চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দেশের অর্থনীতি সঠিক পদক্ষেপ নিন
প্রকাশ | ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। অর্থনীতিতে বর্তমানে চার ধরনের চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। এগুলো হলো উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, আমদানি নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থিক খাতের ঝুঁকি। বৈশ্বিক এই প্রতিষ্ঠান সে কারণে পূর্বাভাস দিয়েছে যে চলতি বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে। সংস্থাটির মতে, এ বছর প্রবৃদ্ধি কমে হতে পারে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। বিশ্বব্যাংক বলেছে, সবচেয়ে কম কর-জিডিপি অনুপাত আছে এমন দেশগুলোর একটি হলো বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংকের এই পূর্বাভাস চলতি অর্থবছরের বাজেটে উলেস্নখ করা প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা থেকে বেশ কম। চলতি অর্থবছরে সরকার সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুসারে, এই প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব নয়। দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে রাজস্ব আদায় ব্যবস্থা শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। তবে সরকার চলতি অর্থবছর প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে তা বাস্তবায়ন করা অনেক কঠিন। গত মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে চ্যালেঞ্জ চারটির কথা উলেস্নখ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি অর্থনীতিতে তিনটি ঝুঁকি বিরাজমান বলেও মনে করে সংস্থাটি। প্রথম ঝুঁকি হলো, মুদ্রা বিনিময় হার সংস্কার বিলম্ব হওয়ায় তা বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি এবং আমদানি নিয়ন্ত্রণকে দীর্ঘস্থায়ী করছে। দ্বিতীয়ত, জিনিসপত্রের বাড়তি দামের কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতি দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত থাকা। আর তৃতীয় ঝুঁকি হলো সমন্বিত সংস্কার কর্মসূচি না নেওয়ায় তা আর্থিক খাতের চলমান ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। আর্থিক খাতের ঝুঁকি আর্থিক খাতের ঝুঁকি গভীর হচ্ছে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। চার চ্যালেঞ্জ হলো উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক খাতের ঝুঁকি। দেশে বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি কঠোর করার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নিত্যপণ্যের শুল্ক কমানোর কথা বলেছে সংস্থাটি।
সম্প্রতি দুটি ব্যাংক একীভূত করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা নিয়েও মন্তব্য করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলেছে, ব্যাংক একীভূত করার ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা দরকার।
আমরা মনে করি, বাংলাদেশের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা আছে। এ বিষয়ে বর্তমান অর্থমন্ত্রীও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। আমরাও আশাবাদী, তবে এটা স্বীকার করতেই হবে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। এতে অনেক নিম্ন আয়ের পরিবার চাপের মুখে আছে। এ ছাড়া আর্থিক খাতেও নানা ধরনের ঝুঁকি আছে। কোভিড-১৯ মহামারি থেকে প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশের অর্থনীতির শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছে বলে এর আগে মত দিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা। কিন্তু উচ্চ মূল্যস্ফীতি, লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি, আর্থিক খাতের দুর্বলতার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে মহামারি পরবর্তী পুনরুদ্ধার ব্যাহত হচ্ছে। যেহেতু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দেশের অর্থনীতি, সেহেতু দ্রম্নত সঠিক পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।