ্তার হন। তার অবর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতারা অসীম ধৈয, ত্যাগ-তিতিক্ষা, প্রাণ বিসর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তার বিচক্ষণতা দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় অগ্রসর হন। কিন্তু দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার মুহূর্তে সামরিক বাহিনীর বিপথগামী সদস্যরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে। বিদেশে থাকায় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা প্রাণে বেঁচে যান। শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থানকালে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কিছুটা মন্থরতা নেমে আসে। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এলে আওয়ামী লীগ জনগণের দলে রূপান্তরিত হয়। দলীয় ঐক্য অটুট রাখা এবং সংসদীয় গণতন্ত্র উত্তরণে শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। সিলেট থেকে হযরত শাহজালালের মাজার জিয়ারতের পর সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগদানের মাধ্যমে তিনি দলীয় রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯৮১ সালে ৪ জুন শেখ হাসিনা দলীয় কাযনির্বাহী সংসদের এক বৈঠক আহ্বান করেন। ৩ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জিয়াউর রহমানের মৃতু্যর পর দেশে সামরিক শাসন জারি হলে যাতে গণতন্ত্র পরিচালনা নস্যাৎ না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে কর্মসূচি গ্রহণে তাকে সতর্ক থাকতে হয়েছে। আওয়ামী লীগের বৈঠকে প্রস্তাব গৃহীত হয় যে, সশস্ত্র বাহিনীকে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যবহার করা উচিত নয়। সর্বশক্তি দিয়ে তিনি গণবিরোধী ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিসমূহের তৎপরতা রুখে দাঁড়াবার আহ্বান জানান। জিয়াউর রহমানের হত্যাকান্ডের পর দেশে জরুরি অবস্থা মোকাবিলা ও দলীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে শেখ হাসিনা সতর্ক ছিলেন। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যা ও ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতা হত্যার পর দেশের কর্তৃত্ব চলে যায় সামরিক শাসক ও স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে। বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে নেতাকর্মীদের মাঝে আস্থা ফিরিয়ে আনতে ইতোমধ্যে তিনি কাজ করেছেন। বিচলিত না হয়ে বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন। জিয়াউর রহমানের হত্যাকান্ডের পর দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। এ সময় গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয়। শেখ হাসিনা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দলীয় কর্মসূচি অব্যাহত রেখে এগিয়ে যান। ১৯৮১ সালে ২১ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি সাত্তার জাতীয় সংসদের নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এতে উলেস্নখ ছিল ১. নির্বাচনের তারিখ স্থির করা, ২. জরুরি আইন প্রত্যাহার, ৩. সব প্রার্থীকে প্রচার মাধ্যমে সুযোগ প্রদান, ৪. প্রশাসন ও সরকারি যানবাহন নিষিদ্ধ করা। ১৫ অক্টোবর নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগ ১০ আগস্ট সমাবেশ থেকে দুর্বার আন্দোলনের ডাক দেয়। ১৯৮১ সালের ১৬ আগস্ট বায়তুল মোকারমে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। ২৬ আগস্ট হরতাল পালিত হয়। রাজশাহীর আওয়ামী লীগ অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সারাদেশে বহু নেতাকর্মীর ওপর নিযার্তন চালানো হয়। রাজশাহী, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও দর্শনা আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়। বিএনপি সরকার ১৫ নভেম্বর নির্বাচনের তারিখ স্থির করে। ২ সেপ্টেম্বর প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনের তারিখ পেছানোর বিষয়টি আওয়ামী সভানেত্রীকে অবহিত করতে বিএনপি নেতা কে এম ওবায়দুর রহমান ৫ সেপ্টেম্বর ৩২ নম্বর বাড়িতে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। শেখ হাসিনা প্রথমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে বলে অটল অবস্থান ব্যক্ত করেন। ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আওয়ামী লীগ ঘোষিত দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। ৮ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ঐক্য গড়ে তোলার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। ২১ সেপ্টেম্বর ১০ দলের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনী জোট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২২ সেপ্টেম্বর জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয়। রাষ্ট্রপতি প্রার্থী মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। ৭২ জন রাষ্ট্রপতি প্রার্থী মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রপতি প্রার্থীর মধ্যে উলেস্নখযোগ্য প্রার্থী ছিলেন বিএনপির আবদুস সাত্তার, আওয়ামী লীগের ডক্টর কামাল হোসেন, জাতীয় জনতা পার্টির এম এ জি ওসমানী, জাসদের এম এ জলিল প্রমুখ। ১৯ অক্টোবর আওয়ামী লীগ ১৭ দফা নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করে। ১১ নভেম্বর মানিক মিয়া এভিনিউতে শেখ হাসিনার সভানেতৃত্বে আওয়ামী লীগের জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। জনসভা জনসমুদ্রে রূপ নেয়। ১৯৮১ সালের ১৫ নভেম্বরের নির্বাচন প্রহসনের নির্বাচনে রূপ নেয়। ভোট কারচুপি, জালিয়াতি ও অর্থ উৎকোচ প্রদান করা হয়। বিএনপি প্রার্থী জেতে। হেরে যায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠিত হয়। জেনারেল এরশাদ ১৯৮১ সালের ২৮ নভেম্বর এক বিবৃতিতে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীর করণীয় সম্পর্কে ব্যাখ্যা দান করে। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ জেনারেল এরশাদ সামরিক শাসন জারি করে। ১৯৮৩ সালের ১ এপ্রিল ঘরোয়া রাজনীতির অনুমতি দেওয়া হলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৫ দল ১৯৮৩ সালের ৯ এপ্রিল হোটেল ইডেনে দাবি দিবস পালন করেন। ১৭ এপ্রিল কুষ্টিয়ার মুজিবনগরে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জনসভায় শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে বক্তৃতা দেন সামরিক আইনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র করার ঘোষণা ও শহীদ মিনারে চিরাচরিত অনুষ্ঠানাদির পরিবর্তে কোরআনখানির ঘোষণা রাজনীতিবিদদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ১৫টি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনা একুশের সর্বদলীয় কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা পোষণ করেন। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১৪ ফেব্রম্নয়ারি বাংলাদেশ সচিবালয় অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। সামরিক আইন ভঙ্গ করে মিছিল সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা করে। পুলিশ ছাত্রদের বাধা দিলে ব্যাপক গোলযোগ দেখা দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সান্ধ্য আইন জারি করা হয়। ১৪ ও ১৫ ফেব্রম্নয়ারির রাজনৈতিক কর্মসূচিতে জড়িত থাকার জন্য আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৮৩ সালের ৭ এপ্রিল আওয়ামী লীগ ১১ দফা দাবি পেশ করে। এরশাদ রাজনৈতিক দলের প্রতি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেন। রাজনৈতিক অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আলোচনা সম্ভব নয় বলে আওয়ামী লীগ নেতারা মতামত ব্যক্ত করেন। ১৯৮৩ সালের ১৬ মার্চ ১০ দফা ভিত্তিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ডাক দেয়। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ১৯৮৩ সালের মে মাসে উত্তরাঞ্চল সফর করেন। ১১ দফা প্রস্তাব মেনে নেওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান। ১৯ জুলাই আওয়ামী লীগ স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আহ্বান জানায়। ৭ ও ৮ আগস্ট ১৫ দলীয় নেতাদের সঙ্গে বিএনপির আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয় সামরিক আইনের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য। ১৯৮৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৫ দল ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ৭ দল সামরিক বিরোধী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে সম্মত হয়। সামরিক আইন প্রত্যাহারে ২২ দল যুক্ত দাবি উপস্থাপন করে। ১৯৮৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ১৫ দল আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ও ৭ দল বিএনপি কার্যালয়ের সামনে হরতাল পালন করে। ২২ দল ১৯৮৩ সালের ১ নভেম্বর ঢাকাসহ সারাদেশে হরতাল পালন করে। ১১ নভেম্বর শেখ হাসিনা প্রকাশ্য রাজনীতি করার ঘোষণা দেন। এরশাদ ১৫ নভেম্বর প্রকাশ্য রাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে। ১৯৮৬ সালের ৭ মে জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় পার্টি ১৫৩টি, আওয়ামী লীগ ৭৬টি আসনে জয়লাভ করে। এরশাদ মিডিয়া কু্যর মাধ্যমে এ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ সংগঠনে নিরন্তত্মর প্রজ্ঞা বিবেচনা ও কর্ম দক্ষতা কাজে লাগিয়ে অগ্রসর হয়েছেন। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারীদের ফাঁসির দন্ড দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে তিনি সর্বদাসচেষ্ট থেকেছেন। ১৯৯০ সালের ৬ নভেম্বর ঢাকার পান্থপথে ৮ দলের সমাবেশ সাংবিধানিক উপায়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের রূপরেখা ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা। তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন প্রথমে উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এরশাদ পদত্যাগ করলে সাহাবুদ্দীন আহমেদ অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা নিয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করেন। ১৯৯৩ সালে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা সম্পর্কে বিরোধী দল বিল পেশ করলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়নি। ১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি আইনি কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত হয়। ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করে। আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সামরিক সরকারের কূটচাল ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করে রাখার যে ষড়যন্ত্র হয়েছিল তা মোকাবিলা করে জননেত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগকে মূলধারার রাজনীতিতে যুক্ত করেছেন। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় শেখ হাসিনার ক্যারিশম্যাটিক গুণাবলির ফসল। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে দিন বদলের প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ যুক্ত হয়েছে এক নজরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় : ১৯৯৬ থেকে ২০০১ মেয়াদে প্রথমবার, ২০০৯ থেকে ২০১৩ মেয়াদে দ্বিতীয়বার, ২০১৪ থেকে ২০১৮ মেয়াদে তৃতীয়বার, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ চতুর্থ বার, ২০২৪ সালে পঞ্চম বার। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৬তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ; শেখ হাসিনাকে অর্থনীতিকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন। সহসাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্র (এমজিডি) ও টেকসই উন্নয়ন এসডিজি অর্জনে তার নেতৃত্বে লক্ষ্য অর্জনে কাজ করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার উন্নয়ন দর্শন রূপকল্প-২০২১, রূপকল্প ২০৪১ শেখ হাসিনা গণতন্ত্র সংহত ও রক্ষায় নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়া কিছু নেই। সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তিনি নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়াই তার স্বপ্ন। তার স্বপ্ন সাধারণ মানুষের মুক্তি। তার স্বপ্ন পূরণ হোক এই-ই প্রত্যাশা। সাইফুজ্জামান : প্রাবন্ধিক ও গবেষক